Advertisement
২২ মার্চ ২০২৩

সময়ের চেয়ে বহু পিছিয়ে থাকার উত্তরাধিকার বহন করছি কেন!

কমবেশি দেড়শো বা পৌনে দুশো বছর আগের এক ভারতে ফিরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে দ্যুতির সঙ্গে ঘটতে থাকা ঘটনা।

দ্যুতি চন্দ। —ছবি এএফপি।

দ্যুতি চন্দ। —ছবি এএফপি।

অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ২১ মে ২০১৯ ০০:৪১
Share: Save:

কপাট খুলে দেওয়া হয়েছে। নবারুণের দ্যুতিকে পথ করে দিতেই সে সিদ্ধান্ত। কিন্তু নতুন সকালটাকে বরণ করা তো দূরের কথা, সকাল বলে মানতেই রাজি নন এক বিরাট অংশ।

Advertisement

একবিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয় দশকের প্রায় শেষ প্রান্তে দাঁড়িয়ে রয়েছি আমরা। সেখানে দাঁড়িয়ে দেখছি, দ্যুতি চন্দ নামে এক আন্তর্জাতিক স্তরের ক্রীড়াবিদকে প্রবল পারিবারিক ও সামাজিক বিরোধিতার মুখে পড়তে হয়েছে নিজের পছন্দ মতো জীবনসঙ্গী বেছে নেওয়ার প্রশ্নে।

সমলিঙ্গের সঙ্গীকে নিয়ে জীবন কাটাতে চান দ্যুতি। বিরোধিতা সেখানেই। দ্যুতি চন্দ আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন। সুতরাং সামাজিক অবস্থান বেশ দৃঢ় তাঁর। তিনিই যদি এত বড় বিরোধের মুখে পড়েন, তা হলে অপেক্ষাকৃত সাধারণ দ্যুতিরা কী পরিস্থিতির মুখোমুখি হবেন বা হচ্ছেন!

সম্পাদক অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা আপনার ইনবক্সে পেতে চান? সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন

Advertisement

আরও পড়ুন: সম্পত্তির জন্য বোনকে ‘ব্ল্যাকমেল’ করছেন সঙ্গী, বলছেন দ্যুতির দিদি

সমকামিতা অপরাধ ছিল এ দেশে, সামাজিক ভাবে তো বটেই, আইনের চোখেও। সমলিঙ্গের দুই নাগরিক পরস্পরকে জীবনসঙ্গী হিসেবে বেছে নেবেন, এমনটা ভাবাই যেত না। কিন্তু ভারতীয় রাষ্ট্র নিজেকে সংশোধন করেছে। সমপ্রেমকে বৈধতা দিয়েছে। তার পরেও দ্যুতি চন্দের সঙ্গে যা ঘটছে, তা বুঝিয়ে দিচ্ছে, রাষ্ট্র যতই বদলে নিক নিজেকে, ভারতীয় সমাজের আস্তিনে এখনও বিস্তর নেতির বাস।

কমবেশি দেড়শো বা পৌনে দুশো বছর আগের এক ভারতে ফিরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে দ্যুতির সঙ্গে ঘটতে থাকা ঘটনা। আইনি স্তরে একে একে রুদ্ধ হচ্ছে সতীদাহ বা বাল্যবিবাহের পথ। বৈধ ঘোষিত হচ্ছে বিধবা বিবাহ। কিন্তু ভারতীয় সমাজ কিছুতেই সে সব মেনে নিচ্ছে না। প্রবল প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা হচ্ছে, সঙ্ঘাত বাড়ছে, সমাজ সংস্কারকদের চিহ্নিত করার চেষ্টা হচ্ছে সমাজের শত্রু হিসেবে। সেই পৃথিবীকে, সেই সময়কে বহু পিছনে ফেলে এসেও মানসিকতার ছাঁচটা বদলাতে পারেনি ভারতীয় সমাজ। সমাজ সংস্কারে আজও অগ্রগণ্য ভূমিকা নিতে হয় আইনকে, তাতেও বাধাবিঘ্ন কাটতে চায় না। এই মানসিক প্রতিকূলতা আর কত দিন? এখনও যদি খুলতে না পারি কপাটগুলো, রামমোহন বা বিদ্যাসাগরের উত্তরাধিকার বহন করব কী ভাবে?

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE
Popup Close
Something isn't right! Please refresh.