Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Letters to Editor

সম্পাদক সমীপেষু: পরিবেশ-বান্ধব

পশ্চিমবঙ্গে প্রায় ৪ লক্ষ হেক্টরের বেশি জমিতে পাট চাষ হয়। পাট চাষের সঙ্গে ৪০ লক্ষ পাটচাষি প্রত্যক্ষ ভাবে যুক্ত।

শেষ আপডেট: ১৪ ডিসেম্বর ২০২০ ০০:৩৮
Share: Save:

পরিবেশ-বান্ধব পাট যদি এক হেক্টর জমিতে চাষ করা হয়, তা হলে পরিসংখ্যান অনুযায়ী প্রায় ১১ টন অক্সিজেন বায়ুমণ্ডলে ফিরে আসে এবং পাটগাছ ১২০ দিনের মধ্যে বায়ুমণ্ডল থেকে প্রায় ১৫ টন কার্বন ডাই-অক্সাইড শোষণ করে। এ ছাড়া পাটের শুকনো পাতা জমিতে নাইট্রোজেন, ফসফরাস এবং পটাশিয়ামের পরিমাণ বাড়ায়। পরিবেশ বিজ্ঞানীদের মতে, বায়ু থেকে কার্বন ডাই-অক্সাইড শোষণের ক্ষমতাও পাটগাছের বেশি। বর্জ্য হিসেবে এক টন পাটের তৈরি ব্যাগ পোড়ালে ২ গিগা জুল তাপ এবং ১৫০ কেজি কার্বন ডাই-অক্সাইড বায়ুতে মেশে; অন্য দিকে চটের পরিবর্তে ব্যবহৃত প্লাস্টিক এক টন পোড়ালে ৬৩ গিগা জুল তাপ এবং ১৩৪০ টন কার্বন ডাই-অক্সাইড বায়ুতে মেশে। সুতরাং, এক কথায় পাট হল অন্যতম পরিবেশ-বান্ধব কৃষিজ ফসল।

পশ্চিমবঙ্গে প্রায় ৪ লক্ষ হেক্টরের বেশি জমিতে পাট চাষ হয়। পাট চাষের সঙ্গে ৪০ লক্ষ পাটচাষি প্রত্যক্ষ ভাবে যুক্ত। এ ছাড়া পাট চাষে যুক্ত শ্রমিকের সংখ্যা প্রায় ২.৫০ লক্ষ। পরোক্ষ ভাবে বহু শ্রমজীবী এবং স্বনির্ভর হস্তশিল্পীও পাট চাষের উপর নির্ভরশীল। উন্নত বীজের জন্য হেক্টর পিছু উৎপাদন বেড়েছে। এর পরেও ‘বস্তা নিয়ে চিন্তায় রাজ্যগুলি, রবির জোগানেও সংশয়’ (১১-১২) শীর্ষক সংবাদটি পড়ে অবাক হলাম। গত কয়েক দশক ধরে শুনে আসছি পাট শিল্প ও শ্রমিকদের সমস্যার প্রসঙ্গ। সরকারের পর সরকার বদল হয়, কিন্তু পাট শিল্পের সমস্যা তিমিরেই রয়ে যায়।

সারা বিশ্বে যেখানে পাটের তন্তু দিয়ে তৈরি ব্যাগ, প্যাকেটের পরিবর্তে বহুল ব্যবহৃত প্লাস্টিক পরিবেশের ভয়াবহ সঙ্কট ডেকে আনছে, সেখানে পরিবেশ-বান্ধব পাটের উৎপাদন ও তার ব্যবহার বাড়ানোর ক্ষেত্রে সমস্যা ও তার সমাধানের জন্য কেন আমাদের দেশ উদ্যোগী নয়? (তথ্যসূত্র: প্রতীতী পাট সংখ্যা,
অগস্ট ২০২০)

নন্দগোপাল পাত্র, সাটিলাপুর, পূর্ব মেদিনীপুর

হ্রদকে ঘিরে

পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার শিয়ালদহ-বনগাঁ লাইনের গোবরডাঙা স্টেশন থেকে মাত্র ১১ কিমি দূরে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী সবুজে-ঘেরা সুন্দর একটি গ্রাম হল গাইঘাটা ব্লকের বেড়ি পাঁচপোতা। এর চার দিকে শুধু গাছ আর গাছ। আম, জাম, কাঁঠাল, শিশু, বট ইত্যাদি গাছে ঘেরা ছোট্ট গ্রামটি বুঝি কোনও শিল্পীর ক্যানভাসে আঁকা ছবি! সবুজের যে কত রকম শেড হতে পারে, তা এই গ্রামটিতে না এলে বোঝা যায় না! গ্রামটির বুকের উপর দিয়ে তিরতির করে বয়ে চলেছে ছোট্ট একটি অশ্বখুরাকৃতি হ্রদ, স্থানীয় ভাষায় যাকে বাওর বলা হয়। অনেক দিন আগে এটি ইছামতী নদীর অংশ ছিল। তার পর ইছামতী নদী আস্তে আস্তে দিক পরিবর্তন করে দূরে চলে যাওয়ায় এটি মূল নদী থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে অশ্বখুরাকৃতি হ্রদে পরিণত হয়েছে। বেড়ি পাঁচপোতার কাছাকাছি আরও অনেকগুলি হ্রদ (শশাডাঙা বাওর, ডুমোর বাওর, বলদে ঘাটার বাওর প্রভৃতি) আছে, যাদের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আমাদের রাজ্যে তো বটেই, সারা দেশেও বিরল।

স্থানীয় বাসিন্দাদের দীর্ঘ দিনের দাবি, বেড়ি-পাঁচপোতার এই হ্রদকে কেন্দ্র করে বিদেশের মতো সুটিয়া, রামনগর, সগুনা, ঝাউডাঙা এবং ডুমা— এই পাঁচটি পঞ্চায়েত নিয়ে একত্রে গড়ে উঠুক ‘ইকোভিলেজ’। এই ধরনের ইকো টুরিজ়মের ক্ষেত্রে পাঁচটি পঞ্চায়েতের প্রতিটি পরিবারই প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে উপকৃত হবে। বিস্তীর্ণ এলাকা নিয়ে এই ধরনের (ইকোভিলেজ) পর্যটন এখনও পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গে সে রকম ভাবে গড়ে ওঠেনি। স্থানীয় বাসিন্দারা চাইছেন, পশ্চিমবঙ্গ সরকার ‘বেড়ি-পাঁচপোতা ইকো টুরিজ়ম’ কেন্দ্র গড়ে তোলার পাশাপাশি কেন্দ্রটিকে মডেল হিসেবে ঘোষণা করুক। এটি গড়ে উঠলে বেড়ি পাঁচপোতা সংলগ্ন পাঁচটি পঞ্চায়েতের অন্তত দশ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হওয়ার পাশাপাশি পাল্টে যাবে এলাকার আর্থসামাজিক পরিস্থিতি।

জ্যোতিপ্রকাশ ঘোষ, বেড়ি পাঁচপোতা, উত্তর ২৪ পরগনা

হারিয়ে যাচ্ছে

‘শাড়ি পরে নদীপাড়েই ব্যাকফ্লিপ জাতীয় চ্যাম্পিয়নের’ খবরটি (৭-১২) পড়ে মনে হল, এ রাজ্যে প্রতিভা কোথা থেকে যে টুপটাপ খসে পড়ে, তা আমরা রাজ্যবাসীরা যেমন জানতে পারি না, তেমনই রাজ্য ক্রীড়া দফতর বা জেলা যুব দফতরও খোঁজ রাখে না এঁদের। যে কোনও খেলায় প্রতিভা গ্রামগঞ্জের আনাচকানাচে বাড়ছে, চর্চাও হয়তো চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা তাঁদের মতো করে। কারও যে নজরে পড়েনি, এমনটিও নয়। অথচ, কেউ খোঁজ পাননি মিলি সরকারের, কোনও খবর রাখেননি রায়গঞ্জ আব্দুলঘাটার এই কলেজ ছাত্রীটির বিষয়ে। এক দিনের অনুশীলনে হঠাৎ কিছু করে দেখালেন মিলি, এমনও নয়।

রায়গঞ্জ সুরেন্দ্রনাথ মহাবিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের ছাত্রী মিলি পেশায় গাড়িচালক অভাবী বাবাকে নিজের শখ-আহ্লাদ জানাননি। একটু সাহায্য যে কোনও স্তর থেকে পেলে তিনি নৃত্য বা যোগাসনে প্রশিক্ষণ নিয়ে নিজেকে প্রমাণ করতে পারতেন। মিলি যোগাসনে ২০১৮ সালে জাতীয় চ্যাম্পিয়ন হয়ে ফেরেন মহারাষ্ট্র থেকে। তার পরও কেউ খোঁজ রাখেননি তাঁর। যে মেয়ে যোগাসন, জিমন্যাস্টিক বা নাচে পারদর্শী, কুলিক নদীর পাড়ে যিনি শারীরিক কসরত দেখাতে পারেন অবলীলায়, তাঁর যে একটু আধুনিক প্রশিক্ষণ দরকার, এটা কি স্থানীয় ভাবে কেউ বুঝতে পারেননি?

ক্রীড়া ও যুব কল্যাণ দফতরের সরকারি অনুদান ক্লাবে ক্লাবে পৌঁছে যাচ্ছে নিয়ম করে, আর এই সব সম্ভাবনাময় অ্যাথলিট সকলের অগোচরে হারিয়ে যাচ্ছেন! রাজ্য ক্রীড়া ও যুব কল্যাণ দফতর, ব্লক, মহকুমা বা জেলা স্কুলক্রীড়া দফতর— সবাই কি সমন্বয়ের অভাবে ভুগছে? এ ভাবে এগোলে যে কোনও খেলায় দেশবাসীর অলিম্পিক পদক জয়ের স্বপ্ন হারিয়ে যেতে বাধ্য।

সৌম্যেন্দ্র নাথ জানা , কলকাতা-১৫৪

দূরের ঠিকানা

আমরা সোনারপুর রাজপুর মিউনিসিপ্যালিটির ১৪-১৫ নং ওয়ার্ডের সংযোগস্থলে ১৫ নং ওয়ার্ডের হতভাগ্য ঠিকানাহীন বাসিন্দা। আমরা সোনারপুরের কাছে থাকলেও, রাজপুর পোস্ট অফিসের অধীনে। তাই যে কোনও রকম প্রয়োজনীয় চিঠিপত্র রাজপুর পোস্ট অফিসের মাধ্যমে আসা উচিত। কিন্তু পোস্ট অফিসের পিয়ন সাহেবের কাছে আমাদের ঠিকানা অত্যন্ত দূরের, তাই সরবরাহ করেন না। আবার তা দূরে হওয়ার জন্য আমাদের পক্ষেও সর্বদা রাজপুর পোস্ট অফিসের সঙ্গে যোগাযোগ কষ্টকর হয়ে পড়ে। যদি আমাদের ঠিকানা সোনারপুর পোস্ট অফিসের অধীনে করা হয়, সমস্যার সুরাহা হবে বলে মনে করি। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

অতনু ধাড়া, দক্ষিণ ২৪ পরগনা

২০০০ টাকা!

গত সপ্তাহে আমার মোবাইল ফোনে ইউবিআই থেকে মেসেজ আসে যে, আমার অ্যাকাউন্ট থেকে ১৭৭ টাকা কেটে নেওয়া হয়েছে জুলাই-সেপ্টেম্বরে মিনিমাম ব্যালান্স না থাকায়। যদিও আমি সব সময় ন্যূনতম জমা রাখার চেষ্টা করি। ব্যাঙ্কে খোঁজ নিয়ে জানা গেল, ইউবিআই পিএনবি-র সঙ্গে যুক্ত হয়েছে এবং নিয়মকানুন পিএনবি-র মতো চলবে। যদিও এর জন্য কী কী পরিবর্তন হয়েছে, তা গ্রাহকদের তারা বিজ্ঞাপিত করেনি। তাই, ১০০০ টাকার ন্যূনতম জমা কখন ২০০০ টাকা হয়েছে, তা কেউ জানে না।

ইউবিআই ব্যাঙ্কে সরকারি খাতে বিভিন্ন পেনশন ও ভাতা দেওয়া হয়, যার পরিমাণ ৭০০ থেকে ১০০০ টাকা, বা তারও কম। এই গ্রাহকদের যদি ফাইন বাবদ টাকা কাটা হয়, বা ২০০০ টাকা ন্যূনতম জমা রাখতে বলা হয়, তা অমানবিক।

রঞ্জিত কুমার চট্টোপাধ্যায়, কলকাতা- ৬৩

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Letters to Editor Environment Friendly
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE