Advertisement
E-Paper

সম্পাদক সমীপেষু: জাতীয় উৎসব

এই সময়টুকু প্রকৃতির প্রতি অভিযোগ করার সুযোগ থাকে না। আর রাজনৈতিক ব্যক্তিরা, শুধুমাত্র এই সময়টায়, নিজেদেরকে অন্যদের তুলনায়, জনগণের প্রতি সর্বনিম্ন ক্ষতিকারক প্রমাণ করার জন্য সবিশেষ মরিয়া হয়ে ওঠেন।

শেষ আপডেট: ০৭ এপ্রিল ২০১৯ ০০:৪১

একটা বিষয় লক্ষণীয়। আমাদের ভারতীয়দের প্রাকৃতিক ও রাজনৈতিক বসন্তের মেয়াদের হার ৮.৩৩% বা বারো ভাগের এক ভাগ। সারা বছরে মেরে-কেটে এক মাস (৮.৩৩%)। আর পাঁচ বছর মেয়াদি (৫ X ১২= ৬০ মাস) শাসনকালে ভোটের আগের পাঁচ মাস (৮.৩৩%)।

এই সময়টুকু প্রকৃতির প্রতি অভিযোগ করার সুযোগ থাকে না। আর রাজনৈতিক ব্যক্তিরা, শুধুমাত্র এই সময়টায়, নিজেদেরকে অন্যদের তুলনায়, জনগণের প্রতি সর্বনিম্ন ক্ষতিকারক প্রমাণ করার জন্য সবিশেষ মরিয়া হয়ে ওঠেন।

বাকি সময়টা ঝড়-ঝঞ্ঝা, কষ্ট-সমস্যা তো এ দেশে লেগেই আছে। তাই ‘নির্বাচন’ বা ‘ভোট’ হল আমাদের দেশের ধর্ম-বর্ণ-জাতি নিরপেক্ষ জাতীয় উৎসব। সংবিধানে এ বিষয়টি যোগ করলে কেমন হয়?

সন্তু ঘোষ

ইমেল মারফত

পলাশ

আপামর বাঙালি হঠাৎ করেই শিমুল এবং পলাশফুলের মাহাত্ম্য আবিষ্কার করেছে এবং তা চাক্ষুষ করতে ছুটে যাচ্ছে বীরভূম-বাঁকুড়া-পুরুলিয়ার বিভিন্ন প্রান্তে। প্রকৃতিকে আরও এক বার নতুন করে উপলব্ধি তো সাধুবাদেরই যোগ্য! কিন্তু তাতে বাদ সাধে বাস্তব অভিজ্ঞতা। সম্প্রতি পুরুলিয়া ঘুরতে গিয়ে দেখলাম, পলাশফুলের মালা দিয়ে এক দম্পতির মালা বদল হচ্ছে, সৌজন্যে তাদের বন্ধুরা। আরও অনেকের গলায় পলাশের মালা, হাতে পলাশের ব্রেসলেট, মাথার ব্যান্ড হিসাবেও আছে পলাশ। অর্থাৎ যে রূপ প্রত্যক্ষ করতে শয়ে শয়ে মানুষ ছুটে যাচ্ছে, সেই রূপকেই গাছ থেকে পেড়ে খানিক গায়ে মেখে নিলাম— ভাবখানা এ রকম। এই বছর বসন্ত উৎসবের প্রাক্কালে বিশ্বভারতী প্রাঙ্গণেও পলাশের অকারণ ধ্বংস বন্ধ করতে কর্তৃপক্ষ সচেষ্ট হয়েছিলেন, যদিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবি দেখে মনে হল না, বিশেষ ফলপ্রসূ হয়েছে সে উদ্যোগ। বলাই বাহুল্য বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে লাল পলাশ ফুটে আছে— এই অপরূপ সৌন্দর্যের দিন প্রায় শেষ হয়ে আসছে। অর্বাচীন বাঙালি কালিদাসরাই সে ব্যবস্থা করবে, যদি না সরকার শীঘ্রই কড়া ব্যবস্থা নেয় নির্বিচারে পলাশ ধ্বংসের বিরুদ্ধে।

কমলিকা চক্রবর্তী

কলকাতা-৭৫

আরও সংলাপ

‘উদয়ের পথে’ (৩১-৩) শীর্ষক চিঠিটি পড়ে, ওই অসামান্য ছবির আরও কিছু সংলাপের কথা জানাই।

নায়ক অনুপের ছেঁড়া পাঞ্জাবি দেখে বোন সুমিতা বলে ওঠে, ‘‘দাদা তোমার পাঞ্জাবিটা অনেকটা ছিঁড়ে গিয়েছে। খুলে দাও, সেলাই করে দিই।’’ তখন দাদা বলেন, ‘‘ছুঁচের মতো একটা সামান্য যন্ত্র দিয়ে কি দারিদ্রের মতো দৈত্যের সঙ্গে লড়াই করা চলে?’’ আর এক জায়গায় চাকরির দরখাস্তে নায়ক তাঁর নাম লিখেছিলেন শ্রী অনুপ লেখক। মালিক বললেন, ‘লেখক’ বলে তো কোনও পদবি শুনিনি। উত্তরে নায়ক বললেন, ‘‘ঘটক হতে পারে, পাঠক হতে পারে, লেখক হতে দোষ কী! গুপ্ত, বোস বা ব্যানার্জি বললে তো বোঝা যাবে না আমি বুদ্ধিজীবী।’’ মালিক বললেন, ‘‘তা নামের আগে অত বড় একটা শ্রী জুড়েছেন কেন? তারও কোনও তাৎপর্য আছে না কি?’’ উত্তরে নায়ক বললেন, ‘‘আছে বইকি! জীবনের আর কোথাও তো শ্রী নেই। শ্রীটুকু টিকে আছে শুধু নামের আগে। তাই ওটা বড় করে লিখি আর জোরে জোরে উচ্চারণ করি।’’

আমাদের বাড়িতে ‘উদয়ের পথে’ ছবির রেকর্ডটা ছিল। সেটা প্রায় রোজই বাজানো হত। আমার তখন পাঁচ-ছ’বছর বয়স হবে, হাঁ করে শুনতাম। শুনে শুনে মুখস্থ হয়ে গিয়েছিল। এখন আমার বয়স ৭৮। কিছু কিছু সংলাপ এখনও মনে আছে। তার থেকে কয়েকটা জানালাম।

দেবীভূষণ ভট্টাচার্য

হাওড়া

মর্মঘাতী

‘৫ মাসে পাঁচ বার ঘেরাও যাদবপুরে’ (২০-৩) শীর্ষক খবরের প্রেক্ষিতে নিজের এক মর্মঘাতী অভিজ্ঞতার কথা জানাই। সত্তর দশকের শেষে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ‘নন-ল্যাব’ বিষয়ে স্নাতকোত্তর পরীক্ষায় সর্বোচ্চ নম্বর পেয়ে সে বছরেই গবেষণার জন্য সচেষ্ট হই। নিজের খরচায় এ কাজ সামলানো যাবে না বলে, আর্থিক অনুদানের ওপরই সে দিন আমাকে নির্ভর করতে হয়। তখন গবেষণার জন্য সরকারি ভাবে মূলত দু’রকম আর্থিক সাহায্য পাওয়া যেত— এক, ইউজিসি অনুমোদিত প্রকল্পভিত্তিক অনুদান; অন্যটি বিভাগীয়। দ্বিতীয়টিই ছিল আমার পক্ষে মানানসই। নিয়ম মেনে অনুদানের জন্য আবেদন করেছিলাম। বিভাগীয় প্রধানের ‘মধুক্ষরা’ কথায় বার বার আশ্বস্ত হয়েছিলাম। এমনকি তাঁর পরামর্শে গবেষণার জন্য মানসিক প্রস্তুতি নিয়ে ‘গাইড’ও ঠিক করে ফেলি। প্রায় দু’মাস কেটে যায়। ‘ইন্টারভিউ’-এর জন্য কোনও চিঠি না পাওয়ায় সন্দেহ জাগে। সটান চলে যাই ‘অরবিন্দ ভবন’-এর স্টাইফেন-স্কলারশিপ বিভাগে। জানতে পারি, আমার প্রাপ্য অনুদানটি ‘পোস্ট ডক্টরাল’ গবেষণার জন্য রূপান্তরিত (কনভার্ট) করে এক ছাত্রীকে পাইয়ে দেওয়া হয়েছে, যিনি আবার সেই বিভাগীয় প্রধানের কাছে কাজ করে আগেই ‘ডক্টর’ হয়েছেন।

অল্প বয়সে তখন নিয়মনীতির মারপ্যাঁচ বুঝতাম না। শুধু এটুকু বুঝেছিলাম, হাত ঘুরিয়ে আমার মুখের গ্রাস কেড়ে নেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে অবাকও হয়েছিলাম এই ভেবে, নিখাদ পাণ্ডিত্যের আড়ালেও বাসা বাঁধতে পারে কত নির্মম মিথ্যাচারিতা!

পরে এই ‘স্বনামধন্য অধ্যাপক’কে নানা মঠ-মিশনে জ্ঞানগর্ভ ভাষণ দিতে দেখেছি। শাস্ত্রের কথা টেনে এনে নীতি-নৈতিকতার ফোয়ারাও ছোটাতে দেখেছি। এ সব অনেক পুরনো কথা। আমিও এখন এক অবসরপ্রাপ্ত কলেজ অধ্যাপক। তবু সে দিনের এক ‘শ্রদ্ধেয় স্যর’-এর কপট আচরণের সঙ্গে মিশে থাকা হীন চাতুর্যের কথা মনে পড়ে গেলে খুবই খারাপ লাগে।

তাই, বিভিন্ন বিভাগে থেকে যাওয়া বা নতুন করে গড়ে তোলা ‘ঘুঘুর বাসা’ যে কোনও মূল্যে অচিরেই ভেঙে ফেলা উচিত। আর এ জন্য ছাত্র আন্দোলন সব সময়ই অভিনন্দনযোগ্য। তবে সেটি গণতান্ত্রিক হওয়া বাঞ্ছনীয়।

বাণীবরণ সেনগুপ্ত

শ্যামনগর, উত্তর ২৪ পরগনা

মোহিনী চৌধুরী

মোহিনী চৌধুরী সম্পর্কে প্রকাশিত কড়চা (‘কবি-গীতিকার’, ১১-৩) পড়ে, কিছু সংযোজন করতে চাই।

সুরকার শচীনদেব বর্মন, কমল দাশগুপ্ত এবং হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর একাধিক উল্লেখযোগ্য কাজ রয়েছে।

মোহিনী চৌধুরীর কথা এবং কমল দাশগুপ্তের সুরে বেশ কিছু স্মরণীয় গান তৈরি হয়েছে, যার মধ্যে বিশেষ উল্লেখযোগ্য ‘পৃথিবী আমারে চায়’ (১৯৪৫)। সত্য চৌধুরীর কণ্ঠে এই গানটির প্রথম রেকর্ড প্রকাশিত হয়। পরে তরুণ বন্দ্যোপাধ্যায় ও তারও পরে অনুপ ঘোষাল গানটি রেকর্ড করেন। এ ছাড়া কমলবাবুর সুরে ‘আমি দুরন্ত বৈশাখী ঝড়’ এবং ‘ভালবাসা মোরে ভিখারি করেছে’ (জগন্ময় মিত্র), ‘শতেক বরষ পরে’ (ফিরোজা বেগম), এবং দুর্গা সেনের সুরে ‘ফুলের মতো দিনগুলি যায় ঝরে’ (তরুণ বন্দ্যোপাধ্যায়) মোহিনী চৌধুরীর লেখা।

হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের সুরে ‘শুকসারী’ এবং ‘নায়িকা সংবাদ’ ছবিতে মোহিনী চৌধুরী গান লিখেছেন। শেষোক্ত ছবিতে সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের গাওয়া দু’টি গান— ‘কী মিষ্টি দেখো মিষ্টি কী মিষ্টি এ সকাল’ এবং ‘কেন এ হৃদয় চঞ্চল হল’ বাংলা গানের জগতে স্থায়ী আসন করে নিয়েছে।

মোহিনীবাবুর অমর সৃষ্টি ‘মুক্তির মন্দির সোপান তলে’ বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পঞ্চম শ্রেণির বাংলা পাঠ্যপুস্তক ‘পাতাবাহার’-এর অন্তর্ভুক্ত।

নির্মাল্য বর্মণ

সিউড়ি, বীরভূম

চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা
সম্পাদক সমীপেষু,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা-৭০০০০১।
ইমেল: letters@abp.in
যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়। চিঠির শেষে পুরো ডাক-ঠিকানা উল্লেখ করুন, ইমেল-এ পাঠানো হলেও।

Lok Sabha Election 2019 National Festival
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy