Advertisement
E-Paper

আকাশটা ঝকঝকে, কিন্তু আত্মঘাতী ঝড়ের মেঘটাও উঁকি দিচ্ছে

রাজ্যে বিরোধী রাজনীতির আকাশ ঘন অন্ধকারে আচ্ছন্ন। সময়ের ইঙ্গিত, এ অন্ধকার আরও গাঢ় হবে। স্বাভাবিক ভাবেই শাসকের আকাশ আলোয় আলো হয়ে থাকা উচিত। কিন্তু বাস্তবে ছবিটা একটু অন্য রকম ঠেকছে। শাসকের আকাশে ইতিউতি ঝড়ের মেঘ পুঞ্জীভূত হতে দেখছি যেন।

অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৪:১৫

রাজ্যে বিরোধী রাজনীতির আকাশ ঘন অন্ধকারে আচ্ছন্ন। সময়ের ইঙ্গিত, এ অন্ধকার আরও গাঢ় হবে।

স্বাভাবিক ভাবেই শাসকের আকাশ আলোয় আলো হয়ে থাকা উচিত। কিন্তু বাস্তবে ছবিটা একটু অন্য রকম ঠেকছে। শাসকের আকাশে ইতিউতি ঝড়ের মেঘ পুঞ্জীভূত হতে দেখছি যেন।

শাসক দল তথা সরকারের কোনও পদক্ষেপে বাধা হয়ে দাঁড়ানোর সক্ষমতা এ রাজ্যের বিরোধী শিবিরে এখন তেমন নেই। অতএব, কলকাতার পদ্মপুকুরে পুরসভার অব্যবহৃত বিদ্যাসাগর মঞ্চকে যখন অন্য ভাবে প্রশাসনিক কাজে লাগানোর সিদ্ধান্ত হল, তখন কল্পনার সুদূর দিগন্তেও কোনও বিরোধিতার মেঘের আভাস ছিল না। কিন্তু দীর্ঘ দিন অব্যবহৃত পড়ে থাকা মঞ্চকে কাজে লাগানোর চেষ্টা হতেই অবৈধ দখলদাররা প্রতিরোধ গড়ে তুললেন। এবং প্রতিরোধকারীদের হাতে শাসক তৃণমূলের পতাকাই দেখা গেল।

মাত্র দিন দু-তিন আগে একই রকম মেঘ উঁকি দিয়েছিল ইএম বাইপাস সংলগ্ন মাদুরদহে। ৪৭ একর খাসজমিতে বেড়া বসানোর জন্য ১০ দিনে তিন বার চেষ্টা চালাল প্রশাসন। শেষ দিনে বড়সড় পুলিশ বাহিনী সঙ্গে নিয়ে। কিন্তু দখলদারদের বাধায় খালি হাতেই ফিরতে হল পুলিশ, প্রশাসন, পুরসভাকে। সেই দখলদারদের হাতেও ছিল ঘাসফুল আঁকা পতাকা।

আরও কয়েকটা দিন পিছিয়ে যাওয়া যাক। মুখ্যমন্ত্রীর সাধের প্রকল্প মিষ্টি হাব তৈরি হওয়ার কথা ছিল বর্ধমানের যে জমিতে, বিক্ষোভের জেরে সেই জমিও পুরনো মালিকদের হাতেই ফিরিয়ে দেওয়ার পথে হাঁটতে বাধ্য হল রাজ্য সরকার। সেই বিক্ষোভকারীদের হাতেও ছিল তৃণমূলেরই ঝান্ডা।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রিত্বের দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করার পর যে ঝকঝকে আকাশটা পেয়েছিলেন, সাম্প্রতিক কিছু উপসর্গ বলছে, সে আকাশ অতটা ঝকঝকে বোধ হয় আর নেই। আর সে আকাশে ঝড়ের মেঘ হয়ে আনাগোনা যাদের, তারা সবাই তৃণমূলেরই, বিরোধী শিবিরের নন।

তৃণমূলে অনেক শ্রেণি এখন— আদি তৃণমূল, নব্য তৃণমূল, নব্যতর তৃণমূল, কংগ্রেস ভেঙে আসা তৃণমূল, বামেদের ছেড়ে আসা তৃণমূল, ক্ষমতার কাছাকাছি থাকা তৃণমূল, বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠা তৃণমূল। হয়তো বা আরও কয়েক রকম। সঙ্ঘাতের উৎসস্থল এই বিভাজন রেখাগুলিই। বিরোধী নেই, কিন্তু বিরোধের অভাব নেই।

মেঘ এখন ছড়িয়ে-ছিটিয়ে এবং অকিঞ্চিৎকর অস্তিত্বে। মাস কয়েক আগের বিপুল নির্বাচনী সাফল্য মমতার আকাশে যে জাজ্জ্বল্যমান সূর্য এঁকে দিয়েছে, তার ছটায় এই ইতস্তত বিক্ষিপ্ত মেঘের কালিমা এখনও ম্লানই। এই মেঘ কালে কালে পুঞ্জীভূত হয়ে প্রলয়ের রূপ নেবে, তেমন বলার সময়টাও এখনও হয়নি। তবু অস্বস্তিটা থেকেই যাচ্ছে। যে আকাশ আজ শুধু রামধনুময় হওয়াই কাম্য ছিল, সে আকাশে চিন্তার বঙ্কিম রেখা উঁকি দিচ্ছে একটা।

Anjan Bandyopadhyay Newsletter
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy