গত ১১ এপ্রিল আইপিএলে চেন্নাই ও রাজস্থান ম্যাচের শেষ ওভারে আইপিএলের সবচেয়ে ধারাবাহিক ও সফল টিমের অধিনায়ক ধোনি যে ভাবে নো বল বিতর্কে সরাসরি মাঠে প্রবেশ করেন ও আম্পায়ারদের সঙ্গে রীতিমতো তর্ক করেন তা যেমন ক্রিকেট বিশেষজ্ঞদের চমকে দিয়েছে একইসঙ্গে অতি বড় ধোনি ভক্তকেও হতাশ করেছে। নামটা যখন ধোনি তখন তার আরও শান্ত ও স্থিতধী স্বভাব আশা করেছিল ক্রিকেট জগৎ। আর এটা যে ধোনিসুলভ হয়নি তা উপলব্ধি করেই পরের ম্যাচে কলকাতাতে (নাইট রাইডার্সের বিপক্ষে) আউট হওয়ার পর ডাগ আউটে না বসে তাকে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ড্রেসিংরুমে বসে থাকতে দেখা যায়। এ হেন আচরণের শাস্তিস্বরূপ ধোনির ৫০ শতাংশ ম্যাচ ফি কেটে নেওয়া ‘গুরু পাপে লঘু দণ্ড’ কি না এই নিয়ে ক্রিকেট সমালোচকরা যেমন প্রশ্ন তুলেছেন, তেমনই এর পাশাপাশি তাঁরা আর একটি অতি গুরুতর বিষয়কে লঘু করে দেখছেন তা হল— এ বারে আইপিএলে আম্পায়ারিংয়ের মান ও উপযোগী পদ্ধতির সঠিক প্রয়োগ। এর আগেও মুম্বই-ব্যাঙ্গালোর ম্যাচে শেষ বলে মালিঙ্গার নো বল দেওয়া হয়নি বলে বিরাট কোহালিও আম্পায়ারিংয়ের মান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। অথচ কলকাতা-পঞ্জাব ম্যাচে মহম্মদ সামির বলে রাসেল আউট হলেও তাঁর জীবন দান হয়, কারণ তখন সার্কেলের ভিতর মাত্র তিন জন প্লেয়ার ছিলেন। এই সিদ্ধান্ত নিতে অনফিল্ড আম্পায়ার কিন্তু টিভি আম্পায়ারের সাহায্য নেন ও তার পর কী হয়ছিল সবাই জানে, রাসেল ম্যাচের গতিপথ পাল্টে দেয়। তা হলে যে বল ‘নো’ কি না তা নিয়ে দুই অনফিল্ড আম্পায়ার দ্বিধান্বিত; এক জন নো বলের স্পষ্ট সিগন্যাল দেখাচ্ছেন ও অন্য জন তা নাকচ করছেন এবং ব্যাটসম্যানরাও বোঝানোর চেষ্টা করছেন আম্পায়ার নো বল দেখিয়েছেন— এমত অবস্থায় সহজ ও নির্ভরযোগ্য সমাধান ছিল তা টিভি আস্পায়ারের সাহায্য নেওয়া। এটা হলে ধোনিকেও যেমন মাঠে নামতে হত না, তেমনই আম্পায়ারের মান ও দক্ষতাকেও প্রশ্নচিহ্নের মুখে পড়তে হত না।
প্রণয় ঘোষ
কালনা, পূর্ব বর্ধমান
ধর্মত্যাগী
গৌতম ভদ্রের ‘অন্য মেয়ে এই চাপে শেষ হয়ে যেত’ (রবিবাসরীয়, ৭-৪) পড়ে এই চিঠি। একটি আলোকচিত্রে দেখানো হয়েছে মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধী এবং কস্তুরবা গাঁধীর তিন পুত্র রামদাস, মণিলাল এবং হরিলাল। এ প্রসঙ্গে জানাই, এঁরা ছাড়াও এঁদের কনিষ্ঠ পুত্র ছিলেন দেবদাস গাঁধী। লেখক জানিয়েছেন বড় ছেলে হরিলাল অল্প দিনের জন্য ধর্মত্যাগ করেছিলেন। গাঁধীজির জ্যেষ্ঠপুত্র হরিলাল ১৯৩৬ সালে ৪৮ বছর বয়সে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। ওঁর নাম হয় আবদুল্লা গাঁধী। পিতা মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধীর অনেক অনুরোধ সত্ত্বেও তিনি পুনরায় নিজ ধর্মে প্রত্যাবর্তন করতে চাননি। মাতা কস্তুরবা গাঁধীর অনুরোধে কয়েক মাসের মধ্যে আর্য সমাজের দ্বারা দীক্ষিত হয়ে তিনি হিন্দু ধর্মে প্রত্যাবর্তন করেন। নতুন নাম হয় হীরালাল।
শোভনলাল বকসী
কলকাতা-৪৫
মোহিনী
‘মোহিনী চৌধুরী’ (৭-৪) চিঠিতে লেখা হয়েছে, সুরকার শচীনদেব বর্মন, কমল দাশগুপ্ত এবং হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে গীতিকার মোহিনী চৌধুরীর একাধিক উল্লেযোগ্য কাজ রয়েছে। এ ব্যাপারে কিছু সংযোজন। বিশিষ্ট সুরকার শৈলেশ দত্তগুপ্তের সুরে ‘নাইবা হল মিলন মোদের’ (শিল্পী: গৌরীকেদার ভট্টাচার্য), ‘আঁধারে প্রদীপ জ্বেলে’ (শিল্পী: সত্য গোপাল দেব) ইত্যাদি ইত্যাদি। এ ছাড়া চিত্ত রায়ের সুরে মৃণালকান্তি ঘোষের গাওয়া ‘ওরে বেভুল’, গোপেন মল্লিকের সুরে তালাত মামুদ, পরবর্তী কালে মৃণাল চক্রবর্তীর গাওয়া ‘হয়তো সে কথা তোমার স্মরণে নেই’ গানগুলোও কিন্তু স্মৃতি উস্কে দেয়।
হীরালাল শীল
কলকাতা-১২
চার কণ্ঠে
গীতিকার মোহিনী চৌধুরী সম্পর্কে চিঠিটি (৭-৪) পড়ে ‘পৃথিবী আমারে চায়’ গানটির উল্লেখ নিয়ে কিছু সংযোজন করতে চাই। উক্ত গানটি কমল দাশগুপ্তের সুরে সত্য চৌধুরী, তরুণ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অনুপ ঘোষাল ছাড়াও, গানটি ফিরোজা বেগমের কণ্ঠেও ১৯৮৩ সালে এইচ এম ভি থেকে ‘সুর মাধুরীর অরূপ পরশ’ শীর্ষক নামে প্রকাশিত দীর্ঘবাদন রেকর্ডে সংযোজিত হয়। একই গান চার জন প্রতিষ্ঠিত শিল্পীর কণ্ঠে গীত হওয়ার উদাহরণ বাংলা গানের ইতিহাসে খুব বেশি নেই বলেই মনে হয়।
মানস কুমার সেনগুপ্ত
কলকাতা-৭৪
উৎপাত
‘জরিমানা হোক’ (৮-৪) শীর্ষক চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে বলছি, শুধুমাত্র নামেরি নয়, অসম ও মেঘালয়ের প্রায় সর্বত্র (বিশেষত শীতকাল ও ছুটির মরসুম) যে কোনও টুরিস্ট স্পটে বনভোজনকারীদের উদ্দামতা দেখা যায়। প্রায় সবটাই মাতালদের উৎপাত বলা চলে। বিভিন্ন স্থানে দেখেছি প্রকাশ্যে মদ্যপান ও হুল্লোড়টা রীতির মধ্যে পড়ে। লোকাল বাস, টেম্পো ভাড়া করে ডিজে বা বক্স বাজিয়ে সারা দিন এ ধরনের উল্লাস চলে। সাধারণ টুরিস্ট ও ভিন রাজ্য থেকে কাজে যাওয়া মানুষদের পক্ষে বেশ অস্বস্তিদায়ক ও সময়বিশেষে আতঙ্কজনক। আইনি নিষেধাজ্ঞা বলতে কিছুই নেই, মরসুমে এগুলো পুরোটাই ছাড়। এমন অজুহাতও আছে যে কলকাতা বা বড় শহরের মতো নানা ধরনের বিনোদনের সুযোগের অভাব থাকায় এ ভাবেই এরা আনন্দ নেয়! মানস অভয়ারণ্যের গায়েই প্রকৃতিকে ধ্বংস করে বেকি নদীর ধারে এই পিকনিক পর্যটন প্রত্যেক বছর হয়। সংরক্ষিত অভয়ারণ্যের গায়ে বছরের পর বছর ধরে কী করে এগুলো অনুমোদন পায় জানা নেই।
অরিত্র মুখোপাধ্যায়
শ্রীরামপুর, হুগলি
রামেন্দ্রসুন্দর
‘প্রতিবাদে তিনি ছিলেন নিঃসঙ্গ’ (কলকাতার কড়চা, ৮-৪)প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে এই পত্র।
১৯১৯-এর ৩ জুন কলকাতার ‘স্টেটসম্যান’-এ প্রকাশিত হল জালিয়ানওয়ালা বাগ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে রবীন্দ্রনাথের চেমসফোর্ডকে লেখা নাইটহুড প্রত্যর্পণের চিঠি। দেশময় এই চিঠি নিয়ে উত্তেজনা। বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ রামেন্দ্রসুন্দর ত্রিবেদী তখন শেষ শয্যায়। কবির চিঠিখানা কাগজ থেকে পড়ে শোনানো হল তাঁকে। উত্তেজনায় উঠে তিনি বললেন এক্ষুনি তাঁর পদধূলি নিতে হবে। তাঁর সঙ্গীরা তাঁকে অসুস্থতার জন্য নিরস্ত করলেন। তাঁরা বললেন কবিকে রামেন্দ্রসুন্দরের বাড়িতে নিয়ে আসার চেষ্টা করবেন। কবিকে অনুরোধ করামাত্র তিনি রাজি। ১৯ জ্যৈষ্ঠ কবি এলেন রামেন্দ্রসুন্দরের বাড়িতে। পরনে শ্বেতশুভ্র বেশ। রামেন্দ্রসুন্দর কাগজে ছাপা চিঠিটি দেখিয়ে বললেন অন্যায়ের এত বড় প্রতিবাদ আর কেউ কখনও করেছেন বলে তিনি জানেন না। সেই এক জনের পায়ের ধুলো আমার মাথায় পড়ুক এই আকাঙ্ক্ষা নিয়েই আপনাকে এনেছি। সমবয়সি বন্ধুর এই অনুরোধ রক্ষা করতে কবি প্রথমে অস্বীকার করলেন। তার পর বললেন, এই না পাওয়ার দুঃখ ওঁকে দেওয়া আমার পক্ষে বন্ধুকৃত্য হবে না। একটি উঁচু টুল রাখা হল বিছানার পাশে। কবি তাতে উঠলেন। রামেন্দ্রসুন্দর হাত দু’খানি বাড়িয়ে দিলেন কবির পায়ের উপর, তার পর অনেক ক্ষণ পায়ে হাত বুলিয়ে ধূলিশূন্য করযুগল নিজের মাথায় বুকে সর্বাঙ্গে বোলাতে লাগলেন। মুখে চোখে অপূর্ব প্রসন্নতা ফুটে উঠল। বললেন এই পরম মুহূর্তের পর মৃত্যুই আমার একমাত্র কাম্য। এর পর ২৯ জ্যৈষ্ঠ তিনি প্রয়াত হন।
সমর কর
ইমেল মারফত
চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা
সম্পাদক সমীপেষু,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট,
কলকাতা-৭০০০০১।
ইমেল: letters@abp.in
যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়। চিঠির শেষে পুরো ডাক-ঠিকানা উল্লেখ করুন, ইমেল-এ পাঠানো হলেও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy