Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪
Newsletter

রাজনৈতিক সন্ধিক্ষণে মুকুল রায়! নজর থাকবে অনেকেরই

মুকুল রায় দলে আসায় দিলীপ ঘোষরা খুব স্বস্তিতে নেই বলে যে গুঞ্জন উঠেছিল, তা নস্যাৎ করে দিলীপই দলীয় দফতরে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানালেন মুকুলকে।

রাজ্য বিজেপির দলীয় দফতরে মুকুল রায় এবং দিলীপ ঘোষ। ছবি: পিটিআই।

রাজ্য বিজেপির দলীয় দফতরে মুকুল রায় এবং দিলীপ ঘোষ। ছবি: পিটিআই।

অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ০৭ নভেম্বর ২০১৭ ০০:২৩
Share: Save:

অস্তিত্ব জানান দিলেন মুকুল রায়। দিল্লিতে গিয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে যোগ দিয়েছিলেন বিজেপিতে। চোখ টেনেছিলেন সে দিনই। আর বাংলায় ফিরলেন উল্লেখযোগ্য সমারোহ সঙ্গী করে।

মুকুল রায়কে স্বাগত জানাতে কলকাতা বিমানবন্দরেই চোখে পড়ার মতো জমায়েত করল বিজেপি। মুকুল রায় দলে আসায় দিলীপ ঘোষরা খুব স্বস্তিতে নেই বলে যে গুঞ্জন উঠেছিল, তা নস্যাৎ করে দিলীপই দলীয় দফতরে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানালেন মুকুলকে। আর মুকুল বেশ দ্বিধাহীন ভঙ্গিতে জানালেন, এ রাজ্যে দিলীপই তাঁর নেতা। সব মিলিয়ে মুকুল রায়ের গৈরিকীকরণকে ঘিরে বেশ একটা শান্তিকল্যাণের ছবি রাজ্য বিজেপিতে। উৎসব-উৎসব ভঙ্গিও বটে।

আরও পড়ুন: ভিড়ের বৃত্তে বিজেপির মুকুল, বাবাকে ‘চ্যালেঞ্জ’ শুভ্রাংশুর

তাঁর রাজনৈতিক অস্তিত্ব যে এখনও পর্যন্ত গুরুত্বহীন হয়ে পড়েনি, সে কথা মুকুল রায় বুঝিয়ে দিতে সক্ষম হয়েছেন। নতুন দলে যোগদানের পর্বটাও বেশ নজরকাড়া ভঙ্গিতেই সেরেছেন।

এ পর্যন্ত সব ইতিবাচকই হয়তো মুকুল রায়ের পক্ষে। কিন্তু আসল লড়াইটা এ বার শুরু। রাজনৈতিক অস্তিত্ব কতটা গুরুত্বপূর্ণ তাঁর, রাজনীতিক মুকুল রায়ের থাকা আর না থাকায় পরিস্থিতিতে আদৌ ফারাক হয় কি না, তার প্রমাণ কিন্তু মুকুল রায়কে দিতে হবে। সেই পর্বটা এ বার শুরু হচ্ছে। মুকুল রায়ের সামনে এ একটা সুযোগও বটে। আবার কঠিন এক চ্যালেঞ্জও বটে।

তৃণমূলের গুরুত্বপূর্ণ নেতা হিসেবে সামনের সারিতে দাঁড়িয়ে দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন এক সময়ে মুকুল রায়। তৃণমূলের মজবুত সংগঠন গড়ে তোলার পিছনেও মুকুল রায়ের অবদান অনস্বীকার্য বলে অনেকেই মনে করেন। দীর্ঘ রাজনৈতিক পথ পরিক্রমা এবং পর্যাপ্ত সাংগঠনিক কার্যকলাপের অভিজ্ঞতা মুকুল রায়ের সম্পদ। এই সম্পদে সমৃদ্ধ বলেই মুকুল রায় নিজেও সম্পদ হিসেবেই বিবেচিত বিজেপির কাছে। কিন্তু ভুললে চলবে না, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছত্রছায়ায় থেকে রাজনৈতিক এবং সাংগঠনিক সাফল্য পাওয়া যতটা অনায়াস, এ বাংলার অন্য কোনও দলে নাম লিখিয়ে ততটা সাফল্য পাওয়া এই মুহূর্তে অন্তত খুব সহজ বিষয় বলে প্রতীত হয় না। তৃণমূলের হয়ে বা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের সেকেন্ড-ইন-কম্যান্ড হয়ে যে সাফল্য মুকুল রায় পেয়েছেন, বিজেপি নেতা মুকুল রায়ও সেই সাফল্যই পাবেন কি না, তা অবশ্যই দেখার বিষয়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছত্রছায়ার বাইরে এসেও মুকুল রায় যদি সাংগঠনিক দক্ষতার ছাপ রাখতে পারেন, এ রাজ্যে বিজেপির জয়যাত্রা যদি সম্ভব করে তুলতে পারেন, তা হলে বাংলার রাজনীতিতে মুকুল রায়ের গুরুত্ব অন্য মাত্রায় পৌঁছে যাবে সংশয় নেই। কিন্তু এত চর্চা, এত হই চই, এত উদ্দীপনার পরে যদি বিজেপির নির্বাচনী ভাগ্য উল্লেখযোগ্য ভাবে না বদলায় বাংলায়, তা হলে কিন্তু ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে জায়গা পাকা হয়ে যেতে পারে মুকুল রায়দের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE