Advertisement
E-Paper

শরীর, শরীর

শরীর লইয়া বহু প্রশ্ন, বহুতর তর্ক। কিন্তু শরীর নিজেই যখন নূতন প্রশ্ন তোলে? তেমন একটি প্রশ্ন তুলিতেছে জীববিজ্ঞানীদের সাম্প্রতিক একটি পর্যবেক্ষণ। তাঁহারা দেখিয়াছেন, নাবালিকারা পূর্বের অপেক্ষা দ্রুত সাবালিকা হইতেছে। অন্য জীবের মতো মানুষের দেহও বয়সের সহিত পাল্টায়। শৈশব হইতে যৌবনের দিকে যাত্রা করে। পুরুষ এবং নারীদেহ কালক্রমে প্রজনন ক্ষমতা অর্জন করে। কিন্তু সেই ক্ষমতার্জন বিনা নোটিসে আসে না।

শেষ আপডেট: ০২ অগস্ট ২০১৫ ০০:০৩

শরীর লইয়া বহু প্রশ্ন, বহুতর তর্ক। কিন্তু শরীর নিজেই যখন নূতন প্রশ্ন তোলে? তেমন একটি প্রশ্ন তুলিতেছে জীববিজ্ঞানীদের সাম্প্রতিক একটি পর্যবেক্ষণ। তাঁহারা দেখিয়াছেন, নাবালিকারা পূর্বের অপেক্ষা দ্রুত সাবালিকা হইতেছে। অন্য জীবের মতো মানুষের দেহও বয়সের সহিত পাল্টায়। শৈশব হইতে যৌবনের দিকে যাত্রা করে। পুরুষ এবং নারীদেহ কালক্রমে প্রজনন ক্ষমতা অর্জন করে। কিন্তু সেই ক্ষমতার্জন বিনা নোটিসে আসে না। ক্ষমতাপ্রাপ্তি প্রকট হয় দেহের বিশেষ বিশেষ লক্ষণে, যাহাদের অধিকাংশ অভ্যন্তরীণ হইলেও কিছু আবার বাহ্যিক। বালিকাদের ক্ষেত্রে বয়ঃসন্ধির কাল একাদশ বৎসর হিসাবে চিহ্নিত ছিল। কিন্তু জীববিজ্ঞানীরা গত দুই দশকে বিস্ময়ের সহিত লক্ষ করিতেছেন, বালিকারা বেশি বেশি হারে সপ্তমবর্ষেই সেই পর্বে পৌঁছাইতেছে। এই ধারাটির কথা জনসমক্ষে প্রথম আসে ১৯৯৭ সালে। এক মার্কিন সমীক্ষার সূত্রে জানা যায়, ৫ শতাংশ শ্বেতাঙ্গ এবং ১৫ শতাংশ কৃষ্ণাঙ্গ বালিকারা সাত বৎসরে বয়ঃসন্ধিতে পৌঁছাইতেছে। এই ধারা যে ক্রমবর্ধমান, তাহাতে সন্দেহ নাই। কারণ, ১৯৯০-এর দশকের গোড়ায় দেখা গিয়াছিল, বয়ঃসন্ধিতে কৃষ্ণাঙ্গ বালিকারা পৌঁছায় ৮.৮৭ বৎসরে, শ্বেতাঙ্গ বালিকারা ৯.৯৬ বৎসরে। সর্বশেষ সমীক্ষা অনুযায়ী, সাত বৎসরে বয়ঃসন্ধিতে পৌঁছায় শ্বেতাঙ্গ বালিকাদের ১০ শতাংশ, কৃষ্ণাঙ্গ বালিকাদের ২৩ শতাংশ। বালিকাদের জগতে নতুন ধারা যদি এই প্রকার, তবে বালকদের জগতে তাহা কী রকম? সমীক্ষা জানাইতেছে, বালকদের ক্ষেত্রেও বয়ঃসন্ধির কাল অগ্রসরমাণ, তবে মাত্রাটি অপেক্ষায় কম। বালিকারা যদি পূর্বের তুলনায় চার বৎসর আগে বয়ঃসন্ধিতে পৌঁছায়, তবে বালকেরা ওই পর্বে পৌঁছাইতেছে ৬ মাস হইতে ২ বৎসর আগে।

বয়ঃসন্ধিতে পৌঁছিবার জীব-রাসায়নিক প্রক্রিয়াটি শুরু হয় মস্তিষ্কের নির্দেশে। বালিকাদের ক্ষেত্রে প্রথমে মস্তিষ্ক প্রস্তুত করে গোনাডোট্রপিন-নিঃসরণকারী হরমোন। ইহাতে পিটুইটারি গ্রন্থি সক্রিয় হয় এবং ডিম্বাশয়কে এস্ট্রোজেন প্রস্তুতের নির্দেশ দেয়। স্তনবৃদ্ধির মূলে ওই এস্ট্রোজেন বড় ভূমিকা নেয়। অবশ্য কেবল ডিম্বাশয়েই যে কেবল এস্ট্রোজেন তৈরি হয় তাহা নহে, চর্বিকোষেও ওই হরমোন উৎপাদিত হয়। ইহা যেমন বৈজ্ঞানিক সত্য, তেমনই জীববিজ্ঞানীরা এই ধারাও লক্ষ করিতেছেন যে, বালিকাদের মধ্যে স্থূলত্ব এবং দ্রুততর বয়ঃসন্ধি পরস্পর যুক্ত। সুতরাং, স্থূলত্বের হার বৃদ্ধি ওই সমস্যার একটি উৎস হইতে পারে। আর যে যে কারণগুলি গবেষকেরা লক্ষ করিতেছেন, তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হইল পরিবেশে ক্ষতিকারক রাসায়নিক পদার্থের প্রাদুর্ভাব। একটি লক্ষণ অবশ্য গবেষকদের দৃষ্টি এড়াইতেছে না। তাহা হইল এই যে, যে সমস্ত মাতাগণ কন্যাসন্তানকে স্তনদুগ্ধে পুষ্টি জোগান, সেই সব কন্যা দ্রুততর বয়ঃসন্ধির শিকার হয় না।

কারণ এবং প্রতিক্রিয়া যাহাই হউক না কেন, সমস্যাটি চিন্তার উদ্রেক করে। বয়ঃসন্ধি দ্রুত আসিলে তাহার সঙ্গে সঙ্গে মানসিক চাপও আসে। একটি স্বাভাবিক চাপ হইল যৌন সংসর্গের আকাঙ্ক্ষা। গবেষকেরা দেখিতেছেন, যে সমস্ত বালিকা দ্রুত বয়ঃসন্ধিতে উপনীত হইতেছে, তাহাদের মধ্যে নানারূপ নেশার লোভও বাড়িতেছে। এই সমস্যা কখনও সখনও অবাঞ্ছিত মাতৃত্বের দিকেও বালিকাদের ঠেলিয়া দিতেছে। এ সব তো জৈবিক সমস্যা। ইহার পাশাপাশি থাকিয়া যায় নৈতিক প্রশ্নও। বয়ঃসন্ধি যদি দ্রুত প্রাপ্ত হয়, তাহা হইলে অ্যাডাল্টহুড বা সাবালিকত্বও কি দ্রুত অর্জিত হইবে না? ভোটাধিকার বা নানা বিষয়ে মতদানের অধিকারের ক্ষেত্রে বয়ঃসীমা কি কমাইবার কথা ভাবিবার সময় আসিয়াছে? অন্তত শরীর হইতে উদ্ভূত এই প্রশ্নগুলিকে এড়াইয়া যাইবার আর উপায় নাই।

য ত্ কি ঞ্চি ত্

মহাকাব্যে, পাপ মানুষকে তাড়া করে ফেরে। সে যুগ গিয়েছে, কিন্তু সান ফ্রান্সিসকো এমন একটা রং এ বার অনেক বাড়ির বাইরের দেওয়ালে লাগাচ্ছে, কেউ সে দেওয়ালে প্রস্রাব করলেই, সেটা তারই গায়ে ফিরতি বাউন্স করবে। এ ‘হাইড্রোফোবিক পেন্ট’-এর ব্যবহার তারা শিখেছে হামবুর্গ থেকে। কলকাতা যদি এই কাণ্ড করতে পারে, গুটখার পিকও যদি দেওয়ালে না থেকে প্রেরকের জামাতেই লাফায়, যে দেবতাদের ছবি এই কাজে লাগানো থাকে, তাঁরা চার হাত তুলে আশীর্বাদ করবেন!

MostReadStories
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy