‘কলেজের ক্লাসঘর ফাঁকা’ (৩০-৭) শীর্ষক প্রবন্ধে মধুমিতা দত্ত রাজ্যের উচ্চশিক্ষার ভয়াবহ ও বাস্তব চিত্রটি তুলে ধরেছেন। গত কয়েক বছর ধরেই রাজ্যের কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক স্তরে ছাত্রছাত্রীদের ভর্তির সংখ্যা ভীষণ ভাবে হ্রাস পাচ্ছে। এই বছর ওবিসি সংক্রান্ত জটিলতার কারণে ভর্তি প্রক্রিয়া বিলম্বিত হওয়ার জন্য সমস্যা আরও তীব্র হয়েছে। বহু ছাত্রছাত্রী বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে বাধ্য হয়েছে। তথাপি বলা যায় স্নাতক ও স্নাতকোত্তর স্তরে পড়াশোনার প্রবণতা হ্রাস পাওয়ার প্রধান কারণ রাজ্যে শিক্ষা ও চাকরির হতাশাজনক পরিস্থিতি। দুই দশক আগেও স্কুল সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে প্রতি বছর কয়েক হাজার শিক্ষক-শিক্ষিকা নিয়োগ করা হত। এর ফলে শিক্ষকতার আশা নিয়ে সাধারণ ভাবে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর এবং শিক্ষক প্রশিক্ষণের কোর্সগুলিতে ভর্তির প্রচণ্ড চাপ থাকত। গত কয়েক বছরে রাজ্যে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়াটি সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছে। এর ফলে ইতিমধ্যেই কয়েক লক্ষ উচ্চশিক্ষিত ও প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ছাত্রছাত্রী সম্পূর্ণ ভাবে কর্মহীন হয়ে হতাশায় নিমজ্জিত। বাংলা, সংস্কৃত, দর্শন, এমনকি রসায়ন, অর্থনীতি প্রভৃতি বিষয়ে বহু কলেজে ছাত্র-ভর্তির প্রবণতা অনেক কমেছে। কয়েক বছর আগেও শিক্ষক প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানগুলি প্রচুর টাকার বিনিময়ে ছাত্রছাত্রী ভর্তি করতে পারত। বর্তমানে সেগুলিতেও ছাত্রছাত্রীর অভাব প্রকট।
বিদ্যালয় স্তরেও, বিশেষত একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণিতে ছাত্র-ভর্তির প্রবণতা ভীষণ ভাবে হ্রাস পেয়েছে। কন্যাশ্রী বা তরুণের স্বপ্ন ইত্যাদি প্রকল্পের জন্য একাদশ শ্রেণিতে অনেকেই ভর্তি হচ্ছে ঠিকই, কিন্তু এই সব প্রকল্পের টাকা হাতে পাওয়া হয়ে গেলেই বেশ কিছু ছাত্রছাত্রী বিদ্যালয়ছুট হয়ে যাচ্ছে। এদের আবার অনেকে হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়ছে যখন দেখছে তারই দাদা বা দিদি উচ্চশিক্ষিত হয়েও একটা চাকরি জোটাতে পারছে না। এ ভাবে চললে রাজ্যের শিক্ষার পরিকাঠামোটি যে সম্পূর্ণ ভাবে ভেঙে পড়বে, তা কি সরকার বুঝছে না, না কি বুঝতে চাইছে না?
সন্দীপ সিংহ, হরিপাল, হুগলি
টিকিটের দাম
অগণিত মানুষ প্রতি দিন সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার সুবিধা নেন। দেখে অবাক লাগে, এই দুর্মূল্যের বাজারে এখানে এখনও টিকিটের দাম মাত্র ২ টাকা, তা-ও আবার বিনামূল্যে রিনিউ করা হয়। এতটা উদারতা না দেখিয়ে, টিকিটের মূল্য কম করে ৫-১০ টাকা করা হোক এবং এ বাবদ অতিরিক্ত অর্থ হাসপাতালের সাফাই এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ কাজে ব্যবহার করা হোক। বিশেষত, এখানকার শৌচাগারগুলি একেবারেই পরিচ্ছন্ন থাকে না। অন্য দিকে, সাম্প্রতিক কালে এক জন নিম্নবিত্ত মানুষকেও ফোন ব্যবহারের জন্য মাসে ন্যূনতম ২০০-৪০০ টাকা ব্যয় করতে হয়। এমতাবস্থায় হাসপাতালের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কথা মাথায় রেখে অতিরিক্ত আয়ের উৎস হিসাবে টিকিটের মূল্য কিছুটা বাড়ানো বোধ হয় অযৌক্তিক হবে না। বরং কোষাগার দুর্বল করে সবেতেই ভর্তুকি প্রদান করতে গিয়ে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যটি পূরণ করা গেলেও, তা শেষ পর্যন্ত রাজ্যের অর্থনীতিকে দুর্বল করে দেবে।
রামদাস রায়, চুঁচুড়া, হুগলি
চলাচলে বাধা
বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ে-র দু’ধারে সার্ভিস রোডের কাজ বেশ খানিকটা এগিয়েছে। এতে এই অঞ্চলের মানুষের খুব সুবিধা হয়েছে। আগে যাঁরা রাস্তার উপর দিয়ে প্রাণ হাতে করে যাতায়াত করতেন, তাঁরা এখন সার্ভিস রোড দিয়ে যাতায়াত করতে পারেন। ফলে, দুর্ঘটনার আশঙ্কা অনেকটাই কমেছে। তবে সমস্যা অন্য জায়গায়। রাস্তার দু’ধারে অসংখ্য গাড়ি, যার মধ্যে রয়েছে ভারী ট্রাক, স্কুলবাস, প্রাইভেট চার চাকা, রাস্তার অনেকটা জুড়ে দাঁড়িয়ে থাকে। সবচেয়ে সমস্যা হয় সন্ধ্যার পরে। এই রাস্তায় কোনও আলো নেই। সঙ্কীর্ণ রাস্তায় গাড়িগুলি ও ভাবে দাঁড়িয়ে থাকার ফলে চলাফেরায় অসুবিধা হয়। বিশেষত, মহিলা এবং বয়স্ক মানুষের। এই সার্ভিস রোডটির কিছুটা অংশ ব্যারাকপুর কমিশনারেটের অধীনে এবং কিছুটা অংশ বিধাননগর কমিশনারেটের অধীন। কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন, উপযুক্ত ব্যবস্থা করা হোক।
সমীর বরণ সাহা, কলকাতা-৮১
টেকসই কালি
ভারতীয় রেলের পূর্ব শাখায় বেশ কিছু দিন ধরে একটি সমস্যা দেখতে পাওয়া যাচ্ছে। এমনিতে নিত্যযাত্রীরা মান্থলি টিকিট কেটে ট্রেনে যাতায়াত করেন। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, যে কালিতে মাসিক টিকিটটি ছাপা হয়, তা অর্ধেক মাস পার হওয়ার আগেই হালকা হয়ে যাচ্ছে। টিকিট পরীক্ষককে কিছু দিন পরে ওটা দেখাতে গেলে, তিনি টিকিটের মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার তারিখ খুঁজে পান না। ফলে, যাত্রীদের সঙ্গে টিকিট পরীক্ষকদের প্রতিনিয়ত বাদানুবাদ ও অশান্তি লেগেই থাকছে। শেষ পর্যন্ত, টিকিট থাকা সত্ত্বেও দিতে হচ্ছে জরিমানা। তা ছাড়া, সহযাত্রীদের সামনেও লজ্জার ব্যাপার হয়ে দাঁড়াচ্ছে। সমস্যাটি নিয়ে একাধিক বার টিকিট কাউন্টার ও স্টেশন মাস্টারকে জানানো সত্ত্বেও, কোনও ব্যবস্থা করা হয়নি। এই বিষয়ে রেলের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
কৃষ্ণেন্দু বিশ্বাস, নিয়ামতপুর, নদিয়া
বুকিং শেষ
আইআরসিটিসি থেকে ট্রেনের আসন সংরক্ষণ শুরু হয় ঠিক ৬০ দিন আগে, সকাল ৮টা থেকে। পুজোর ছুটিতে ভ্রমণ বা অন্যান্য প্রয়োজনে অনেকেই এই সময়ে অগ্রিম টিকিট বুক করে থাকেন। বর্তমানে বুকিং শুরু হওয়ার ঠিক এক-দেড় মিনিটের মধ্যেই প্রায় সমস্ত ট্রেনের সব ক্লাসের টিকিট বুক হয়ে গিয়েছে দেখাচ্ছে। কী করে সব টিকিট এ ভাবে বুক হয়ে যেতে পারে? দালালদের দৌরাত্ম্য বন্ধ করতে নাকি রেল কর্তৃপক্ষ সম্প্রতি পদক্ষেপ করেছিল। এই কি তার নমুনা? সাধারণ মানুষ কি নিজেদের মতো কোনও দিনই টিকিট বুক করতে পারবে না?
বিশ্বজিৎ পাল, হাওড়া
দায় কার?
দমদম রোড থেকে মেট্রো এবং সারফেস ট্রেনের টিকিট কাউন্টার এবং প্ল্যাটফর্মে পৌঁছনোর মূল রাস্তাটি এমনিতেই সঙ্কীর্ণ। তার মধ্যে রয়েছে দোকানপাট। এই ভরা বর্ষায় নর্দমার জলে ভর্তি হয়ে রাস্তাটির খুব খারাপ অবস্থা। যাত্রী-সাধারণেরও অসুবিধা বাড়ছে। এই গুরুত্বপূর্ণ যাতায়াতের পথটি নিয়ে অনেক আবেদন-নিবেদন সত্ত্বেও প্রশাসনিক তৎপরতা তেমন করে নজরে পড়ে না। তাই প্রশ্ন, রাস্তাটিকে নোংরা জল মুক্ত রাখার দায়িত্ব কার? পুর প্রশাসন না রেল কর্তৃপক্ষের? যারই দায়িত্ব হোক, এ ক্ষেত্রে যাত্রীদের সুবিধা-অসুবিধার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিলে আমরা বাধিত হই।
মানস কুমার সেনগুপ্ত, কলকাতা-৭৪
যাত্রী-স্বার্থে
যে-হেতু বর্তমানে কবি সুভাষ মেট্রো স্টেশনের পরিষেবা বন্ধ তাই নয়াবাদ, ক্ষুদিরাবাদ, দাসপাড়া প্রভৃতি অঞ্চলের জনসাধারণ এখন প্রভূত অসুবিধার সম্মুখীন। সে ক্ষেত্রে ক্ষুদিরাবাদ এবং নয়াবাদ মিনি বাস স্ট্যান্ড থেকে কবি সুভাষ মেট্রো স্টেশন অভিমুখে যে সমস্ত টোটো/অটো চলাচল করে, সেগুলির অন্তিম পরিবর্তিত গন্তব্যস্থল শহিদ ক্ষুদিরাম মেট্রো স্টেশন পর্যন্ত হলে ভাল হয়। পরিবহণ দফতর বা রাজ্য সরকার এই বিষয়ে পদক্ষেপ করলে যাত্রী-সাধারণ উপকৃত হবেন।
তপন কুমার বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতা-৯৪
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)