E-Paper

সম্পাদক সমীপেষু: ডাকঘরে কারচুপি

অত্যধিক গরমে আমি কোনও রকমে রসিদগুলি পকেটে পুরে বাস ধরে বাড়ি ফিরি। ঘরে ফিরে রসিদগুলি পুনরায় দেখতে গিয়ে দেখি, সেগুলির প্রত্যেকটিই ৫২ টাকার রসিদ। জিএসটি-র কোনও উল্লেখই রসিদে নেই।

শেষ আপডেট: ০৩ অক্টোবর ২০২৫ ০৫:৪৯

আমি এক জন প্রবীণ নাগরিক। আন্দামানের একটি বাংলা সাহিত্য পত্রিকার সম্পাদক। কিছু দিন আগে বেলঘরিয়া মুখ্য ডাকঘরে আমার পত্রিকার সাতটি কপি রেজিস্ট্রি পার্সেল প্যাকিং করে নিয়ে যাই। প্রত্যেকটি কপির ওজন ছিল ৫৫০ গ্রাম। হিসেবমতো প্রত্যেকটি পার্সেলের মোট মাসুল হওয়ার কথা ৫২ টাকা। সেই সঙ্গে ১৮ শতাংশ জিএসটি চার্জ (মানে ৯ টাকা ৩৬ পয়সা) নিয়ে মোট অঙ্ক ৬১ টাকা ৩৬ পয়সা হওয়ার কথা।

সে দিন ডাকঘরে লিঙ্ক না থাকায় কোনও কাজ হয়নি। পরের দিন গিয়ে দেখি প্রচণ্ড ভিড়। প্রায় দু’-ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে যখন আমার পালা এল, তখন বলা হল, পাঁচটির বেশি পার্সেল এক সঙ্গে নেওয়া হবে না। আমি পাঁচটিই দিলাম। পাঁচটি পার্সেলের ওজন একই থাকা সত্ত্বেও কাউন্টারে বসা কর্মী প্রত্যেকটি প্যাকেটের ভর এবং আয়তন আলাদা আলাদা করে মাপলেন। কেন, সেটা বুঝলাম না। তার পর পাঁচটি পার্সেলের জন্য আমার কাছ থেকে ডাককর্মী নিলেন মোট ৩০৬ টাকা।

অত্যধিক গরমে আমি কোনও রকমে রসিদগুলি পকেটে পুরে বাস ধরে বাড়ি ফিরি। ঘরে ফিরে রসিদগুলি পুনরায় দেখতে গিয়ে দেখি, সেগুলির প্রত্যেকটিই ৫২ টাকার রসিদ। জিএসটি-র কোনও উল্লেখই রসিদে নেই। ডাকবিভাগ কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে। কিন্তু এ রাজ্যের স্থানমাহাত্ম্য গুণে বোধ হয় কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মীদেরও দুর্নীতির ছোঁয়া লেগে গিয়েছে।

অনাদিরঞ্জন বিশ্বাস, শ্রীবিজয়পুরম, দক্ষিণ আন্দামান

পুজো স্পেশাল

এখন পুজো আসে, কিন্তু পুজো-কেন্দ্রিক গান-সাহিত্যের উন্মাদনা সে ভাবে আর চোখে পড়ে না। মনে পড়ে ছেলেবেলার দিনগুলোর কথা। আগে ছিল গ্ৰামোফোন রেকর্ড। তার পর এল ক্যাসেট, টেপ রেকর্ডারের যুগ। পুজোর সময় ক্যাসেটের দোকানে বাজত পুজোর গান। তার অনুভূতিই ছিল অন্য রকম। একটা গভীর আগ্ৰহ থাকত, কোন শিল্পীর কোন গান বেরোল সে বার। প্রিয় শিল্পীর পুজোর গান সংগ্ৰহে রাখার পাশাপাশি সেই নতুন গান আগেভাগে শোনার আগ্রহও ছিল অন্য রকম। ওই গান শুনে তা নিজের গলায় গাওয়ার ইচ্ছেও হত ভীষণ। অনেক সময় ভাল লাগা গান বার বার শুনে গলায় তুলে খালি গলায় সেই গান গাওয়ার মধ্যে দিয়েই মিলত বাহবা। সেই সব দিন আজ ফিকে। বর্তমানে পুজোয় নতুন গান তৈরি হলেও হারিয়ে গেছে সব বয়সের সেই আকর্ষণ।

শুধু কি গান? পুজো-কেন্দ্রিক সাহিত্যের উন্মাদনাই বা কোথায়? নামকরা শারদীয় পত্রিকার পাশাপাশি অন্য মাত্রা যোগ করত লিটল ম্যাগাজ়িনের সাহিত্যও। পুজোর সাহিত্য মানেই তো ছোটগল্প, উপন্যাস, ছড়া, কবিতা ইত্যাদি সাহিত্যের নানা ধারা। প্রিয় লেখক ছাড়াও নবীন কোনও লেখকের কী লেখা প্রকাশ পেল, তার খোঁজখবর রাখার পাশাপাশি, গল্পগুলো গোগ্ৰাসে পড়ে ফেলার ইচ্ছে তাড়া করে বেড়াত। পুজো মানেই ছুটি। একটা অবসর। আর সেই অবসর কাটাতে পুজোর সাহিত্য একটা বড় ভূমিকা পালন করত। এমনকি বেড়াতে যাওয়া, ট্রেনে বাসে গন্তব্যে পৌঁছনোর সময়েও খোলা থাকত সেই সমস্ত পত্রিকার পাতা। পড়া হয়ে যেত আস্ত উপন্যাস-সহ বহু গল্প। বন্ধু-বান্ধব, দাদা-দিদিদের সঙ্গে আলোচনা চলত সেই সব লেখা নিয়ে— কোন গল্প উপন্যাস পড়া হয়ে গেছে আর কোনটা বাকি। কার কোনটা ভাল লেগেছে বা ভাবিয়েছে, তা নিয়ে পাঠকরা নিজেদের মধ্যে যেমন চর্চা চালাতেন, তেমনই উৎসাহ দিতেন অমুক পত্রিকায় অমুক লেখকের লেখা পড়তে। এ সব আলোচনার মধ্যে দিয়ে লেখক-পাঠকের মধ্যে তৈরি হত এক অদ্ভুত মেলবন্ধন। আজ সেই উন্মাদনা কই? সাহিত্য পাঠে কি কোথাও এখন ঘাটতি তৈরি হয়েছে?

এখন পুজোর মরসুমে চলে নানা বিজ্ঞাপনী প্রচার— নিত্যনতুন ফ্যাশনের পোশাক, গয়না, বৈদ্যুতিন সরঞ্জাম-সহ গাড়ি থেকে বিলাসবহুল দ্রব্যের। কিন্তু কোথাও কি এখনও সে ভাবে খোঁজ পড়ে বাণিজ্যিক পত্রিকা-সহ লিটল ম্যাগাজ়িনের? তাতে পাঠকের সাড়া কেমন, কেউ কি জানতে আগ্রহী? নতুন পাঠককুল তৈরি হচ্ছে কি না, খোঁজ পড়ে? যদি সাহিত্য পাঠের প্রয়োজনীয়তা তেমন করে অনুভব করা যেত, তা হলে প্রবীণ লেখকদের পাশাপাশি নবীনরাও উৎসাহ পেতেন। সাহিত্য ভান্ডার আরও নতুন নতুন সৃষ্টিতে সমৃদ্ধ হতে পারত।

সনৎ ঘোষ, খালোড়, বাগনান

তালিকায় নাম

আমার বয়স পঁয়ষট্টি। তেত্রিশ বছর সরকারি চাকরি করেছি। প্রতি বার ভোটও দিয়েছি। গত লোকসভা নির্বাচনের সময় আমি জানতে পারি, ভোটার তালিকা থেকে কোনও ভাবে আমার নামটি বাদ গিয়েছে। এর পর কাছাকাছি সব বুথে গিয়েছিলাম। তালিকায় আমার নাম পাইনি। অথচ, পাড়ার মৃত ব্যক্তিদের সবার নাম তালিকায় ছিল। ভোট পর্ব মেটার কিছু দিন পর, বাদ পড়ার কারণ উদ্ধারের চেষ্টা করেছিলাম। নির্বাচন কমিশনের অফিস থেকে জানানো হয়, অফলাইনে হবে না। অনলাইনে আবেদন করতে হবে।

কিন্তু নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে অভিযোগ জানানোর কোনও সুযোগ পাওয়া যায়নি। ফলে, আবার নির্বাচন কমিশনের অফিসে যেতে হয়। এ বার জানানো হয়, ‘ফর্ম ৬’ অনলাইনে ভর্তি করতে হবে। অর্থাৎ, নতুন ভোটার কার্ডের জন্য আবেদন করতে হবে আমাকে। এ দিকে আমার ফোন নম্বর আমার অচল ভোটার কার্ডের সঙ্গে যুক্ত থাকায়, ফর্ম ৬ ভর্তি করতে পারছিলাম না। এর বেশ কিছু দিন পর সাইবার কাফের সহায়তায় এই প্রবীণ বয়সে নতুন ভোটার কার্ডের জন্য আবেদন করলাম। হিয়ারিং আসে জুনের প্রায় মাঝামাঝি। অত্যন্ত সজ্জন এক ব্যক্তির কাছে আমার হিয়ারিং হয়েছিল। আমি পাশ করেছিলাম।

কিছু দিন আগে ডাউনলোড করলাম আমার নতুন ভোটার কার্ড। কার্ডের নীচের অংশে লেখা ছিল— ভোটার কার্ড জন্ম তারিখের গ্যারান্টি নয়। এবং আধার বা প্যান কার্ড তৈরির জন্যও উপযুক্ত নথি নয়। সম্প্রতি বিভিন্ন সংবাদে প্রকাশ পাচ্ছে যে, ভোটার কার্ড, আধার কার্ড থাকা সত্ত্বেও অনুপ্রবেশকারী সন্দেহে নাগরিকদের অকারণ হেনস্থার খবর। বিভিন্ন কার্ড বিভিন্ন কাজের জন্য ব্যবহার না করে প্রত্যেক নাগরিকের হাতে একটি বৈধ কার্ডের ব্যবস্থা কেন করা হচ্ছে না? তাতে অকারণ হেনস্থার শিকার হতে হবে না।

শুভ্রা চট্টোপাধ্যায়, কলকাতা-৩৯

ঘাটে নোংরা

পারিবারিক প্রয়োজনে আমি মাঝেমধ্যেই কলকাতার বিভিন্ন গঙ্গার ঘাটে যাই। প্রভাতে গঙ্গার শীতল বাতাস আর পবিত্র প্রবাহধারা মন আর হৃদয়কে স্নিগ্ধ করে। গঙ্গার দূর-শোভা চোখ মেলে দেখলে তা মনকে পরিপূর্ণ করে। কিন্তু যেখানে দাঁড়িয়ে এই শোডা উপভোগ করব, সেই ঘাটগুলোর প্রায় সব ক’টিই আবর্জনায় পরিপূর্ণ। বাবুঘাট, বাগবাজার, শোভাবাজার ইত্যাদি ঘাট ভাটার সময় এত দূষিত থাকে যে, মানসিক শুদ্ধতায় চরম আঘাত করে। কলকাতা পুরসভা প্রতি দিন নাগরিকদের সুবিধার্থে বহু কাজ করে। তার সঙ্গে এই গঙ্গার ঘাটগুলোর প্রতি নিয়মিত নজর দিলে সেগুলির পরিচ্ছন্নতা বজায় থাকে। তাতে গঙ্গার দূষণ যেমন নিয়ন্ত্রিত হবে, তেমনই ঘাটগুলিও হয়ে উঠবে দৃষ্টিনন্দন।

তপন কুমার ভট্টাচার্য, কলকাতা-৭৮

সুফল

মোবাইলের অনেক কুফল আছে ঠিকই, কিন্তু এই জমানায় একটা জিনিস আর একদম দেখা যায় না। সেটা হল ট্রেনের শৌচাগারের দেওয়ালগুলোতে কলম-পেনসিল দিয়ে মোবাইল নম্বর লেখা, ছড়া তৈরি বা নানা ধরনের উদ্ভট ছবি আঁকা। এটি মোবাইলের অন্যতম সুফল।

প্রবীর মৈত্র, কলকাতা-২

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Postal Department GST

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy