এক জন খেলোয়াড় যদি বিশ্ববিখ্যাত হন, তাঁকে যদি অনেকেই সর্বকালের অন্যতম শ্রেষ্ঠ খেলোয়াড় বলে অভিহিত করেন, তবে তাঁর থেকে সমর্থকদের প্রত্যাশা এবং তাঁর প্রতি নিন্দুকদের নজর খুবই বেশি থাকবে, তা স্বাভাবিক। এবং তিনি যদি বিশ্বকাপের মতো গুরুত্বপূর্ণ আসরে তাঁর জাদু না দেখাতে পারেন, নিশ্চয়ই সমালোচনা হবে। কিন্তু ফেসবুকে মেসিকে (ছবিতে) নিয়ে যা ঘটল, তা দেখে অবাক লাগে। এই পরিমাণ গালাগালি, অশ্লীল আক্রমণ এক জন খেলোয়াড়ের কি প্রাপ্য! নাইজিরিয়ার সঙ্গে আর্জেন্টিনা না জিতলে (বা ড্র করলে) কী হত, ভাবলেও শিউরে উঠতে হয়।
নিশ্চয়ই বড় বড় মানুষদের নিয়ে মজা করা যাবে, তাঁদের অক্ষমতাকে বিদ্রুপও করা যাবে। কিন্তু তা করতে গিয়ে যদি ইতর ব্যবহারের অাশ্রয় নিতে হয়, তখন মজা করার অক্ষমতাই প্রকাশ পায়। সোশ্যাল মিডিয়ায় এখন একটি অতিপ্রচলিত ব্যাপারই হল হিংস্র আক্রমণ করা এবং কোনও মাত্রাজ্ঞান না রাখা। আগেও নিজের দেশের ক্রিকেট দল ভাল না খেললে নায়কদের পোস্টারে জুতোর মালা দেওয়া, বাড়িতে ঢিল ছোড়া আমরা দেখেছি। সেই সংস্কৃতিটাই ব্যাপক ভাবে উদ্যাপিত হচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।
সুকল্যাণ বিশ্বাস কলকাতা-৬৪
শিক্ষক ও পুলিশ
সংবাদমাধ্যম থেকে জানতে পারলাম, গত ২১ জুন ময়ূখ ভবনের সামনে অধ্যাপক আন্দোলন থেকে এক জন অধ্যাপক নেতাকে পুলিশ প্রথমে আটক ও তিন দিন পরে গুরুতর চিকিৎসারত অবস্থায় গ্রেফতার করে, ফৌজদারি দণ্ডবিধিতে অভিযোগ করেছে। অভিযোগ, তিনি অধ্যাপকদের নিয়ে ষড়যন্ত্র করছিলেন পুলিশকে আক্রমণের জন্য এবং পরে তিনি একাই পুলিশকে আক্রমণ করেছেন! পুলিশ যদি আগে থেকেই জানে অধ্যাপকরা ষড়যন্ত্রে সামিল হচ্ছেন, তা হলে তাঁদের গ্রেফতার না করে মিছিল করতে দিল কেন?
ব্যাপার হল, ওই দিন তাঁরা যে করুণাময়ীতে সমবেত হবেন এবং বিকাশ ভবনে শিক্ষামন্ত্রীকে ডেপুটেশন দেবেন— সে বিষয়টি আগেই পুলিশকে জানানো হয়েছিল, জানানো হয়েছিল মন্ত্রীমহোদয় এবং সরকারি শিক্ষা আধিকারিকদেরও। কী তাঁদের দাবি? কেন তাঁরা এ কাজ করছেন? কলেজে কলেজে, সরকারি শিক্ষা দফতরে প্রচারপত্র বিলি করে সে কথা বলাও হয়েছিল। তা হলে প্রায় হাজারখানেক অধ্যাপক সে দিন ওইখানে উপস্থিত হয়ে ষড়যন্ত্রে সামিল— এই যুক্তির মানে কী?
তাঁরা কি অপরাধী ছিলেন? তাঁরা কি অন্যায্য কোনও দাবি করেছিলেন, যার জন্য পুলিশ ডাকতে হয়েছিল? মন্ত্রীমহোদয় আলোচনার টেবিলে এর সমাধান করতে পারতেন, এর জন্য চার বছর আগে কমিশনও গঠন করা হয়েছিল, কিন্তু কিছুই হয়নি। পুলিশ যেখানে ব্যারিকেড করেছিল সেখানে আগে থেকেই সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধি, পুলিশ, পুলিশের ক্যামেরা, পথচলতি জনসাধারণ— সবাই ছিল। সকলের সামনে ঘটনাটি ঘটেছিল। পরে সারা দিন বিভিন্ন মিডিয়ায় যা দেখানো হয়েছে, তা থেকে স্পষ্ট, কারা আক্রমণকারী আর কারা নয়। ওই পরিবেশে শুধু এক জন অধ্যাপক পুলিশকে মার শুরু করলেন! আর পুলিশের মারে গুরুতর জখম ওই অধ্যাপক নেতাকে (পুলিশকে নয়) হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে প্রায় বিনা চিকিৎসায় সন্ধে পর্যন্ত ফেলে রাখা হল অক্সিজেনের মাস্ক পরিয়ে!
পরের দিন থেকে শিক্ষামন্ত্রী ফোনে তাঁর খবর নিলেন এবং দেখতে আসবেন বললেন এবং জানালেন পুলিশের আচরণকে তিনি সমর্থন করেন না এবং বিষয়টি তিনি দেখবেন। তিনি কী দেখলেন? তাঁর দফতরের উচ্চশিক্ষায় কর্মরত অধ্যাপকরা দীর্ঘ দিন ধরে তাঁদের পাওয়া না-পাওয়ার বিষয়টি জানাতে গিয়েছিলেন, তাঁদের কী উপহার দিলেন? বাংলার উচ্চশিক্ষার ভারবহনের প্রধান কান্ডারিদের উপরে পুলিশি নিগ্রহ চালিয়ে কোন বার্তা দিলেন দেশের সামনে? তিনি কি দোষী পুলিশের শাস্তি বিধানের কোনও কথা বললেন? মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের কথা জানালেন? না। যখন বারে বারে এক দিকে এই অধ্যাপকদের সঙ্গে বসে তিনি সমাধানের কথা বলছেন, তখন
এই ধরনের পুলিশি আচরণ কোন তন্ত্রের পরিচয়?
মঙ্গলকুমার নায়ক গড়বেতা কলেজ, পশ্চিম মেদিনীপুর
শিক্ষকের ছুটি
ছুটিকে কেন্দ্র করে সরকারি কর্মচারীদের সঙ্গে শিক্ষকদের যেন টোয়েন্টি-টোয়েন্টি ম্যাচের মতো পরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছে। ছুটি কে বেশি পেল আর কে কম পেল, তা নিয়ে তর্জা শুরু হয়ে গিয়েছে। আমার মনে হয় রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের সঙ্গে আমাদের এটা দ্বন্দ্বের বিষয় নয়, শিক্ষকদের যদি কোনও অভাব অভিযোগ থাকে তা আমাদের আন্দোলন করেই আদায় করতে হবে। এক সময় শিক্ষাবিদরা মনোবৈজ্ঞানিক এবং ভৌগোলিক কারণেই স্কুল স্তরে ৮০টির বেশি ছুটি থাকার ব্যবস্থা করেছিলেন। পূর্বতন সরকারের সময় থেকে তা কমতে কমতে আজ ৬৫তে ঠেকেছে। এ নিয়ে আমরা জোরালো আন্দোলন বা প্রতিবাদ করতে পারিনি। আজ ১০ দিনের বাড়তি ছুটির জন্য শিক্ষকদের উপস্থিতি নিয়ে যে বিতর্কের সৃষ্টি করা হয়েছে তাতে সরকারি করুণার দিকে তাকিয়ে থাকা ছাড়া আমাদের কোনও উপায় নেই। এই করুণা-ভিক্ষার থেকে বরং পুরনো ছুটির সংখ্যা ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে হোক প্রতিবাদ। আর ভিন্ন ভিন্ন বিভাগের কর্মচারীদের সঙ্গে আমাদের সহমর্মিতার সম্পর্ক থাক। দ্বন্দ্বটা হোক সরকারি পদক্ষেপের বিরুদ্ধে। আমরা প্রত্যেকে যদি প্রত্যেকের প্রতি সহানুভূতিশীল না হতে পারি তা হলে বৃহৎ ঐক্যের জায়গাটা মার খেয়ে যাবে।
কিংকর অধিকারী বালিচক, পশ্চিম মেদিনীপুর
কোন নম্বর?
বর্তমান স্কুল সার্ভিসে শিক্ষক নিয়োগ হয় অ্যাকাডেমিক এবং নির্ণায়ক পরীক্ষাতে মোট প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে। কিন্তু এতে দেখা যায়, যে পরীক্ষার্থীর অ্যাকাডেমিক নম্বর কম, তিনি নির্ণায়ক পরীক্ষাতে এক জন ভাল অ্যাকাডেমিক স্কোরারের তুলনায় বেশি নম্বর তুলেও চাকরি পাচ্ছেন না। অথচ নির্ণায়ক পরীক্ষাতে কম নম্বর পেয়েও ভাল অ্যাকাডেমিক স্কোরাররাই দেখছি এ বারে সদ্য প্রকাশিত স্কুল সার্ভিসে সুযোগ পেয়েছেন। নিয়মটা যদি বদল করে শিক্ষা দফতর একটু চিন্তাভাবনা করে, তা হলে উপকার পাবেন ২০০৬ সালের আগে মাধ্যমিক পাশ করা ভাইবোনেরা। কারণ, তখনকার সময়ে বেশি নম্বর পাওয়া ভীষণ কঠিন ছিল। প্রশাসনিক দফতরে যাঁরা চাকরি পাচ্ছেন তাঁরা কি অ্যাকাডেমিক নম্বরের ভিত্তিতে চাকরি পাচ্ছেন, না নির্ণায়ক পরীক্ষাতে প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে? যাঁদের অ্যাকাডেমিক স্কোর কম তাঁরা কি এসডিও, বিডিও প্রভৃতি হচ্ছেন না?
শ্যামল বিশ্বাস ই-মেল মারফত
যাক প্লাস্টিক
যাক, কেউ অন্তত পথ দেখাচ্ছে। মহারাষ্ট্র সরকার ঘোষণা করেছে, মহারাষ্ট্রের কোথাও কারও কাছে প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ পাওয়া গেলে, তার বিরুদ্ধে তক্ষুনি শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেবে রাজ্য প্রশাসন। পশ্চিমবঙ্গে প্লাস্টিক ব্যাগ ব্যবহারের বিরুদ্ধে তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে পরিবেশ ও বিজ্ঞান-কর্মীরা আন্দোলন করছেন। সরকারের তরফেও এই ব্যাপারে মাঝেমধ্যেই সচেতনতা বৃদ্ধি করার জন্য প্রয়াস নেওয়া হয়, কিন্তু এতে জনগণের বিশেষ হেলদোল আছে বলে মনে হয় না। রাজ্যের কয়েকটি পুরসভা স্ব স্ব পুর এলাকায় প্লাস্টিক বর্জন এবং প্লাস্টিক ব্যাগ ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি করলেও তেমন ফলপ্রসূ হয়নি এই সমস্ত প্রয়াস। আইনি কাঠামোয় বড় মাপের রদবদল করে দেখা যেতে পারে।
শোভনলাল চক্রবর্তী কলকাতা-৯৪
চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা
সম্পাদক সমীপেষু,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা-৭০০০০১।
ই-মেল: letters@abp.in
যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy