Advertisement
E-Paper

ওঁরা আদিবাসী বলেই কি এই অবহেলা

ইউরেনিয়ামের খনি। চার পাশে তেজস্ক্রিয়তার বিপদ। তারই মধ্যে মানুষ কাজ করেন, বাঁচেন, এবং মরেন। যথেষ্ট রক্ষাকবচ নেই, এমনকী বিপদ কতটা, জানার যথেষ্ট চেষ্টাও নেই। ঈপ্সিতা পাল ভৌমিক।জাদুগোড়া গেলাম ফেব্রুয়ারিতে। জায়গাটার সঙ্গে প্রথম মোলাকাত ভূগোল বইয়ে দেশের তখনকার সবেধন ইউরেনিয়াম খনি, দেশের পারমাণবিক অস্ত্র ও বিদ্যুতের কাঁচামালের জোগানদার, দেশের সম্পদ, গর্ব, ইত্যাদি ইত্যাদি। পরের সাক্ষাত্‌ আনন্দ পট্টবর্ধনের ‘ওয়র অ্যান্ড পিস’ এবং শ্রীপ্রকাশের ‘বুদ্ধ উইপ্স ইন জাদুগোড়া’র সৌজন্যে।

শেষ আপডেট: ১২ জুন ২০১৪ ০০:০০
বেমালুম। খালি হাতেই বর্জ্যবাহী ট্রাকের ছাউনি ঢাকা দিচ্ছেন কর্মী।

বেমালুম। খালি হাতেই বর্জ্যবাহী ট্রাকের ছাউনি ঢাকা দিচ্ছেন কর্মী।

জাদুগোড়া গেলাম ফেব্রুয়ারিতে। জায়গাটার সঙ্গে প্রথম মোলাকাত ভূগোল বইয়ে দেশের তখনকার সবেধন ইউরেনিয়াম খনি, দেশের পারমাণবিক অস্ত্র ও বিদ্যুতের কাঁচামালের জোগানদার, দেশের সম্পদ, গর্ব, ইত্যাদি ইত্যাদি। পরের সাক্ষাত্‌ আনন্দ পট্টবর্ধনের ‘ওয়র অ্যান্ড পিস’ এবং শ্রীপ্রকাশের ‘বুদ্ধ উইপ্স ইন জাদুগোড়া’র সৌজন্যে। ওখানে গিয়ে ধাক্কা খেলাম। এলাকার মানুষজন তেজস্ক্রিয় জিনিসপত্তর দিব্য নির্বিকারচিত্তে খালি হাতে নাড়াঘাঁটা করছেন, কাউন্টারে কাঁটা বিপদসীমা পেরিয়ে গেছে এমন জায়গায় বিন্দাস খালি পায়ে হেঁটেচলে খেলে বেড়াচ্ছেন, খনির বর্জ্য নিয়ে নাড়াচাড়া করছেন। এবং বুঝতে পারলাম, মানুষের এই চূড়ান্ত অসতর্কতার পিছনে রয়েছে এ বিষয়ে সচেতনতার চরম অভাব। খনি থেকে ইউরেনিয়াম উত্তোলন ও ‘ইয়েলো কেক’ উত্‌পাদনের পরে যে বিপুল পরিমাণ বর্জ্য তৈরি হয়, তা ফেলা হয় একটি পুকুর কেটে। ‘টেলিং পন্ড’। ইউরেনিয়ামের সঙ্গে সেখানে আছে রেডিয়াম, থোরিয়ামের মতো বেশ কিছু তেজস্ক্রিয় ‘ডটার’ নিউক্লেইড, আছে বিক্রিয়ার ফলে উদ্ভূত গামা রশ্মি ও রেডন গ্যাস। এই গ্যাস ছড়িয়ে পড়ে, টেলিং পন্ডের তেজস্ক্রিয় কণারা মেশে জলে। তথ্যচিত্রে দেখা গেল, সেই পুকুরের কাছ দিয়ে লোকজন হেঁটে যাচ্ছেন, সেখানে কাজকর্ম করছেন, তার কাছেই মানুষের বাড়িঘর, নালার জলে নিত্য কাজকর্ম চলছে। পাথর ট্রাকের ঝাঁকুনির সঙ্গে সঙ্গে রাস্তার দু’ধারে ছড়িয়ে পড়ছে, আর তা তুলে নিয়ে এলাকার মানুষ বানাচ্ছেন ঘর, তেজস্ক্রিয় ঘর! কেউ কিছু বলার জন্য নেই। কোনও বিধিনিষেধ নেই, থাকলেও তা নিতান্ত নাম-কা-ওয়াস্তে একটা বোর্ড লাগানো ছিল।

শ্রীপ্রকাশজির তথ্যচিত্র দেখিয়েছিল, ওখানে কিছু সচেতন মানুষ এ সবের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন, সঙ্ঘবদ্ধ হয়েছিলেন, জোয়ার-এর (ঝাড়খন্ডিস অরগানাইজেশন আগেনস্ট রেডিয়েশন) ব্যানারে। দাবি ছিল, সুরক্ষিত ভাবে, আন্তর্জাতিক মাপকাঠি মেনে খননকার্য করতে হবে, নতুন ভাবে কোনও খনিতে আর কাজ শুরু করা চলবে না, এই খননকার্যের ফলে স্বাস্থ্যের যে ক্ষতি হয়েছে, তার যথাযথ খতিয়ান তৈরি করতে হবে, তার দায় নিতে হবে ও উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দিতে হবে, খনি আর টেলিং পন্ডের কাছাকাছি লোকজনকে যথেষ্ট দূরে পুনর্বাসন দিতে হবে।

কত দূর গেল তাঁদের আন্দোলন? কিছু পরিবর্তন এল? সে সব দেখতে শুনতেই জাদুগোড়া যাওয়া।

হ্যঁা, কিছু পরিবর্তন এসেছে। টেলিং পন্ডের চারিদিকে বেড়া লেগেছে। নিষিদ্ধ এলাকা বলে একখানা বোর্ডও দাঁড়িয়ে আছে। তবে কিনা গেটখানি হাট করে খোলা এবং ভিতরে, হ্যঁা, সেই একই দৃশ্য, একগাদা বাচ্চা খেলা করছে। পাহারা? নেই। দেখা গেল, ডাম্পারে করে টেলিং পন্ডে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, তার উপরে ত্রিপলের ছাউনিও পড়ছে, কিন্তু সেই ছাউনি হাতে করে ঠিকঠাক করে দিচ্ছেন এক জন শ্রমিক। গ্লাভস, বুট বা অন্য কোনও রক্ষাকব? নেই।

২০০৬ থেকে ২০০৮ সালের মধ্যে এখানে ঘটে গেছে পাইপ লিকেজ জনিত অন্তত চারটি দুর্ঘটনা। কোনওটা নিয়েই মিডিয়ায় হইচই হয়নি।

এই ক’বছরে জোয়ার-এর শক্তি ক্রমশ কমেছে। কমেছে প্রতিবাদের তীব্রতা ও সংখ্যা। ইউসিআইএল (ইউরেনিয়াম কর্পোরেশন অব ইন্ডিয়া লিমিটেড) স্থানীয় মানুষজনকে বুঝিয়েছে, এই সব আন্দোলন মানে নিজেদের পায়ে কুড়ুল মারা। বলেছে, আন্দোলন থেকে সরে এলে চাকরি দেওয়া হবে। মানুষ সরে এসেছেন।

শুধু তেজস্ক্রিয়তাজনিত সমস্যাই নয়, এখানে চলতে পারে রাসায়নিক বিষক্রিয়াও, যা অনেক সময় তেজস্ক্রিয়তার থেকেও বড় সমস্যা হতে পারে। এক বার জারিত হলে ইউরেনিয়ামের জলে গুলে যাওয়ার প্রবণতা অনেক অনেক বেড়ে যায়। এই রাসায়নিক মিশ্রিত জল ভূগর্ভের জলে মিশলে ও পানীয় জল হিসেবে ব্যবহার হলে ক্যান্সারের সম্ভাবনা বাড়ে, বেশি মাত্রায় গেলে যকৃতের অসুখ অবধারিত বলছিলেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কর্মরত ভূবিদ্যা-গবেষক অনির্বাণ বসু। জাদুগোড়ার জলে ইউরেনিয়াম, রেডিয়ামের ও ভারী ধাতুর পরিমাণ নিয়ে যা সমীক্ষা হয়েছে, তা অপ্রতুল, আরও পরীক্ষানিরীক্ষা দরকার।

তথ্যচিত্র বা আগের সমীক্ষাতে যাঁদের কথা জানা গিয়েছিল অসুস্থ বলে, এখন তাঁদের প্রায় সবাই মৃত, বলছিলেন জোয়ার-এর ঘনশ্যাম বিরুলি। তাঁর বাবা ইউরেনিয়াম খনির এক শ্রমিক, মাত্র বিয়াল্লিশ বছর বয়সে ফুসফুসের ক্যান্সারে মারা যান। মা-ও মারা যান কয়েক বছরের মধ্যেই, ক্যান্সারে। খনির পোশাকে বাড়ি আসতেন বাবা, বাড়িতেই কাচতেন মা, ঘনশ্যাম বলেন। অনেক মহিলা এখন বন্ধ্যাত্বে ভুগছেন, কিংবা প্রথম সন্তান মৃত বা বিকলাঙ্গ প্রসব করছেন। দয়ামণি বার্লা তাঁর প্রতিবেদনে এ রকম বহু মেয়ের কথা লিখেছেন। গ্রামে গ্রামে আমরাও যা দেখলাম, শুনলাম, তা ওঁদের কথারই প্রতিধ্বনি, বেরিয়ে এল আরও কিছু কথা। দেখা হল রিশি পিঙ্গুয়ার সঙ্গে। অল্পবয়সি এই অস্থায়ী শ্রমিকটির সারা শরীর ফুলে যাচ্ছে, হাতে ব্যথা, ফোলা। আর কাজে যেতে পারেন না। জাদুগোড়া জুড়ে এখন ঠিকাদারদের রমরমা। তার একটা বড় কারণ, ঠিকা শ্রমিকদের অনেক কম মাইনে দিয়ে বেশি কাজ করিয়ে নেওয়া সম্ভব, আর স্থায়ী শ্রমিকদের মতো স্বাস্থ্য ইত্যাদির জন্য কোনও দায় নেওয়ার প্রয়োজন নেই। এঁদের সুরক্ষার পিছনে ব্যয় ও দায় ন্যূনতম বলেই অভিযোগ করলেন ঠিকা শ্রমিকেরা এবং জোয়ার-এর লোকজন। ঠিকা কাজের পর এঁরা কোন মারণ বিকিরণের পরিমাণ দেহে বহন করে নিয়ে গেলেন, বাঁচলেন না মরলেন, সে ঠিকানা কেউই রাখে না।

দেখা গেল, ঘরে ঘরে ‘টিবি’, মানে হাসপাতাল থেকে যাকে টিবি বলেই চিহ্নিত করে, ওষুধও দেয়, সেই টিবিতে ঘরে ঘরে মৃত্যু। অনেকেই তিরিশের নীচে। কোনও কোনও ঘরে প্রায় সবাই চলে গেছেন। টিবি-তেই তো? সন্দেহ প্রকাশ করলেন শ্রমজীবী স্বাস্থ্য উদ্যোগের ডাঃ পুণ্যব্রত গুণ। রোগীদের দেখে বললেন, এই ধরনের লক্ষণ টিবি ছাড়াও ফুসফুসের ক্যান্সার থেকে হতে পারে, হতে পারে পালমোনারি নিউমোকোনিয়োসিস থেকেও, যা খনি শ্রমিকদের হওয়া অস্বাভাবিক নয়। সেই অর্থে সে ভাবে অপুষ্টিতেও ভোগেন না এখানকার মানুষজন, যার ফলে এত বেশি টিবি কেস নিয়ে আরও প্রশ্ন ওঠে। এ ছাড়া নিউমোকোনিয়োসিসও বহু ক্ষেত্রে টিবির সম্ভাবনা বাড়িয়ে দিতে পারে।

এই রোগগুলির যথাযথ চিহ্নিতকরণ এবং সেই অনুসারে যথাযথ চিকিত্‌সার ভীষণ প্রয়োজন। প্রয়োজন আগ্নু মুর্মু ও শ্রীপতি পাত্রদের মতো রোগীদেরও ঠিক ভাবে পরীক্ষা করা, যাঁদের হাত-পা সব অতি অস্বাভাবিক ভাবে শুকিয়ে যাচ্ছে, যাঁরা সাতাশ-আটাশ বছর বয়সেই অথর্ব হয়ে পড়ছেন। কী রোগে ধরেছে এঁদের? প্যারাপ্লেজিয়া, ওয়েস্টিং অব মাসল রেডিয়েশন বা কেমিক্যাল টক্সিসিটি-জনিত স্নায়বিক রোগ নয়তো? রোগীদের দেখে সেই সন্দেহ উড়িয়ে দিতে পারলেন না ডাঃ গুণ। সেই সন্দেহ আরও গাঢ় হয় ওঁদের কথা শুনে। খাটে শুয়ে শুয়ে কাঁদতে কাঁদতে আগ্নু বলছিলেন তাঁর যন্ত্রণার কথা, বলছিলেন ছোটবেলায় তাঁরা কেমন ফুটবল খেলতে যেতেন ওই টেলিং পন্ডের জমির উপরে। ওই জল মুখে-চোখে দিতেন, ওই জলের মাছ ধরে নিয়ে এসে খেতেন। বিকিরণ বলে কোনও কিছুর অস্তিত্ব সম্বন্ধেই জানা ছিল না তাঁদের। একই কথা বলছিলেন মাত্র তিরিশ বছর বয়সে মস্তিষ্কের টিউমারে আক্রান্ত মানুষটিও। চিকিত্‌সা করাতে গিয়ে আজ জমি, জীবিকা, সব হারানো বিপর্যস্ত পরিবারের দেওয়ালে টাঙানো সবল স্বাস্থ্যবান এক তরুণের হাস্যমুখ সস্ত্রীক ছবিটার অস্তিত্ব বড় অস্বস্তিজনক। অস্বস্তিজনক বাবুলালকে হাসিমুখে বসে থাকতে দেখাও। বয়স হয়ে গেলেও যাঁর বুদ্ধি বাড়েনি। শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গও বিকৃত। অস্বস্তি লাগে এ রকম আরও অনেক কিছু দেখতেই।

কিন্তু শুধু অস্বস্তিকর নয়, আমাদের এই দেখাগুলো অসম্পূর্ণও। এই খণ্ড পর্যবেক্ষণগুলি, ওখানকার মানুষের অভিজ্ঞতা-অভিযোগগুলি আরও মনোযোগের দাবি করে।

ইউসিআইএল-এর তরফে জানানো হয়েছে, এই অঞ্চলে কোনও বিকিরণ-জনিত, জলে ইউরেনিয়াম-জনিত বা স্বাস্থ্য সম্পর্কিত সমস্যা নেই, এই অঞ্চলের আকরিক নিম্নমানের, তাই তার থেকে ক্ষতি হবার সম্ভাবনাও নেই। যে সব স্বাস্থ্য সমীক্ষায় সমস্যার কথা উঠে এসেছে, তাকে সরকার মান্যতা দিতে চায় না। যদিও গত বছরে প্রকাশিত সরকারি সংস্থার একটি স্বাস্থ্য সমীক্ষায় এ বিষয়ে আরও গবেষণার প্রয়োজন স্বীকার করা হয়েছে। অন্য দিকে, ইউসিআইএল-এর দাবি মানতে চান না অনেক সমাজকর্মী এবং বিজ্ঞানীই। অন্যান্য বিজ্ঞানীদের পরিমাপ করা বিকিরণের সঙ্গে বার্কের বিজ্ঞানীদের হিসেব মেলে না। জলে ইউরেনিয়ামের পরিমাণ ও ট্রিটমেন্ট প্লান্টে সেটি সরানো সংক্রান্ত সরকারি গবেষণা নিয়েও অনেক প্রশ্ন রয়েছে। আমরা ইউসিআইএল-এর কাছে এই বিষয়গুলি নিয়ে ইমেল মারফত প্রশ্ন করেছিলাম, কোনও উত্তর পাইনি।

পারস্পরিক অবিশ্বাসের এই চাপান-উতোরের মধ্যে সত্যিটা কোথায় অবস্থান করছে? কিছু কিছু রোগ কি এই ইউরেনিয়াম খনি অঞ্চলে অন্যান্য জায়গার থেকে সত্যি বেশি, বা এমন কিছু রোগ কি হচ্ছে, যা অন্যত্র দেখা যায় না? জানতে গেলে প্রয়োজন যথেষ্ট নির্ভরযোগ্য কোনও সমীক্ষক দল তৈরি করে নিরপেক্ষ ভাবে পরীক্ষানিরীক্ষা করা। অথচ তার কোনও উদ্যোগ নেই।

তাঁরা আদিবাসী বলেই কি এই অবহেলা? প্রশ্ন তোলেন জোয়ার-এর দুমকা মুরমু। অত্যন্ত স্বাভাবিক, সঙ্গত প্রশ্ন। শুধু অবহেলাই তো নয়, এ রীতিমতো অন্যায়ও নয় কি? এক দল মানুষের জীবনের, স্বাস্থ্যের মূল্যে ‘উন্নয়ন’ নয় কি? ‘রাষ্ট্রহিত’ করতে গিয়ে তবে কি আমরা ‘জনহিত’কেই ভুলে যাব?

এ প্রশ্ন শুধু জাদুগোড়ার নয়, ‘উন্নয়ন’-এর যূপকাষ্ঠে রাষ্ট্রের আদি বাসিন্দাদের এই বলিদান হয়েছে সর্বত্রই। শুধু ইউরেনিয়াম খননের কথা ধরলেই দেখা যাবে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে অস্ট্রেলিয়া, এই খননের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন সেই আদি জনজাতিরাই, দূষিত হয়েছে তাঁদেরই বসতজমি, জল, হাওয়া।

‘প্রকৃত’ উন্নয়ন, সুস্থায়ী (সাসটেনেব্ল) উন্নয়ন নিয়ে এ হয়তো ক্লিশে হয়ে যাওয়া বিতর্ক, প্রশ্নগুলো করেই চলেন ওঁরা। সরকার আসে, সরকার যায়, উত্তর আসে না।

শুধু কিছু খবর আসে। যেমন এল, এই কিছু দিন আগে। আগ্নু মুরমু মারা গেছেন।

post editorial ipsita pal bhoumik
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy