Advertisement
E-Paper

শিশুশ্রম বন্ধ করা দরকার, কিন্তু কী ভাবে

কৈলাস সত্যার্থীর নোবেলজয় শিশুশ্রমিকদের জন্য কতটা তাৎপর্যপূর্ণ, আর মার্কিন বাণিজ্যিক স্বার্থের জন্য কতটা, সেই প্রশ্ন এড়িয়ে যাওয়ার উপায় নেই।একটি নয়, দু-দু’টি শিশু দিবস ছ’দিনের ব্যবধানে। প্রতি বছরই হয়। ভারতের জাতীয় শিশু দিবসটি পালিত হয়ে গেল ১৪ নভেম্বর, আন্তর্জাতিকটি ২০ নভেম্বর। প্রথমটি পণ্ডিত নেহরুর জন্মদিনকে, তাঁর শিশুপ্রীতিকে স্মরণে রেখে; দ্বিতীয়টি শিশুদের অধিকার নিয়ে রাষ্ট্রপুঞ্জের ঘোষণাপত্র ১৯৫৯ সালের যে দিন গৃহীত হয় তাকে মনে রেখে। তবে প্রতি বছরের থেকে এ বছরটা একটু স্বতন্ত্র তাৎপর্য নিয়ে আসে। কারণ নোবেল শান্তি পুরস্কার।

অচিন চক্রবর্তী ও জয়ন্ত কুমার দ্বিবেদী

শেষ আপডেট: ২৫ নভেম্বর ২০১৪ ০০:০১

একটি নয়, দু-দু’টি শিশু দিবস ছ’দিনের ব্যবধানে। প্রতি বছরই হয়। ভারতের জাতীয় শিশু দিবসটি পালিত হয়ে গেল ১৪ নভেম্বর, আন্তর্জাতিকটি ২০ নভেম্বর। প্রথমটি পণ্ডিত নেহরুর জন্মদিনকে, তাঁর শিশুপ্রীতিকে স্মরণে রেখে; দ্বিতীয়টি শিশুদের অধিকার নিয়ে রাষ্ট্রপুঞ্জের ঘোষণাপত্র ১৯৫৯ সালের যে দিন গৃহীত হয় তাকে মনে রেখে। তবে প্রতি বছরের থেকে এ বছরটা একটু স্বতন্ত্র তাৎপর্য নিয়ে আসে। কারণ নোবেল শান্তি পুরস্কার। কৈলাস সত্যার্থী ও মালালা ইউসুফজাই, পুরস্কার প্রাপক দুজনেরই অবদান শিশুদের অধিকার রক্ষার লড়াইয়ে। সত্যার্থী ও তাঁর সংগঠন ‘বচপন বাঁচাও আন্দোলন’ শিশুশ্রমিকদের নিদারুণ অবস্থা থেকে মুক্ত করে মূলধারায় নিয়ে এসে তাদের অধিকার— শিক্ষার অধিকার— প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ করছেন দীর্ঘকাল। নোবেল কমিটি সত্যার্থীর কাজের স্বীকৃতি দিয়ে শিশুশ্রমিকের বিষয়টিকে অগ্রাধিকার তালিকার উপর দিকে এনে ফেলেছে। কিন্তু নোবেল ঘোষণার পরবর্তী সময়ে শিশুশ্রমের সমস্যাটা যতটা আলোকিত হবে ভেবেছিলাম, বিশেষত শিশুশ্রম ঘিরে যে নীতিভাবনা তার বিতর্কিত দিকগুলি নিয়ে, তা হল না একেবারেই। অথচ এই আলোচনাটা জরুরি ছিল খুব।

শিশুশ্রম বিষয়ক নীতিভাবনার বিতর্কিত দিকটি হল, পণ্য আমদানিকারী দেশগুলি যদি শিশুশ্রমিক ব্যবহারকারী দেশগুলি থেকে আমদানিযোগ্য পণ্যের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে, তা হলে শিশুশ্রম বন্ধ হবে কি না এবং তার ফলে শিশুদের সামগ্রিক কল্যাণ হবে কি না। যে কোনও সচেতন ও শুভবুদ্ধিসম্পন্ন ব্যক্তিই চাইবেন শিশুশ্রম বন্ধ হোক। কৈলাস সত্যার্থীও চেয়েছেন, জোরালো ভাবেই। এই চাওয়া থেকেই তিনি সম্ভবত পণ্য বয়কট ও বাণিজ্যে নিষেধাজ্ঞার মতো নীতিও সমর্থন করেছেন। অথচ বাণিজ্যে নিষেধাজ্ঞার পক্ষের যুক্তি একটু খতিয়ে দেখলেই বোঝা যায়, নিষেধাজ্ঞার ধারণাটি আমদানিকারী দেশগুলির উৎপাদক ও শ্রমিকের স্বার্থরক্ষার প্রয়োজনীয়তা থেকে যতটা উৎসারিত, শিশুশ্রমিকের কল্যাণের তাগিদ থেকে ততটা নয়। কৈলাস সত্যার্থীর বচপন বাঁচাও আন্দোলনের পিছনে যে সমাজ পরিবর্তনের তাগিদ, তাঁর কর্মকাণ্ডে যে উৎসর্জন, তার প্রতি সম্পূর্ণ শ্রদ্ধা রেখেও বলা যায়, পণ্য বয়কট ও বাণিজ্যে নিষেধাজ্ঞায় তাঁর আগাগোড়া সমর্থন বিতর্কের ঊর্ধ্বে নয়।

বিশ্বের বাজারে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার তাগিদে সব দেশেই শ্রমের বাজারের সংস্কারের কথা কমবেশি বলা হতে থাকল গত শতকের আশির দশক থেকেই। চুক্তিশ্রম, অস্থায়ী ও আংশিক সময়ের জন্য নিয়োগ, বাড়ি বসে কাজ— এ সব বাড়তে থাকল, বিশেষত উন্নয়নশীল দেশগুলিতে। এর ফলে উন্নত দেশের শ্রমিকরা প্রমাদ গনল, পুঁজি অন্যত্র চলে যাওয়ার ভয়ে। সে দেশের রাজনীতিকদেরও উদ্বেগ বাড়ল। প্রথম বিশ্বের শ্রমিক আর তৃতীয় বিশ্বের শ্রমিকের স্বার্থ যেন সরাসরি দ্বন্দ্বের জায়গায় চলে এল। এখান থেকেই শংকা দেখা দিল পুঁজির এই ‘নীচের দিকে পাল্লা দিয়ে দৌড়’-এর শেষ কোথায়। অতএব আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই, প্রথম বিশ্ব এ সময়েই আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে নিয়োগের ন্যায়-অন্যায়ের প্রশ্নটা আনতে থাকল।

আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) শ্রম নিয়োগ সম্পর্কে যে-মান নির্দিষ্ট করে দিয়েছে, সেখানে মূলত চারটি মাত্রার কথা বলে হয়েছে: সংগঠিত হওয়ার স্বাধীনতা, যৌথ দর-কষাকষির অধিকার, শিশুশ্রমিকের অনস্তিত্ব ও বৈষম্যহীন নিয়োগ ব্যবস্থা। এগুলি নিশ্চয়ই সব দেশে নীতি হিসেবে গ্রহণ করা উচিত। কিন্তু প্রশ্ন ওঠে এর প্রয়োগকৌশল নিয়ে। শিশুশ্রমিক নিয়োগ বন্ধ করতে গেলে কি তার সঙ্গে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের বিধিনিষেধের প্রশ্নটি জড়িয়ে দেওয়া উচিত? শ্রমনিয়োগের আইএলও নির্ধারিত মান বজায় রাখার লক্ষ্যে নানান প্রয়োগ-কৌশলের কথা বলা হয়েছে। পণ্য বয়কট, নাম প্রকাশ করে জনসমক্ষে লজ্জা দেওয়া, পণ্য লেবেল সেঁটে বলে দেওয়া ‘এটি শিশুশ্রমিকদের দ্বারা প্রস্তুত নয়’, শিশুশ্রমিক বা দাসশ্রমিক ব্যবহারকারী দেশের সঙ্গে বাণিজ্যে নিষেধাজ্ঞা, ইত্যাদি। শ্রমনিয়োগের বিশ্বমান নির্দেশ এক কথা, আর তাকে ক্রমশ আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের শর্ত হিসেবে জড়িয়ে ফেলা আর এক। পশ্চিমি দেশগুলি, বিশেষত আমেরিকা এবং সেখানকার শ্রমিক সংগঠনগুলির সঙ্গে যুক্ত হয়ে অনেক এনজিও একে ডব্লুটিও-র বাণিজ্য বিষয়ে নিয়মবিধির মধ্যে ঢুকিয়ে নেওয়ার পক্ষপাতী।

আইএলও যেমন দেশগুলিকে বাধ্য করতে পারে না, ডব্লুটিও পারে। ধনী দেশগুলি তাদের রক্ষণশীল, কিছুটা একতরফা, বাণিজ্য নীতি সম্পর্কিত ভাবনার সমর্থনে শ্রমনিয়োগের মানকে শর্ত হিসেবে আনতে চাইছে। তৃতীয় বিশ্বের শ্রমিককল্যাণ যে তাঁদের মাথাব্যথা নয়, তা বুঝতে অসুবিধে হয় না। আমেরিকার দীর্ঘ পরম্পরা রয়েছে মুক্তবাণিজ্যের গুণকীর্তন করা। কিন্তু সেটা অন্যদের জন্যে। কিন্তু নীতিনির্ধারণের সময়ে যদি দেখা যায়, নিজেদের স্বার্থ হানি হচ্ছে, তৎক্ষণাৎ মুক্ত বাজার থেকে সরে যেতে দ্বিতীয় বার ভাবে না। বাণিজ্যে নিষেধাজ্ঞার নীতি যে মুক্ত বাণিজ্যের দর্শনের সঙ্গে যায় না, তা নিয়ে মার্কিন রাষ্ট্র কখনওই বিচলিত হয়নি।

প্রশ্নটা হল, বাণিজ্যে নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে চাপ দিয়ে শিশুশ্রম নিয়োগ বন্ধ করার নীতিতে আপত্তিটা কোথায়? আপত্তির কারণটা হল, এর ফলে শিশুদের ভাল যে হবেই তা বলা যাচ্ছে না। অর্থনীতির যুক্তি দিয়েই তা বোঝা যায়, যেমন, বাস্তব অভিজ্ঞতায়ও তা দেখা গিয়েছে। গত শতকে নব্বইয়ের দশকে মার্কিন কংগ্রেসে সেনেটর টম হারকিন আমদানির ওপর নিষেধাজ্ঞার জন্য বিল আনেন, যে-বিল আইনে পরিণত হলে শিশুশ্রম ব্যবহৃত হয়েছে এমন কোনও পণ্যই আমেরিকায় আমদানি হবে না। তখন দেখা গেছে বিল থেকে আইন হয়ে যাবে, এই আশংকায় বাংলাদেশে তৈরি-পোশাক শিল্পে প্রায় ৫০ হাজার শিশুশ্রমিকের কাজ চলে যায়। বিদেশের বাজার হারানোর ভয়ে ওই শিল্পের মালিকরা আর ঝুঁকি নিতে চান না। পরবর্তী কালে গবেষণা থেকে জানা যায়, ওই ৫০ হাজার শিশুর অনেকেই পোশাক শিল্পের থেকে অনেক বেশি বিপজ্জনক কাজে নিয়োজিত হয়েছে, যে-সব ক্ষেত্র থেকে রফতানিযোগ্য পণ্য উৎপন্ন হয় না। অনেকেই পাথরভাঙা কিংবা ভিক্ষাবৃত্তি, এমনকী শিশু-যৌনকর্মী হিসেবেও কাজ করতে বাধ্য হয়েছে। মূল সমস্যাটি হল, ওই শিশুরা যে-সব পরিবার থেকে আসছে, তাদের নিদারুণ দারিদ্র। অনেকে বলে থাকেন, দারিদ্রই মূল সমস্যা নয়, শিশুদের দিয়ে রোজগারের সুযোগ যতক্ষণ থাকবে, পরিবারগুলিও তাদের উপার্জনের দিকে ঠেলে দেবে। এ ধরনের প্রবণতা যে একেবারেই নেই তা নয়, কিন্তু দারিদ্র কমলে শিশুশ্রমের জোগান যে কমে, তার নিদর্শন রয়েছে।

কৈলাস সত্যার্থীর মতো অনেকেই শিশুশ্রমিক বিষয়ে যাকে বলে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির পক্ষপাতী। এই জিরো টলারেন্স থেকেই সম্ভবত পণ্য বয়কট ও আমদানি নিষেধাজ্ঞার পক্ষে সওয়াল করেন। এঁদের যুক্তি, যেহেতু শিশুশ্রম ও প্রাপ্তবয়স্ক শ্রম পরস্পরের বিকল্প, বাজার থেকে শিশুশ্রমের অপসারণ প্রাপ্তবয়স্ক শ্রমের মূল্য বাড়িয়ে দেবে, ফলে দরিদ্র পরিবারগুলির আয় বাড়বে, ফলে শিশুদের কাজে পাঠানোর প্রয়োজনীয়তা কমবে। সুতরাং, যেন তেন প্রকারেণ শিশুশ্রম বন্ধ করে দিলেই আর ফিরে তাকাতে হবে না। কিন্তু যে মূল কার্যকারণ সম্পর্কের অনুমানের ওপর যুক্তিটি দাঁড়িয়ে আছে, তা প্রশ্নাতীত নয়। শিশুশ্রম বন্ধ হলে প্রাপ্তবয়স্ক শ্রমিকের মজুরি যে বাড়বেই, এমন কথা হলফ করে বলা যায় না। তা নির্ভর করবে অর্থনীতিতে শ্রমের মোট জোগানের কত শতাংশ শিশুশ্রম, তার ওপর। তা ছাড়া, শ্রমের চাহিদাও যদি সামগ্রিক ভাবে না বাড়ে, প্রাপ্তবয়স্কের মজুরিও তেমন বাড়বে না।

যুক্তির ফাঁক যেমনই থাক, সত্যার্থীদের মতো মানুষদের পাশে পেয়ে সেনেটর হারকিনের মতো আমদানি-নিষেধাজ্ঞার প্রবক্তারা বল পেয়েছেন। সত্যার্থীকে কাছে টানার কাজটি মার্কিন রাজনীতিকরা সেই নব্বইয়ের দশক থেকেই করে আসছেন। তাই পুরস্কারও তাঁর কাছে নতুন নয়। রবার্ট কেনেডি সেন্টার ফর জাস্টিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস ১৯৯৫ সালেই সত্যার্থীকে মানবাধিকার পুরস্কার দেয়। পুরস্কারটি দেওয়া হয় মূলত সেনেটর হারকিন এবং কংগ্রেসম্যান জোসেফ কেনেডির উদ্যোগে। রবার্ট কেনেডির পুত্র জোসেফ কেনেডি আবার শিশুশ্রমিক বিষয়ে কংগ্রেশনাল হিয়ারিং-এর সভাপতিত্ব করেন। সত্যার্থী ‘গ্লোবাল মার্চ এগেনস্ট চাইল্ড লেবার’ নামক আন্তর্জাতিক প্রচার-সংস্থার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় উঠে আসেন, নেতৃত্ব দেন। এবং সন্দেহ নেই, এই গ্লোবাল মার্চ সেই সব দেশেরই উদ্যোগে সংগঠিত হয়েছে, মূলত আমেরিকার, যারা তাদের অর্থনীতিকে সস্তার আমদানি থেকে বাঁচাতে চায়। সত্যার্থীর নেতৃত্বে তারা চালু করে ‘রাগমার্ক ফাউন্ডেশন’। কার্পেটটি শিশুশ্রম দিয়ে তৈরি হয়নি এই ‘রাগমার্ক’ লেবেল সাঁটার লক্ষ্যে কাজ করে এই ফাউন্ডেশন, এখন যার নাম গুডউইভ ইন্টারন্যাশনাল। এই সমস্ত কর্মকাণ্ডে সত্যার্থী-হারকিন জুটি আমাদের কিছুটা অস্বস্তিতে ফেলে বইকী। ২০০২ সালে মার্কিন সরকার পার্লামেন্টে কৃষি-বিল আনে কৃষিতে ১৮৫ মিলিয়ন ডলার ভর্তুকির লক্ষ্যে। এই ভর্তুকির লক্ষ্য অন্য দেশের কৃষিপণ্যকে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতায় হারিয়ে দিয়ে আমেরিকান উৎপাদকদের জিতিয়ে দেওয়া। সে সময়ে সেনেটর টম হারকিন এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘এটা জার্মান ফার্ম বিল, চিনা ফার্ম বিল কিংবা ফরাসি ফার্ম বিল নয়, এটা আমেরিকান ফার্ম বিল, আমেরিকান কৃষকদের জন্যে; অন্য সব দেশগুলি তাদের কৃষকদের নিয়ে নিজেরাই ভাবুক’। এ হেন হারকিন তৃতীয় বিশ্বের শিশুদের কল্যাণের জন্য আমদানি নিষেধাজ্ঞা থেকে রাগমার্ক নিয়ে লড়াইয়ের মাঠে নেমে পড়েছেন, এমনটা ভাবার কারণ আছে কি?

নীতি হিসেবে আমদানি নিষেধাজ্ঞা যে গ্রহণযোগ্য হতে পারে না, এবং কেন পারে না, তা নিয়েই এতক্ষণ আলোচনা করলাম। তা হলে প্রশ্ন থেকে যায়, দরিদ্র পরিবারগুলির কবে অবস্থার উন্নতি হবে, সেই অপেক্ষায় কি আমরা থেকে যাব অনন্তকাল? দারিদ্র ও তার কারণে শিশুদের কাজে পাঠানোর বাধ্যবাধকতা পরিবারগুলিকে দারিদ্রের ফাঁদে আটকে রাখে। বুনিয়াদি শিক্ষা থেকে বঞ্চিত শিশু বড় হয়ে অদক্ষ শ্রমিকে পরিণত হয়, ফলে তাদের আয়ও কম হয়। এই ভাবে দারিদ্র এক প্রজন্ম থেকে অন্য প্রজন্মে সঞ্চারিত হয়, পরিবারগুলি দারিদ্র-শিশুশ্রম-দারিদ্রের দুষ্টচক্রে ঘুরপাক খেতে থাকে। শিশুশ্রমের কারণ হিসেবে দারিদ্রের তত্ত্ব মেনে নিলেও, উন্নয়নের অপেক্ষায় হাত গুটিয়ে বসে থাকাটা তাই সমস্যার সমাধানকে বিলম্বিত করবে। এ দিক থেকে দেখতে গেলে সত্যার্থীদের ‘বচপন বাঁচাও’ আন্দোলন অতিশয় প্রাসঙ্গিক। সরাসরি হস্তক্ষেপের মাধ্যমে অনেক শিশুকে বিপজ্জনক অবস্থা থেকে উদ্ধার করে তাদের শিক্ষার সুযোগ ও যথাযথ পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা একটি জরুরি কাজ। এই কাজে সত্যার্থীর উৎসর্জনেও কোনও প্রশ্নের অবকাশ নেই। বচপন বাঁচাও আন্দোলনের অন্য ভূমিকাও রয়েছে। সমস্যাটির ভয়াবহতা সম্পর্কে সমাজ এবং সরকারকে সংবেদনশীল করে তোলার ক্ষেত্রেও এই আন্দোলনের গুরুত্ব অপরিসীম। তবে একই সঙ্গে, শিশুশ্রমের সমস্যাটি জটিল, এর সমাধানের লক্ষ্যে কোন নীতি নির্বাচন ও সমর্থন করব, সে বিষয়ে সতর্কতা আবশ্যক।

অচিন চক্রবর্তী ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ, কলকাতা-র (আইডিএসকে) অধিকর্তা, মতামত ব্যক্তিগত। জয়ন্ত কুমার দ্বিবেদী ব্রহ্মানন্দ কেশবচন্দ্র কলেজে অর্থনীতির শিক্ষক

achin chakraborty jayanta kumar dwibedi child labour
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy