“৪০ হাজার দিলেই হাতে ‘আসল’ কার্ড” (৮-৬) সংবাদের পরিপ্রেক্ষিতে এই চিঠি। আমি বৈষ্ণবঘাটা পাটুলি উপনগরীর বাসিন্দা। বর্তমানে আমার বয়স ৯৫ বছর। দীর্ঘ ৩৩ বছর ধরে এই অঞ্চলে বসবাস করছি। স্বাধীনতার পর প্রতিটি নির্বাচনেই আমি আমার ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছি। কিন্তু কোনও অজ্ঞাত কারণবশত ২০১২ সালের পর বৈধ ভোটার কার্ড থাকা সত্ত্বেও আমাদের সমগ্র পরিবারের নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ দিয়ে দেওয়া হয়। আমার ছেলে বহু চেষ্টার পর তার নাম আবার ভোটার তালিকাভুক্ত করতে পারে। কিন্তু বৈধ আধার কার্ড, প্যান কার্ড, পাসপোর্ট থাকা সত্ত্বেও আমি ও আমার পুত্রবধূ এখনও পর্যন্ত নিজেদের নাম ভোটার তালিকাভুক্ত করতে পারিনি।
ইতিমধ্যে আমরা অন্তত চার বার স্থানীয় ক্যাম্পে গিয়ে বহু ফর্ম ফিলআপ করে এসেছি। অনলাইন ফর্মও পাঠিয়েছি। কিন্তু লাভ হয়নি। ব্লক অফিসারদের প্রশ্ন করলে তাঁরা বলেন, আলিপুরের কেন্দ্রীয় অফিসে যোগাযোগ করতে। আমার মতো ৯৫ বছরের বৃদ্ধের পক্ষে এমন দৌড়াদৌড়ি করা অসম্ভব। স্থানীয় আধিকারিকের বক্তব্য, যা পাঠাই, তার অর্ধেক হয়। বাকি অর্ধেক হয় না।
এ দিকে ৪০ হাজার টাকার বিনিময়ে বিদেশি নাগরিকেরা জাল ভোটার কার্ড বানিয়ে ফেলছে। অথচ, ভাগ্যের কী পরিহাস, সমস্ত প্রমাণপত্র থাকা সত্ত্বেও স্বাধীন দেশের স্বাধীন নাগরিক হয়েও নিজের ও পরিবারের নাম ভোটার তালিকাভুক্ত করতে পারছি না। এটাই এখন দেশের ও রাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতি।
কৃষ্ণপ্রসাদ সেনগুপ্ত, কলকাতা-৯৪
যানজট
বেলগাছিয়া মেট্রো স্টেশনের কাছে প্রত্যহ যাত্রী তোলার জন্য বেসরকারি বাসগুলি বহু ক্ষণ অপেক্ষা করে। ফলে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। বাসযাত্রীদের নীরব দর্শক হয়ে বসে থাকতে হয়। সিভিক পুলিশ থাকলেও কোনও চালকই তাঁদের কথায় কর্ণপাত করেন না। কলকাতা ট্র্যাফিক নিয়ন্ত্রণ বিভাগের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
ইন্দ্রনীল ঘোষ, কলকাতা-৩৭
নমুনা সমীক্ষা
সম্পাদকীয় ‘সত্য ও পরিসংখ্যান’ (১৮-৬)-এ কিছু বিভ্রান্তি লক্ষ করা গেল। জাতীয় নমুনা সমীক্ষা ২০২২-২৩’এর হাউসহোল্ড কনজ়াম্পশন এক্সপেন্ডিচার সার্ভে-র নমুনা সংগ্রহ পরিকল্পনা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। যেমন, নমুনা সংগ্রহের জন্য শহরাঞ্চলে মালিকানাভিত্তিক যে স্ট্রেটা বিবেচনা করা হয়েছে, তা কতটা যুক্তিযুক্ত? সার্ভে আলোচ্য পরিবার সমগ্রকে গাড়ির মালিকানা অনুযায়ী এককসমূহের (অর্থাৎ, পরিবারগুলির) যে বিন্যাস করে নমুনা চয়ন করা হয়েছে, তা রাশিবিজ্ঞান অনুযায়ী দোষণীয় তো নয়ই, বরং উপযোগী। অবশ্য, সমগ্রকে এই স্তরবিন্যাস অন্য ভাবেও করা যেতে পারত— যেমন বাড়ির বা ফ্ল্যাটের মালিকানা। যা-ই হোক, রাশিবিজ্ঞান সম্মত নমুনা চয়নের শর্ত হল, প্রত্যেক এককের নমুনায় অন্তর্ভুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা যেন নির্দিষ্ট থাকে, এবং সমগ্রকের অনুমানের বা হিসাবের সময় গৃহীত নমুনাগুলির ওই সম্ভাবনা যথাযোগ্য বিবেচনা পায়। এর অন্যথা আলোচ্য সমীক্ষায় হওয়ার কারণ নেই। ২০১১-১২ সালের সমীক্ষায় যদি নমুনা প্রকল্পে অন্যবিধ স্তরবিন্যাস হয়েও থাকে, তথাপি তাতে দুই সমগ্রকের তুলনায় বাধা নেই।
প্রসঙ্গত, জাতীয় নমুনা সমীক্ষা সংস্থা সত্তর বছরের অধিক কাল ধরে এ কাজ করে আসছে। এর আবির্ভাব অধ্যাপক প্রশান্তচন্দ্র মহলানবিশ স্থাপিত ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিস্টিক্যাল ইনস্টিটিউট-এর হাতে। পদ্ধতি বিষয়ে কোনও সংশয় বা প্রশ্ন থাকলে ওই প্রতিষ্ঠান বা কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ের রাশিবিজ্ঞান বিভাগে নিরসন করা যেতে পারে। তা না করে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে সত্যের কাছাকাছি যাওয়া যেতে পারে না। ভারতের এই জাতীয় নমুনা সমীক্ষা বিশ্বে মান্যতা পায়।
২০১৬-১৭ সালে নোট বাতিল, ২০১৭ সালে জিএসটি প্রবর্তন বা ২০২০-২১ সাল থেকে কয়েক বছর অতিমারিজনিত অর্থব্যবস্থায় মন্দার ফলে সাধারণ জনের ব্যক্তিগত আয়ে কমতি বা আলোচ্য সময়কালে জাতীয় স্তরে আর্থিক বৈষম্য প্রভৃতির উল্লেখ করা হয়েছে নিবন্ধে সঙ্গত ভাবেই। তবে একটি বিষয় উল্লেখ করা হয়নি— পরিবারগুলিকে ক্রমাগত অনুদান, বর্ধিত ভাবে। কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারসমূহের খাদ্য ও কৃষি, বাসস্থান নির্মাণ, কর্মসংস্থান (যথা, ১০০ দিনের কাজ), শিক্ষা, চিকিৎসা প্রভৃতি ক্ষেত্রে ক্রমবর্ধমান অনুদানের ফলে পরিবারগুলির ভোগ্যপণ্য বা পরিষেবার মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে নিশ্চয়ই। কী পরিমাণে, তা নিয়ে তথ্যভিত্তিক আলোচনা বাঞ্ছনীয়।
সর্বশেষে, দারিদ্রের সংজ্ঞার্থ। সরকারও মাঝে মাঝে সংজ্ঞার্থ বদল করে। গত শতকে সত্তরের দশকে ক্যালরিভিত্তিক দারিদ্র বিবেচিত হত। পরে পরিবর্তন হয়। দারিদ্রের সংজ্ঞার্থে পুষ্টি বিবেচিত হলে, দেখা যাবে হয়তো দারিদ্র তেমন দ্রুত কমছে না। পরমায়ু দিয়ে বিচার করলে, দৃশ্যটা হয়তো অন্য রকম বোধ হবে। বা আধুনিক ভোগ্যপণ্যের ব্যবহার, যেমন মোবাইল ফোন বা পরিধেয় নিয়ে বিচার করলে চিত্র আবার অন্য রকম। সকল কিছুই প্রাসঙ্গিক। সেই জন্য দারিদ্রের বহুমাত্রিক বিস্তৃত আলোচনা দরকার।
আনন্দ পাঠক, কলকাতা-৬৫
বেলাগাম খরচ
“বেসরকারি চিকিৎসার খরচ ‘নিয়ন্ত্রণে’ বিল পাশ” (১৮-৬) সংবাদটি পড়ে আশ্বস্ত বোধ করছি। বিলটি সত্যি কার্যকর হলে অনেক রোগী ও তাঁর আত্মীয়স্বজন লাগামহীন খরচের হাত থেকে কিছুটা হলেও মুক্তি পাবেন। বেশ কয়েক বছর আগে আমার মা অসুস্থ হয়ে ভর্তি ছিলেন আনোয়ার শাহ রোডের কাছে একটি নার্সিংহোমে। সকাল বা বিকেল, যে কোনও সময়ে নার্সিংহোমে গেলেই, ওরা খরচের বিল হাতে ধরিয়ে দিত। বিলের বহর দেখে চোখ কপালে উঠত। তার চেয়ে বড় ব্যাপার হল, যে সব ওষুধ ও ইনজেকশন দেওয়ার কথা লেখা থাকত, সেগুলো কোনও মতেই এক জন রোগীর পক্ষে সারা দিনে নেওয়া সম্ভব নয়। আমি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে জানতে চেয়েছিলাম, চিকিৎসক এই সব ওষুধ ব্যবহার করতে বলেছেন কি না। তাঁরা উত্তর দিতে রাজি হননি। আমি তৎক্ষণাৎ আমার ডাক্তারের কাছে গিয়ে অনুসন্ধান করি। তিনি দুঃখের সঙ্গে জানান, লিস্টে যে সব ওষুধের কথা লেখা আছে তার অধিকাংশই তিনি প্রেসক্রাইব করেননি। কিন্তু তিনি নিরুপায়। ওই নার্সিংহোমে চিকিৎসা করাতে গেলে এই সব মেনে নিতে হবে। রোগীর পরিবারকে এই ভাবে হয়রানির মুখে ঠেলে দেওয়ার বিষয়টিতে সরকারি হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।
অরুণ গুপ্ত, কলকাতা-৮৪
নতুন ফর্ম
কিছু দিন আগে জানতে পারি, কলকাতা মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন ষাটোর্ধ্ব প্রবীণ নাগরিকদের বাড়ির বা ফ্ল্যাটের করের উপর ১০ শতাংশ ছাড় দেয়। সেই উপলক্ষে সম্প্রতি গিয়েছিলাম এস এন ব্যানার্জি রোড-স্থিত কলকাতা পুরসভার অফিসে। আমার যাওয়ার দরকার ছিল অ্যাসেসমেন্ট কালেকশন দফতরে। অনেক খোঁজাখুঁজির পরে মেলে দফতরটি। সেখানে কথা বলার পর আমাকে সেল্ফ অ্যাসেসমেন্ট ফর্ম ডাউনলোড করে ভর্তি করে প্যান, আধারের ফোটোকপি-সহ জমা করতে বলা হল। আমার প্রশ্ন, আমি ইতিমধ্যেই কর্পোরেশনের করা অ্যাসেসমেন্ট অনুযায়ী নির্দিষ্ট কর জমা করছি এবং সম্প্রতি ষাটোর্ধ্ব হওয়ার জন্য যে ছাড় দেওয়ার কথা কর্পোরেশনের ওয়েবসাইটে রয়েছে, তার জন্য আবেদন করতে চাইছি। সে ক্ষেত্রে আবার সেল্ফ অ্যাসেসমেন্ট ফর্ম কেন ভর্তি করতে হবে?
তথাগত মুখোপাধ্যায়, কলকাতা-৩০
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)