Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

সম্পাদক সমীপেষু: গুরুত্ব বুঝতে হবে

প্রথম পাতার ধারণাটাকেই বদলে দিয়ে বিশাল বিশাল বিজ্ঞাপন-সহ প্রথম কভার, দ্বিতীয় কভার ছাপার কথা তো তুললামই না। 

শেষ আপডেট: ০৪ ডিসেম্বর ২০১৮ ০০:০০
Share: Save:

আনন্দবাজারের মতো একটি ঐতিহ্যমণ্ডিত সংবাদপত্রের প্রথম পৃষ্ঠার প্রধান ছবিটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ১৯-১১ তারিখে প্রথম পাতার প্রধান ছবিটি দীপিকা-রণবীরের। সেলেব্রিটিদের ছবি (এবং তাঁদের জীবনের খবর) অবশ্যই ছাপা হবে, কিন্তু তা বলে একেবারে প্রথম পাতায়! অথচ এই দিনই এই কাগজেই প্রকাশিত গুরু নানকের জন্মদিন উপলক্ষে শোভাযাত্রার শিশুটির ছবি (পৃ ৫), আগুনের বিরুদ্ধে দমকল কর্মীদের লড়াই (পৃ ১২), বন্যপ্রাণ বাঁচাতে স্কুলপড়ুয়াদের মুখোশ-মিছিল (পৃ ১৩)— এ রকম অনেক ছবি ছিল। আর প্রথম পাতার ধারণাটাকেই বদলে দিয়ে বিশাল বিশাল বিজ্ঞাপন-সহ প্রথম কভার, দ্বিতীয় কভার ছাপার কথা তো তুললামই না।

তপন কুমার মৌলিক

কলকাতা-১৩৬

ভুল নেই

‘পুর রক্ত পরীক্ষার রিপোর্টে ডাক্তারের সই চেয়ে নির্দেশিকা’ (১৯-১১) শীর্ষক প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে এই চিঠি। প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে, অনেক ক্ষেত্রে ল্যাবরেটরির রিপোর্টে মেডিক্যাল টেকনোলজিস্টের সইও থাকে না। সংবাদে প্রকাশিত ল্যাবরেটরির রিপোর্টে আমাদের ল্যাবরেটরি টেকনিশিয়ান অরুণাভ রায়ের স্বাক্ষর পরিষ্কার দেওয়া আছে। সুতরাং পরিবেশিত সংবাদটি ঠিক নয়।

পুরসভার সমস্ত স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসক থাকেন এবং তাঁর নির্দেশেই সংশ্লিষ্ট টেকনিশিয়ান রোগীদের রক্ত পরীক্ষা করেন এবং চিকিৎসককে স্বাক্ষর-সহ রিপোর্ট দেন। সমগ্র চিকিৎসা ও পরিষেবা আমাদের চিকিৎসক দেন। ওষুধের নির্দেশিকাতেই (প্রেসক্রিপশন) ডাক্তারের সই থাকে। কোনও ভুল বোঝাবুঝির অবকাশ নেই।

মুখ্য পৌর স্বাস্থ্য আধিকারিক

কলকাতা মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন

প্রতিবেদকের উত্তর: আনন্দবাজারে প্রতিবেদনের সঙ্গে প্রকাশিত ছবির নীচে স্পষ্ট লেখা রয়েছে, রক্তের রিপোর্টে সইটি কার তা বোঝা যাচ্ছে না। এবং সত্যি তা বোঝার উপায় নেই। কারণ, পুরসভার ওই রিপোর্টে শুধু ইংরেজিতে ‘সিগনেচার’ শব্দটি লেখা রয়েছে। সেটি কোনও চিকিৎসকের, নাকি টেকনোলজিস্টের, না কি অধস্তন কোনও কর্মীর, তা কারও পক্ষে এবং রোগীদের পক্ষে বোঝা সম্ভব নয়। মাননীয় মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক দাবি করছেন যে, ওটি মেডিক্যাল টেকনোলজিস্টের সই। সবিনয়ে জানতে চাইব, সইটি যে কোনও মেডিক্যাল টেকনোলজিস্টের, সেটি পুরসভার ওই রিপোর্টে কেন জানানো নেই? রোগীর কি সেটা জানার অধিকার নেই?

আরও একটি জরুরি বিষয় হল, ভারতে ল্যাবরেটরি রিপোর্টের স্বীকৃত নিয়মই হল, তাতে ন্যূনতম এমবিবিএস পাশ চিকিৎসকের সই থাকতেই হবে। এই নিয়ম কলকাতা পুরসভা মানছে না। তাদের রিপোর্টে শুধু মেডিক্যাল টেকনোলজিস্টের সই থাকছে এবং অনেক ক্ষেত্রে সেটাও থাকছে না। রিপোর্টে শুধু ‘সিগনেচার’ বলে লেখা থাকছে। সেটা কার সই বলা থাকছে না। এই রকম একাধিক রিপোর্ট আনন্দবাজারের হাতে রয়েছে। এই ত্রুটি রয়েছে বলেই তো স্বাস্থ্য দফতরকে নির্দেশ জারি করতে হয়েছে পুরসভার উদ্দেশে।

আগুন লাগেনি

‘এসি থেকে আগুন ট্রপিকালের সিসিইউ-এ’ শীর্ষক প্রতিবেদনে (১৩-১১) কিছু তথ্যগত ভুলের দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। সংবাদে প্রকাশিত হয়েছে, ওই দিন সিসিইউ-এর পিছনের এসি কন্ট্রোল রুমের যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে সিসিইউ-এ আগুন লাগে। দমকল দফতরের রিপোর্ট অনুযায়ী, ওই দিন এসি কন্ট্রোল রুমের ফ্যান বেল্টের ঘর্ষণের ফলে ধোঁয়া তৈরি হয়েছিল, যা এসি ডাক্টের মধ্যে দিয়ে সিসিইউ-এ ঢুকে এসেছিল। কোনও রকম আগুন লাগেনি। এসি কন্ট্রোল রুমের যান্ত্রিক ত্রুটি অল্প সময়ের মধ্যে সারিয়ে ফেলা হয়। সিসিইউ-এর সব রোগীকে অন্যত্র দ্রুত সরিয়ে উপযুক্ত চিকিৎসা শুরু করা হয়। দমকলের ইঞ্জিন এসেছিল, তবে তাদের ব্যবস্থাপনা ব্যবহার করার দরকার হয়নি। দমকল আধিকারিকরা সমস্ত ঘটনাটি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় কিছু নির্দেশ দেন মাত্র। ওই দিন আনন্দবাজার পত্রিকার কোনও প্রতিবেদক স্কুল অব ট্রপিকাল মেডিসিনের প্রশাসকদের সঙ্গে দেখা না করে এই ভুল তথ্য পরিবেশন করেছেন, যা অনভিপ্রেত।

ভারপ্রাপ্ত সচিব,

স্কুল অব ট্রপিকাল মেডিসিন

প্রতিবেদকের উত্তর: ওই দিনের ঘটনায় সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের ট্রপিকালের আইসিইউ-এর ভেতরে ঢোকার অনুমতি দেওয়া হয়নি। তবে আমি ঘটনাস্থলে এক সিইএসসি-র আধিকারিকের সঙ্গে ভেতরে ঢুকি। ওই সিইএসসি আধিকারিক আইসিইউ-এর পিছনে এসি কন্ট্রোল রুমে গিয়ে দমকলকর্মীদের সঙ্গে কথা বলছিলেন। সেই সময় ওই এসি কন্ট্রোল রুমে দাঁড়িয়ে দমকলকর্মীরা আমাকে আগুন লাগার কারণ যা বলেন, সেই কথাটাই প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছে। আইসিইউ-এর ভেতরে সেই সময় ট্রপিকালের কয়েক জন আধিকারিকও ছিলেন। ওঁরা ওই ফাঁকা আইসিইউ তত্ত্বাবধান করছিলেন এবং ওই ঘরের কর্মীদের নানা রকম নির্দেশ দিচ্ছিলেন। আমি তাঁদের আগুন লাগার কারণ কী জিজ্ঞাসা করলে, তাঁরা আমার পরিচয় জানতে চান। আমি পরিচয় দেওয়ায় তাঁরা জানান, এই ব্যাপারে কিছু বলা যাবে না। ওখান থেকে বেরিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন। আমি বেরিয়ে আসি। ওই আধিকারিক কিছু না বলায় ট্রপিকালের বক্তব্য প্রতিবেদনে লেখা হয়নি।

পেটি কেস

‘হেনস্থায় বাধা কেন, হুমকি পুলিশকর্মীকে’ (২৫-১১) প্রতিবেদনে, রেলিঙে দুই যুবকের মূত্রত্যাগ, তরুণ দম্পতির প্রতিবাদ, হেনস্থা, শাসানি, হোমগার্ডের সাহসিকতার কথা পড়ে দুঃখ পেয়েছি, সুখও পেয়েছি। দুঃখ, যৌবনের অবক্ষয় ও অন্যায় আস্ফালন দেখে। সুখ, এখনও কিছু প্রতিবাদী কণ্ঠের উপস্থিতি দেখে। এক জন সামান্য বেতনভুক হোমগার্ড যে সাহসিকতা দেখালেন, তাবড় নিরাপত্তারক্ষী পারেন না। যত্রতত্র থুতু, জঞ্জাল ফেলা থেকে অভব্য মানুষকে বিরত রাখতে আমাদের সরকার ‘ক্যালকাটা মিউনিসিপ্যালিটি অ্যাক্ট’-এর সংশোধনী এনেছেন। জরিমানার অঙ্ক বেড়েছে। নিঃসন্দেহে সাধু উদ্যোগ। এই সংশোধনীতে প্রকাশ্যে প্রস্রাব, বা রাস্তায় পোষা কুকুরকে মলত্যাগ করানো, এইগুলি বন্ধ করার কোনও প্রস্তাব নেই, থাকলে ভাল হত।

আমি চাকরি করতাম কলকাতা পুলিশে। গত শতাব্দীর সত্তরের দশকের মাঝামাঝি সময়ে আমার পোস্টিং ছিল শহরের পূর্ব প্রান্তে বেলেঘাটা থানায়। কমিশনার অব পুলিশ ছিলেন প্রয়াত সুনীল চৌধুরী। তাঁর কঠোর নির্দেশ ছিল, শক্ত হাতে আইনশৃঙ্খলা যেমন রক্ষা করতে হবে, তেমনই শহরকে পরিষ্কার রাখার জন্য সর্বশক্তি নিয়োগ করতে হবে। ‘ডিজ়অর্ডারলি কনডাক্ট’— যার মধ্যে প্রকাশ্যে প্রস্রাব করা, মেয়েদের প্রতি টিটকিরি বর্ষণ ইত্যাদি পড়ে, তা রোখার জন্য সারা দিন সাদা পোশাকের পুলিশ এলাকায় টহল দিতেন। স্পেশাল কনস্টেবল নামে এঁরা ছিলেন প্রসিদ্ধ। মর্নিং রিপোর্টে ‘পেটি কেস’ যথেষ্ট সংখ্যায় না দেখলে, সংশ্লিষ্ট ডিসি বা ওসিদের কপালে জুটত সিপি’র ভর্ৎসনা । সিনিয়র অফিসাররা পেটি কেসের হিসেব নিতেন প্রতি রাতে, অন্যান্য বড় মাপের অপরাধের মতোই সমান গুরুত্ব দিয়ে।

পেটি কেসের অপরাধীদের শাস্তি ছিল জামিনযোগ্য। ফাইন একশো টাকা মতো। শাস্তির বিধান নিহিত ছিল ক্যালকাটা পুলিশ অ্যাক্ট ও সাবার্বান পুলিশ অ্যাক্ট–এর যথাক্রমে ৬৮ ও ৪১ ধারার মধ্যে। হাতের মুঠোয় এখনও আইন দু’টি আছে। হচ্ছে না তার সক্রিয় ও যথোপযুক্ত প্রয়োগ।

ব্রজেশ্বর ভট্টাচার্য

প্রাক্তন সহকারী পুলিশ কমিশনার, কলকাতা

চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা

সম্পাদক সমীপেষু,

৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা-৭০০০০১।

ইমেল: letters@abp.in

যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়। চিঠির শেষে পুরো ডাক-ঠিকানা উল্লেখ করুন, ইমেল-এ পাঠানো হলেও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Cover Picture News Paper First Page
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE