Advertisement
E-Paper

সম্পাদক সমীপেষু: ভোট মহোৎসব?

ভারতীয় নির্বাচন কমিশন, বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম, সোশ্যাল মিডিয়া, লোকসভা ভোটকে ‘দেশকা মহা তেওহার’ বা ‘দেশের মহা উৎসব’ হিসাবে আখ্যায়িত করে চলেছে।

শেষ আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০১৯ ০০:১৬

ভারতীয় নির্বাচন কমিশন, বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম, সোশ্যাল মিডিয়া, লোকসভা ভোটকে ‘দেশকা মহা তেওহার’ বা ‘দেশের মহা উৎসব’ হিসাবে আখ্যায়িত করে চলেছে। এ কি সত্যিই মহা উৎসব? বাস্তব কি তাই বলে? উৎসব তা-ই, যেখানে মানুষ স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে, চাপমুক্ত মনে, মিলেমিশে মজা-আনন্দে মেতে ওঠেন। ভোটে কি এ সব হয়? সব ভোটার কি প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ ভাবে দলীয় চাপ, ভয়, লোভ, শাসানি থেকে মুক্ত হয়ে মহা আনন্দে ভোট দিতে পারেন? সত্যিই যদি তা-ই হয়, তা হলে বুথ দখল, ছাপ্পাভোট, রিগিং, রিপোল প্রভৃতি কথাগুলো ওঠে কেন? কেনই বা দেশের নানা জায়গায় ভোটের প্রতি মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস ফেরাতে, মনে ভয় কমাতে কেন্দ্রীয় বাহিনী নামাতে হয়? ভোট-বিমুখদের জন্য কেন নির্বাচন কমিশনকে চালাতে হয় বিশেষ প্রচার? ভোট যদি মহা আনন্দের উৎসব হত, তা হলে এ সব কিছুই করতে হত না। অন্য দিকে, ভোট করানোর কাজে জড়িত প্রশাসনের কর্মী-আধিকারিকদের ভোট উৎসবের কথা বলুন। তাঁরা বলবেন, উৎসব না ছাই। দু’তিন মাস নাওয়া-খাওয়া-ঘুম-পরিবার ভুলে চাপে চিঁড়ে-চ্যাপ্টা হওয়ার জোগাড়। নদী-পাহাড়-মরু-জঙ্গল পেরিয়ে ভীষণ কষ্ট করে বুথে বুথে ভোট নিতে যাওয়া ভোটকর্মীদের জিজ্ঞেস করুন। তাঁরা বলবেন, শাসানি, হুমকি, স্নায়বিক চাপ, ভোট হিংসা পেরিয়ে পিতৃমাতৃদত্ত প্রাণটা নিয়ে ভালয় ভালয় বেঁচে ফিরলে হয়!

আবার ভোট যদি প্রকৃত উৎসবই হত, তা হলে মানুষে মানুষে মেলবন্ধন ঘটাত। উল্টে, ভোট এলেই এক ধাক্কায় বেড়ে যায় মানুষে মানুষে, ধর্মে ধর্মে, ভাইয়ে ভাইয়ে বিভাজন। শুরু হয় মারামারি, হিংসা, রক্তপাত, প্রাণহানি। এ কোন ‘মহা উৎসব?’ নেতানেত্রীদের ঝুড়ি ঝুড়ি মিথ্যার প্রতিশ্রুতি শুনতে শুনতে নিজেদের নির্বোধ মনে হয়। অনেকের কাছে রাতারাতি জার্সি বদলে ক্ষমতা দখলই হয়ে ওঠে মুখ্য। দলগুলির পারস্পরিক কাদা ছোড়াছুড়ি, গরমা-গরম ভাষণ ও হুঙ্কার দেশের মধ্যে উত্তেজনার পারদ চড়িয়ে মানুষে মানুষে যুদ্ধ যুদ্ধ আবহ তৈরি করে। মেনে নিতে কোনও অসুবিধা নেই যে, ভোট আমাদের দেশের এক গুরুত্বপূর্ণ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া এবং ভোটদান প্রত্যেক নাগরিকের শক্তিশালী অধিকার ও দায়িত্বভার। কিন্তু দুঃখিত, এই ভোট যুদ্ধকে আর যা-ই হোক ‘দেশের মহা উৎসব’ বলতে পারছি না।

প্রণব কুমার মাটিয়া

পাথরপ্রতিমা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা

মৈত্রেয়ীদি

‘মৈত্রেয়ীদি’ (কলকাতার কড়চা, ২৫-২) শীর্ষক প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে কিছু কথা জানাতে চাই। মৈত্রেয়ীদির দিদি গায়ত্রী বন্দ্যোপাধ্যায় আমার মায়ের বিদ্যালয় সহকর্মী ছিলেন। ওঁর ছোট বোন অদিতি আমার সহপাঠী ও বন্ধু ছিল। ওঁরা আমাদের প্রতিবেশী হওয়ার সুবাদে দুই পরিবারের মধ্যে যথেষ্ট যাওয়া-আসা ছিল। ওঁরা সকলেই ওঁদের মাকে ঠাকুরমার দেখাদেখি ‘বৌমা’ বলে ডাকতেন। ছোটবেলায় এই ব্যাপারে আমার বেশ কৌতূহল ছিল ও সেই সঙ্গে অবাক লাগত।

এর পর দীর্ঘদিন কেটে গিয়েছে। আমি কৃষ্ণনগর গভঃ স্কুলে ভর্তি হয়েছি। যত দূর মনে পড়ে নবম শ্রেণিতে পড়ার সময় মৈত্রেয়ীদি আমাদের স্কুলে শিক্ষিকা হয়ে এসেছিলেন। আমার তো আগে থেকেই পরিচয় ছিল তাঁর সঙ্গে, তাই কিশোরীসুলভ উচ্ছলতায় নিজে থেকেই গিয়ে পরিচয় দিলাম।

সুন্দর-সুঠাম দোহারা চেহারায়, মায়াময় চোখের চাহনিতে, চুলের লম্বা বিনুনিতে, গলার আন্তরিক মিষ্টি স্বরে আমরা আবিষ্ট ও মুগ্ধ হয়েছিলাম। উনি আমাদের ইংরেজি ক্লাস নিতে শুরু করলেন। আমরা ওঁকে পেয়ে ভীষণ খুশি হয়েছিলাম। তিনি এতটাই ছাত্রীদরদি ছিলেন যে ক্লাসের বাইরে নানা বিষয়ে লিখতে দিয়ে সেগুলি সংশোধন করে দিতেন। আমরা এতে যথেষ্ট উপকৃত হয়েছিলাম, কিন্তু এতে ওঁর কোনও ক্লান্তিবোধ দেখিনি।

মালবিকা সেনগুপ্ত রায়

কলকাতা-৭৪

অটিস্টিক

‘স্কুলে এখনও ব্রাত্য অটিস্টিক শিশুরা’ (৩-৪) শীর্ষক সংবাদটি পড়লাম। সরকারের শিক্ষা সেল যদি তাদের আইন যথার্থ ভাবে প্রয়োগ হচ্ছে কি না নজরদারি করে, তা হলে স্কুল কর্তৃপক্ষ মানতে বাধ্য। সরকারি তরফ থেকে গাফিলতি থাকে বলেই অটিস্টিক শিক্ষার্থীরা তাদের শিক্ষার অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়।

রীতা পাল

কলকাতা-২৪

ভোটরঙ্গ

প্রাক-নির্বাচনী আবহে নেতানেত্রীদের উত্তপ্ত বাদানুবাদ, পারস্পরিক উত্তেজক শব্দগোলা বর্ষণ, গালিগালাজ, বডি ল্যাঙ্গোয়েজ, হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়া, সপার্ষদ বাইক-বাহিনীর দাপট— সব মিলিয়ে মিশিয়ে মনে হওয়া স্বাভাবিক শব্দের কী মহিমা! ভোরের কাগজ এখন আর কোনও সুবার্তাবহনকারী নয়। ধেয়ে আসা কালবৈশাখীর ঝোড়ো বাতাস যে শীতলতার আস্তরণ বিছিয়ে দেয়, ভোটের দামামা, ভোটপ্রার্থীকে হত্যার খবর, আচমকা ধূলি-ঝড়ে সব উৎপাটিত করে তখন। যে দলই হোক, কোনও মতে কি সমর্থনযোগ্য এই ভোটযুদ্ধের আগ্নেয়গিরির মতো লাভা উদ্‌গিরণ? কেনই বা এত অসংযত হবে ভোট প্রার্থীদের ভাষা প্রয়োগ, আচার-আচরণ?

আচ্ছা, যে কোনও নির্বাচনী সভায় যখন ভোটপ্রার্থীদের সমর্থনে হেভিওয়েট নেতানেত্রীরা বক্তৃতা করেন, তখন বিগত বছরগুলোর কাজের ফিরিস্তি দিতে গিয়ে বা ইস্তাহারে প্রতিশ্রুতির বন্যা বইয়ে দিয়ে তাঁরা কি প্রমাণ করতে চান সামনে বসে থাকা, চৈত্রের ঝাঁ ঝাঁ দুপুরে অপেক্ষমাণ জনগণ সব বোকা? ও দিকে কে চৌকিদার আর কে লুটেরা— তার হিসেব দিতে নেতানেত্রীদের মুখ নিঃসৃত অপভাষা শুনে থ হয়ে যান আমজনতা। গদিতে বসার লোভে কী সব কাণ্ড কারখানা। এঁদেরই ভোটে জিতিয়ে আনার জন্য আইটি সেক্টরের তরুণ তুর্কিদেরও কাজে লাগাচ্ছে কোনও কোনও দল। চলছে রমরমিয়ে বিজ্ঞাপনী প্রচার। উড়ছে কোটি কোটি টাকা।

এক নেতা যদি এ প্রান্তে বুকনি ঝাড়েন, তখনই সময়ের একটু এ দিক-ও দিকের হেরফেরে অন্য পক্ষ বকছেন অন্য প্রান্তে। জনগণেশকে বোকা বানাচ্ছেন অবিরাম। কাউকে একটাও ভোট দেবেন না। সব ভোট যেন তাদের চিহ্নে পড়ে। তার পর দেখে নেবেন, উন্নয়ন কাকে বলে।

নেতানেত্রীরা ভোটের প্রচারে এসে, রোদে পুড়ে দৈবাৎ ঢুকে পড়ছেন গাঁয়ের কোনও এক চুনোপুঁটি নেতার বাড়ি। তার জন্য দুপুরের খাবারের আয়োজন হয় চটজলদি। মাটিতে, আসনে বসে দিব্যি চেটেপুটে ভোজন সারেন তিনি। সে ছবি ভাইরাল হয়ে যায় চটজলদি। দিনের আলোর মতো সব পরিষ্কার এখন ভোটারদের কাছ। ভোটের নামে, মোচ্ছবে তাঁরা তাই উৎসাহ হারাচ্ছেন ক্রমে। আর দিকে দিকে প্রতিবাদ বাড়ছে ভোটকর্মীদের মধ্যে। যথেষ্ট নিরাপত্তার অভাবে ঘর, সংসার ফেলে তাঁরা ভোটের কাজে যেতে অনাগ্রহী হচ্ছেন। তাঁদের নিরাপত্তাহীনতার দায় কাদের? প্রতিবাদের এ হেন ভাষা এত দিন অপরিচিত ছিল নির্বাচন কমিশন বা প্রশাসনের কাছে। সুতরাং, সময় আগুয়ান, যখন নির্বাচন বয়কটের ডাক দেবেন বৃহত্তর জনগণ। ধীরে ধীরে বাড়ছে ‘নোটা’র প্রতি দুর্মর আকর্ষণ। কোটি কোটি টাকার বহ্ন্যুৎসব এবং তার আয়োজনে বাড়বাড়ন্ত শালীনতাহীন শব্দের ব্যবহার শিক্ষিত শহুরে মানুষের তাই না-পসন্দ। ভোটাধিকার, গণতান্ত্রিক মৌলিক মতদানের অধিকার— এ সব কেতাবি ভাষণে জনগণ খুব একটা আকৃষ্ট নন এখন।

ধ্রুবজ্যোতি বাগচী

কলকাতা-১২৫

শিল্পীর নাম

‘প্রাঞ্জল সঙ্গীতসন্ধ্যা’ (পত্রিকা, ২৩-৩) রিভিউ পড়ে খুব ভাল লাগল। একটি ভুল সংশোধনের জন্য এ চিঠি। শিল্পীর নাম সঞ্চারী সিংহ রায়ের জায়গায় সহচরী সিংহ রায় হবে।

সুনীপা সিংহ রায়

কলকাতা-৬০

Lok Sabha Election 2019 Mega Festival Violence
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy