Advertisement
E-Paper

আধুনিকতার একটি অসমাপ্ত পাঠ

তিনি নাট্যদর্শনের নতুন পথ দেখিয়েছিলেন। অথচ দেখা গেল, তাঁর থিয়েটার পনেরো বছরের মধ্যেই কার্যত শেষ। আগামী কাল শম্ভু মিত্রের শততম জন্মদিন। শমীক বন্দ্যোপাধ্যায়তখনও হাতে হাতে টেপ রেকর্ডার ঘোরে না। তাই সাক্ষাত্‌কারে কথা শুনতে শুনতেই দ্রুত হাতে লিখে নিতে হয়, তবু আমার সেই প্রায় প্রথম প্রয়াসে নিজে থেকেই শম্ভু মিত্রকে কথা দিই, ‘সবটা সাজিয়ে নিয়ে গুছিয়ে লিখে ফেলে আপনাকে দেখতে দেব।

শেষ আপডেট: ২১ অগস্ট ২০১৪ ০০:০০

২২ অগস্ট ১৯১৫ —১৯ মে ১৯৯৭

তখনও হাতে হাতে টেপ রেকর্ডার ঘোরে না। তাই সাক্ষাত্‌কারে কথা শুনতে শুনতেই দ্রুত হাতে লিখে নিতে হয়, তবু আমার সেই প্রায় প্রথম প্রয়াসে নিজে থেকেই শম্ভু মিত্রকে কথা দিই, ‘সবটা সাজিয়ে নিয়ে গুছিয়ে লিখে ফেলে আপনাকে দেখতে দেব। একটু সময় নিয়ে দেখে দেবেন, কাটবার হলে কাটবেন।’ ১৯৬৫ সালে পরিচয় পত্রিকার জন্য শিশিরকুমার ভাদুড়ি প্রসঙ্গে সেই সাক্ষাত্‌কারের বয়ানে আমার পাণ্ডুলিপির প্রশস্ত মার্জিনে লেখার উপসংহার রূপে শম্ভু মিত্র যোগ করেন, ‘কিন্তু এই সমস্ত প্রচণ্ড সুন্দর নাট্যপ্রয়োগ তাঁর জীবনের প্রথম দিকের। প্রায় বলা যায়, প্রথম দশ বারো বছরের মধ্যে। তারপরে এই অলৌকিক প্রয়োগ প্রতিভা আর তেমন করে বোধ হয় প্রকাশ পায়নি। এটা অবশ্য একেবারেই আমার ব্যক্তিগত কথা। আমার মনে হয়, এ-সব ক্ষমতা তো প্রকৃতি চিরকালের জন্যে কাউকে দেয় না, তাই শিশিরবাবুর সেই সমস্ত নাট্যসৃষ্টি দেখে আমরা যারা লাভবান হয়েছি তাদের কাছে থিয়েটারের রেফারেন্স-ই বোধ হয় আলাদা। এরই জন্য আমরা তাঁর কাছে কৃতজ্ঞ।’

শিশিরকুমার সম্পর্কে শম্ভু মিত্র যা বলেছিলেন, তাঁর জন্মশতবর্ষের শুরুতে আমরা যারা কলেজজীবন তথা বিশ্বজ্ঞানান্বেষী প্রথম যৌবনে প্রবেশ করেছিলাম শম্ভু মিত্রের রক্তকরবী (১৯৫৪) ও সত্যজিত্‌ রায়ের পথের পাঁচালী (১৯৫৫) দেখার ঐতিহাসিক উত্তেজনা নিয়ে তাঁর সম্পর্কে ওই একই কথা বলতে পারি। কত বার কত বার রক্তকরবী, পুতুল খেলা, চার অধ্যায়, রাজা অয়দিপাউস, রাজা (মনে রাখবেন, তখন কিন্তু নিউ এম্পায়ারে রবিবার সকালে প্রথম দু-চারটি অভিনয়ের পরে আর প্রেক্ষাগৃহ পুরো ভরে যায় না, তখনও শম্ভুবাবু ও বহুরূপী ‘মাইনরিটি’র থিয়েটার, তা নিয়ে শম্ভুবাবুর প্রশ্রয়েই আমি বহুরূপী পত্রিকায় প্রবন্ধও লিখি) দেখে আমরা থিয়েটারের সেই আলাদা রেফারেন্সটাই তৈরি করি, সেই রেফারেন্স অবলম্বন করেই পাশাপাশি দেখি শিশিরকুমার ভাদুড়ি, বিজন ভট্টাচার্য, উত্‌পল দত্ত, অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায়, সবিতাব্রত দত্তের থিয়েটার। ওই রেফারেন্স নিত্য মাথায় রেখেই ধরতে পারি, চিনতে পারি থিয়েটারি রীতি-শৈলী-ভাষার এক একটি স্বতন্ত্র, স্বাধীন, দীপ্যমান প্রদেশ। শম্ভুবাবুর কাছে তখন নিয়মিত যাই, ওঁর বাড়িতে, অনেক প্রশ্ন আমার, বিশেষত যে পুরনো থিয়েটার দেখিনি আমি সেই বিষয়ে। পরম ধৈর্য সহকারে স্নেহবশে আমাকে সযত্ন, বিস্তারিত বর্ণনায়, কখনও প্রবাদপ্রতিম অভিনেতাদের স্বরক্ষেপণ স্বকণ্ঠে তুলে এনে ধরিয়ে দেন সেই পরম্পরার জাতিপরিচয়। সদ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ সমাপন করে শিক্ষকতায় নিয়োজিত আমি বই কিনে, বই পড়ে দেশবিদেশের থিয়েটার বুঝতে চেষ্টা করি। সেই বই-পড়া বিদ্যাও বার বার যাচাই করে নিই শম্ভুবাবুর কাছেই। ওই ষাটের দশকের শুরুতে শম্ভুবাবু চাইছিলেন নিজেকে অতিক্রম করতে; আমাদের মতো তরুণদের টেনে আনছেন নিজের কাছে (লক্ষণীয়ভাবে, বহুরূপীর বাইরে বহুরূপীর ভেতরে তিনি কিন্তু দূরত্ব-উচ্চতার একটা রাজকীয় জালের আড়াল রাখেন; এক এক দিন দেখি ওঁর বৈঠকখানায় আমাদের দু’জনের কথাবার্তার মাঝখানে বহুরূপীর কেউ কোনও জরুরি কথা বলতে এলেও তাঁকে যেন কিছুটা তাচ্ছিল্যভরেই ‘কাটিয়ে’ দেন!), আমাদের ভাবনা-চিন্তা স্পর্শ করতে, আমাদের জানাশোনা পড়াশোনা থেকে অন্যতর থিয়েটারি সম্ভাবনার হদিশ করতে চান বলেই। নান্দীকারের নাটক দেখে মুগ্ধ হন তিনি। আমি তাঁর হাতে তুলে দিই বাদল সরকারের ‘এবং ইন্দ্রজিত্‌’-এর পাণ্ডুলিপি। আমি তাঁকে পবিত্র সরকার ও আমার সম্পাদিত থিয়েটার পত্রিকায় লিখতে বললে এক কথায় রাজি হন, পত্রিকার নয় মাসের অস্তিত্বে দু’বার আমার নির্দিষ্ট চাহিদা মতো যে নিবন্ধ লেখেন, তার একটি তিনি শুরুই করেন এই বলে, ‘আজ আমাদের বাংলাদেশে নাট্যচর্চার একটা জোয়ার এসেছে। এ জোয়ার আমাদের স্বাধীনতার ফলস্বরূপ।... পরাধীন ভারতবর্ষের সমাজে যে বিশিষ্ট শক্তিগুলো জন্ম নিয়ে ক্রমশ প্রবল থেকে প্রবলতর উঠেছিল, তাদের সাঙ্গীকরণ হয়নি ব্রিটিশ শাসিত সমাজে। অথচ সেই বিদ্রোহীদের নৈতিক শক্তিই ক্রমে ক্রমে সমাজের সকল স্তরের সত্‌ মানুষদের মনে সাড়া জাগাল আর তাই পরাধীন সমাজের বিন্যাস ভেঙে এক নতুন বিন্যাসের জন্ম দিল। বিদ্রোহের সেই সম্প্রসারণের মুহূর্তে এক নতুন নাট্যচর্চারও প্রথম উন্মেষ হল। ব্যবসায়িক মঞ্চের বাইরে। ব্রাত্য হিসাবে। সেইকালে কোনো মঞ্চাধিকারীই তাদের আশ্রয় দেননি, সাহায্য করেননি, বরঞ্চ মঞ্চ ব্যবহার করতে না দিয়ে একেবারে বিনষ্ট করে দেবার চেষ্টা করেছিলেন।... কিন্তু সে উন্মেষ স্তব্ধ হল না, কারণ ইতিহাস তার পক্ষে ছিল। বরঞ্চ তাদেরই প্রভাবে নাট্যক্ষেত্রে অভূতপূর্ব পরিবর্তন ঘটে গেল।’ সেই প্রভাব-পরিবর্তনকে উচ্ছ্বসিত স্বীকৃতি দেন শম্ভুবাবু তাঁর অন্য নিবন্ধটিতে, যাতে তিনি বলেন, ‘শ্রীবাদল সরকারের ‘এবং ইন্দ্রজিত্‌’ পড়ে আমি যেরকম মুগ্ধ হয়েছিলুম, কিম্বা ‘মঞ্জরী আমের মঞ্জরী’-তে অজিতেশবাবুর অভিনয় দেখে যেরকম নেশাগ্রস্তের মতো হয়েছিলুম, এই রকম অসংখ্য রত্নের টুকরো আমাকে অনুপ্রেরণা দিয়েছে, আমাকে শিক্ষা দিয়েছে। বহুরূপীতে বছরের পর বছর কত লোকের কলাকুশলতা দেখেছি, নাট্যের জন্য কত লোককে কত মহত্‌ ত্যাগ করতে দেখেছি এইসব যখন ভাবি তখন নিজেকে ভাগ্যবান বলে মনে করি।’ ওই দ্বিতীয় নিবন্ধের আর এক জায়গায় তিনি লেখেন, ‘আমার অভিজ্ঞতায় আমি বলতে পারি যে, শ্রী কুমার রায়ের বিচিত্র চরিত্রাভিনয়ের যে অসাধারণ ক্ষমতা সেরকম ক্ষমতাসম্পন্ন অভিনেতা তখনকার নাটমঞ্চে এক অদ্ভুতকর্মা যোগেশচন্দ্র ছাড়া আর কেউই ছিলেন না। শ্রী অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরাট আবেগ প্রকাশ করবার যে অসামান্য দক্ষতা সেই ক্ষমতা তখনকার দিন হলে তাঁকে রাতারাতি কিংবদন্তীতে পরিণত করত।’

‘সাংস্কৃতিক উত্‌পাদনের এই ক্ষেত্রে’ নাট্যচর্চার এই ‘জোয়ারে’ ষাটের দশকে নতুনত্ব, অভিনব নাট্যকল্পনা ও সৃষ্টিশক্তির যে স্ফুরণ ঘটছিল, তা মেনে নিয়েই শম্ভুবাবু এই সময় অন্য দিকে হাত বাড়াচ্ছেন। থিয়েটার-এর নিবন্ধে তিনি নতুন ‘সুস্থ দর্শকশ্রেণি’ তৈরি করার দায়ও তুলে ধরছেন ‘যাঁদের সুস্থ আকাঙ্ক্ষার ওপর নির্ভর করে সত্‌ নাট্যশিল্পীও গ্রাসাচ্ছাদনের অর্থ ও নাট্যসাধনার সুযোগ পাবে।’ সেই আগ্রহেই বহুরূপী পত্রিকায় আমাদের মতো নতুন লেখকদের টেনে আনা; থিয়েটার পত্রিকায় তাঁর সহৃদয় সহযোগ; গ্রিক থিয়েটার, শেক্সপিয়রের থিয়েটার ও অস্তিত্ববাদ (যা অবশ্য শেষ পর্যন্ত অপ্রকাশিত থেকে যায়) বিষয়ে বহুরূপী-র বিশেষ সংখ্যা পরিকল্পনা ও প্রকাশে তাঁর উদ্যোগ।

বহুরূপীর পঞ্চাশ-ষাটের দশকের যে প্রযোজনাগুলিতে বহুরূপী ও শম্ভুবাবু তাঁদের কীর্তির তুঙ্গে উঠেছিলেন, তাতে বহুরূপীর স্বাতন্ত্র্য চিহ্নিত হয়েছিল প্রযোজনার প্রায় সব ক’টি অঙ্গে (বিশেষত মঞ্চপরিকল্পনায়, আলো ও অভিনয়ে, ‘রক্তকরবী’তে তত্‌সহ খালেদ চৌধুরীর ধ্বনি ও সংগীতযোজনায়ও) অপরূপ নিটোল পারিপাট্য ও নাটকের একটি বিশেষ পাঠ তথা ব্যাখ্যায় তন্নিষ্ঠ থেকে নিশ্ছিদ্র পারম্পর্যধারিত সামগ্রিক নাট্যবিন্যাসে। এই পর্বেই উত্‌পল দত্তের বয়ানে, ‘বহুরূপী মানেই উচ্চতর এক স্তরে পদপাত। প্রযোজনায় বা নাটক নির্বাচনে এখানে কোথাও এতটুকু শৈথিল্য নেই।’ তারই সঙ্গে প্রায় ওতপ্রোত শম্ভু মিত্রের প্রবল মঞ্চ উপস্থিতি, যার বিচারে উত্‌পল দত্ত বলেন, ‘কোনো দ্বিধাসংশয় ব্যতিরেকেই বলা যায় বর্তমান ভারতীয় থিয়েটারে শম্ভু মিত্র আমাদের মহত্তম অভিনেতা। বাক্‌ প্রক্ষেপে ও আঙ্গিক অভিব্যক্তিতে তাঁর পরিমিতিবোধে তাঁর কয়েক মাইলের মধ্যে কেউ দাঁড়াতে পারবেন না।’ শুধু বাক্প্রক্ষেপ ও উচ্চারণের অর্থনির্ভর ভারই নয়, শম্ভু মিত্রের আরও একটি পরিশীলিত গুণও বিজ্ঞানী-নাট্যরসিক চারুচন্দ্র ভট্টাচার্য লক্ষ করেছিলেন: ‘প্রথম যে দিন ‘রক্তকরবী’তে শম্ভু মিত্রের কণ্ঠস্বর শুনলুম সেদিন ছ্যঁাত্‌ করে পঞ্চাশ বছর আগের আর-এক মিত্তির-কায়েতের কণ্ঠস্বরের আমেজ পেলুম। ইনি ছিলেন অমৃতলাল মিত্র। এখানে বলে নিই, বঙ্গ-রঙ্গমঞ্চে চারজন নট তাঁদের কণ্ঠস্বর দিয়ে শ্রোতাকে অভিভূত করেছেন; তাঁরা হলেন অমৃতলাল মিত্র, শিশিরকুমার ভাদুড়ি, দুর্গাদাস বন্দ্যোপাধ্যায় ও শম্ভু মিত্র।’

নিজের ও বহুরূপীর এই শক্তি সম্পর্কে সম্পূর্ণ অবহিত শম্ভুবাবু ষাটের দশকের মাঝামাঝি যখন ডানা মেলে আর একটা স্তরে উঠতে চাইছেন, তখন তিনি খুঁজছেন অন্য ধরনের নাটক, ইবসেন-এর বাস্তববাদ পেরিয়ে, এমনকী রবীন্দ্রনাথের নাট্যকাব্য পেরিয়েও। তাতে কাজে লাগাতে চান এই শক্তিকে, নামতে চান নবীনদের সঙ্গে শিল্পপ্রতিদ্বন্দ্বেও।

তিনি তখনও স্থিরপ্রত্যয়ী, তিনি শিশিরকুমারের পথ ধরেই এগোবেন, আমায় ওই সাক্ষাত্‌কারে বললেন (এই অংশটাও হাতে লিখে দেওয়া), ‘স্টান্ট বাংলা মঞ্চে অনেক হয়েছে, কিন্তু গৌরব করতে হলে আমরা শিশিরবাবুর এই সমস্ত নাট্য-প্রযোজনার কথাই স্মরণ করি। তিনি বোধহয় আমাদের নাট্যমঞ্চের প্রথম সার্থক নির্দেশক, যিনি টোটাল থিয়েটারের কথা চিন্তা করেছিলেন। তিনি না থাকলে আমাদের কাজের শুরুই হত না। আমরা যে থিয়েটারকে আরও গভীরতর উপলব্ধির ক্ষেত্রে অনুভব করার প্রয়াস পাচ্ছি, সেটা বাংলাদেশে শিশিরবাবু টোটাল থিয়েটার সৃষ্টি করে গিয়েছেন বলেই সম্ভব হয়েছে। নইলে হত না।’ ওই ‘গভীরতর উপলব্ধির’ সন্ধানে যে নাটকগুলি বেছে নিলেন শম্ভুবাবু রাজা অয়দিপাউস-রাজা থেকেই, তার পর বর্বর বাঁশি কিংবা বাদল সরকারের নাটকগুলিতেও, তিনি যেন তার পরিধিটাই আর ধরতে পারছেন না, সমালোচনা উচ্চারিত হতে শুরু হয় (তবে পাঠক সেই সব সমালোচনা আজ ফিরে পড়লে দেখবেন, তার অধিকাংশই সসম্ভ্রম, হতাশাব্যথিত, ক্ষুব্ধও হয়তো, কিন্তু তাতে কুত্‌সা ছিল না, গালিগালাজ ছিল না, বরং শিশিরকুমারকে এক সময় শম্ভুবাবু যে তীব্র তাচ্ছিল্যে তিরস্কার করেছেন তার চিহ্ন ছিল না) শম্ভুবাবু প্রবল অভিমানে নিজেকে ‘আক্রান্ত’ বিবেচনা করে থিয়েটার থেকে ক্রমেই দূরে সরে যেতে থাকলেন। ক্রমে তাঁর নাট্যদলও পালটে গেল, আর রইল না শিশিরকুমারের সর্বত্রগামী, কঠোর পরিমিতিবোধে প্রতিষ্ঠিত নির্দেশকধর্মের লক্ষ্য, ১৯৮৮তে বললেন, ‘অনেকে প্রশ্ন করতে পারেন যে কলাসৃষ্টিটা কি তা হলে নির্দেশকের হাতে হচ্ছে? এটা আমি বলতে চাইনি।... নির্দেশকের কাজ হচ্ছে কারও ভাল অভিনয়টা ভেতর থেকে বার করে আনা।’ ক্রমেই সরে যাচ্ছেন শম্ভুবাবু আধুনিক থিয়েটারের সমবায়িক অথচ এককচিন্তকনির্ভর নাট্যধর্ম থেকে। ফিরিয়ে আনছেন অভিনেতারই প্রাধান্য, এমনকী তার নক্ষত্রাভিলাষ!

অথচ তখনও প্রাণ পণ করে যাঁরা অস্তিত্বকেই বন্ধক রেখে থিয়েটারে আত্মনিবেদিত (বস্তুত তারই খেসারত দিতে কার্যত প্রাণই দিয়ে দিয়েছেন শেষ পর্যন্ত), তাঁদেরই অন্যতম অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায় তাই দেখে কী তিক্ত অভিমানেই না তাঁর ‘শেষ সাক্ষাত্‌কারে’ বলেছিলেন, ‘শম্ভুদা পার্ক সার্কাসে রেস্ট নিচ্ছেন... শম্ভুদার শখ হয়েছিল, করব, করেছিলেন। ক্লান্ত লাগল, ছেড়ে দিলেন।’ ঢের বেশি অনাদর, অসম্মান, নিরাপত্তাহীনতা সত্ত্বেও বিজন ভট্টাচার্য বা অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায় বা শিশিরকুমারও থিয়েটার ছাড়তে পারেননি, আমৃত্যু। অথচ শম্ভুবাবুর থিয়েটার পনেরো বছরের মধ্যেই কার্যত শেষ।

post editorial samik bandopadhay
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy