Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

লন্ডন ডায়েরি

সত্যজিৎ রায়ের মতে স্বাধীনতা-পূর্ব ভারতের সেরা টেলিভিশন-ড্রামা ছিল ‘জুয়েল ইন দ্য ক্রাউন’। পল স্কটের উপন্যাস ‘দ্য রাজ কোয়ার্টেট’ অবলম্বনে তৈরি এই টিভি সিরিজ ব্রিটিশ টিভিতে দেখানো হয়েছিল ১৯৮৪ সালে, সুপারহিট হয়েছিল ব্রিটেন আর আমেরিকায়।

শ্রাবণী বসু
শেষ আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০১৭ ০০:২৯
Share: Save:

আদ্যোপান্ত সাহেব, আগ্রহী ভারত নিয়েও

সত্যজিৎ রায়ের মতে স্বাধীনতা-পূর্ব ভারতের সেরা টেলিভিশন-ড্রামা ছিল ‘জুয়েল ইন দ্য ক্রাউন’। পল স্কটের উপন্যাস ‘দ্য রাজ কোয়ার্টেট’ অবলম্বনে তৈরি এই টিভি সিরিজ ব্রিটিশ টিভিতে দেখানো হয়েছিল ১৯৮৪ সালে, সুপারহিট হয়েছিল ব্রিটেন আর আমেরিকায়। এ সপ্তাহেই মারা গেলেন সেই টিভি সিরিজের অন্যতম অভিনেতা টিম পিগট-স্মিথ। বয়স হয়েছিল ৭০। তাঁর অভিনীত চরিত্রটি ছিল রোনাল্ড মেরিক নামের এক বর্ণবিদ্বেষী পুলিশ অফিসারের। এই অভিনয়ের পরই বহু খলনায়কের চরিত্রে অভিনয়ের জন্য তিনি হলিউডের বিস্তর অফার পান, কিন্তু করেননি। গভীর কণ্ঠস্বর ও জোরালো উপস্থিতি ছিল তাঁর, মঞ্চ ও চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন নানা ঐতিহাসিক চরিত্রে। মৃত্যুর আগেও ‘ডেথ অব আ সেল্‌সম্যান’ নাটকের মহড়ায় মেতে ছিলেন।

তারকা: ‘জুয়েল ইন দ্য ক্রাউন’ টিভি-সিরিজে সহ-অভিনেতাদের সঙ্গে টিম পিগট-স্মিথ

গত বছর ‘ভিক্টোরিয়া অ্যান্ড আব্দুল’ ছবির শুটিঙে দেখা হয়েছিল তাঁর সঙ্গে। তিনি ছিলেন রানির আপ্তসহায়ক হেনরি পনসনবি-র ভূমিকায়। আপাদমস্তক ভদ্রলোক পিগট-স্মিথ ভারতের ইতিহাস নিয়ে খুবই আগ্রহী ছিলেন। ভারতের স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তিতে তৈরি একটি তথ্যচিত্রের কাজে কলকাতা এসেছিলেন। ‘জুয়েল ইন দ্য ক্রাউন’-এর শুটিঙে দেড় বছর রাজস্থানে থাকার সময় যোগাভ্যাস শিখেছিলেন। ‘ভিক্টোরিয়া অ্যান্ড আব্দুল’-ই তাঁর শেষ ছবি। দেখে যেতে পারলেন না।

পঞ্চাশে উৎসব

‘দ্য বিটলস’-এর সবচেয়ে জনপ্রিয় অ্যালবামগুলোর একটা— ‘সার্জেন্ট পেপার্স লোনলি হার্টস ক্লাব ব্যান্ড’— পঞ্চাশ পেরোল। লিভারপুল শহরে একগুচ্ছ অনুষ্ঠান হচ্ছে এই ঘটনার উদ্‌যাপনে, থাকছে কনসার্ট, আর্ট ইনস্টলেশন। সারা বিশ্বের বহু শিল্পী অ্যালবামের ১৩টি গান (‘শি’জ লিভিং হোম’ আর ‘হোয়েন আয়্যাম সিক্সটি ফোর’ সহ) নিয়ে তাঁদের শ্রদ্ধার্ঘ্য পাঠাচ্ছেন। ভারতীয় শিল্পীদের অনুষ্ঠানে বাজাবেন পণ্ডিত বিশ্বমোহন ভাট ও পণ্ডিত রণজিৎ সেনগুপ্ত।

তনিকার নাটক

গ্লোব থিয়েটার ভারতের স্বাধীনতার সত্তর বছর পূর্তি উদ্‌যাপন করছে নানা অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে। তারই একটা বাঙালি নাট্যকার তনিকা গুপ্তের নাটক ‘লায়ন্স অ্যান্ড টাইগার্স’। নাটকের কেন্দ্রীয় চরিত্র স্বাধীনতা সংগ্রামী দীনেশ গুপ্ত (বিনয়-বাদল-দীনেশ’এর অন্যতম), যিনি ১৯৩০ সালে রাইটার্স বিল্ডিংয়ে কর্নেল সিম্পসনকে গুলি করে হত্যা করেছিলেন। তনিকা দীনেশ গুপ্তের পরিবারেরই মেয়ে। দীনেশ বাংলায় কিংবদন্তি হলেও ব্রিটেনে তেমন পরিচিত নন। জেল থেকে লেখা তাঁর চিঠিগুলো ভিত্তি করেই নাটকটা লেখা। অগস্টে গ্লোব থিয়েটারে অভিনীত হবে এই নাটক।

প্রতিবাদের হাসিমুখ

সোশাল মিডিয়া খুঁজে পেয়েছে নতুন এক নায়ককে, সাফিয়া খান। পাকিস্তান ও বসনিয়া-জাত এশীয় এই মেয়েটির একটি ছবি নিয়ে অন্তর্জাল তোলপাড়। ছবিতে দেখা যাচ্ছে, দক্ষিণপন্থী ও বর্ণবিদ্বেষী দল ‘ইংলিশ ডিফেন্স লিগ’-এর এক রাগী সদস্যের সামনে সে হাসিমুখে দাঁড়িয়ে আছে। ছবিটা রিটুইট হয়েছে অসংখ্য বার, টিভি-রেডিয়োতেও ছড়িয়ে পড়েছে খবরটা। ছবিটা তুলেছেন প্রেস অ্যাসোসিয়েশন-এর আলোকচিত্রী জো গিডেন্স। দক্ষিণপন্থী দলটি বার্মিংহ্যাম শহরে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিল, তখনই তোলা। ইয়ান ক্রসল্যান্ড নামের ছেলেটি সাফিয়ার দিকে রেগে তাকিয়ে আছে, আর সাফিয়া সহাস্যে তাকিয়ে আছে ছেলেটির দিকে।

সহাস্য: সাফিয়া খানের যে ছবি নিয়ে সোশাল মিডিয়া তোলপাড়

সাফিয়া পরে বলেছে, হিজাব-পরা এক মহিলাকে দলের সদস্যরা ঘিরে ধরেছিল, সেই দেখেই সে ক্রসল্যান্ডের মুখোমুখি এসে দাঁড়ায়। সাংবাদিক পিয়ার্স মর্গ্যান ছবিটিকে বলেছেন ‘সপ্তাহের সেরা ছবি’, বহু মিডিয়া সাফিয়ার সাক্ষাৎকার নিয়েছে। ‘ম্যারি মি’ হ্যাশট্যাগে একগুচ্ছ বিয়ের প্রস্তাবও পেয়েছে সে, সবাই তাঁকে বলছে ‘কুল’ আর ‘রকিং’। ধন্যবাদ দিয়েছেন সেই মহিলাও, যাঁকে বাঁচাতে সাফিয়া এগিয়ে এসেছিল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

London Diaries
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE