Advertisement
E-Paper

কসবার আইন কলেজে পঠনপাঠন বন্ধে ক্ষুব্ধ শিক্ষামন্ত্রী, কয়েক দফা নির্দেশিকা বিশ্ববিদ্যালয়ের

২৫ জুন কসবার সাউথ ক্যালকাটা ল কলেজের ক্যাম্পাসের ভিতর রক্ষীর ঘরে ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে ওই কলেজেরই দুই ছাত্র এবং এক প্রাক্তনীকে।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ জুলাই ২০২৫ ২১:৫৮
প্রতীকী চিত্র।

প্রতীকী চিত্র।

সাউথ ক্যালকাটা ল কলেজ থেকে জোড়া রিপোর্ট তলব। একদিকে, কলেজে পঠনপাঠন বন্ধ থাকায় ক্ষুব্ধ শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। অন্য দিকে, কলেজে ছাত্র নির্বাচন বন্ধ থাকলেও কী করে ঘটনার দিন ইউনিয়ন রুম খোলা ছিল, তা নিয়ে প্রশ্ন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিম’-এর। রাজ্য এবং বিশ্ববিদ্যালয়— উভয়ের তরফেই চেয়ে পাঠানো হল রিপোর্ট।

মঙ্গলবার কলেজের পরিচালন সমিতির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আপাতত কসবার আইন কলেজের পঠনপাঠন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়। উপাচার্য জানান, পুলিশের সঙ্গে কথা বলে এবং সরকারের অনুমতি পেলেই কলেজে পঠনপাঠন শুরু হবে। আর তাতেই ক্ষুব্ধ রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী। কলেজে ধর্ষণকাণ্ডের সাত দিন অতিক্রান্ত। তা-ও কলেজে এখনও ক্লাস কেন হচ্ছে না? প্রশ্ন তুলে কলেজের পরিচালন সমিতির কাছে রিপোর্ট তলব করলেন ব্রাত্য বসু। তিনি বলেছেন, “আমি খানিকটা বিস্মিত। ক্যাম্পাসে পঠনপাঠন চালু থাকারই কথা। আশা করছি, ছাত্রছাত্রীরা দ্রুত স্বাভাবিক ছন্দে ফিরবে। পরিচালন সমিতির কাছে রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছি।” উল্লেখ্য, কলেজে পরিচালন সমিতির বৈঠকের পর সেখানকার অস্থায়ী কর্মী মূল অভিযুক্ত ‘এম’কে শিক্ষাকর্মীর চাকরি থেকে সরানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, অভিযুক্ত অন্য দুই ছাত্রকেও কলেজ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

অন্য দিকে, বুধবার সকালে আইন কলেজ পরিদর্শন করে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি দল। পাঁচ সদস্যের ‘ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিম’ বুধবার সকাল ১১টা নাগাদ কলেজে পৌঁছোয়। ঘণ্টাখানেক অকুস্থল পরিদর্শন করেন সদস্যেরা। কথা বলেন পুলিশের সঙ্গেও। কলেজের উপাধ্যক্ষ নয়না চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গেও চলে দীর্ঘ বৈঠক।

বৈঠক শেষে সন্ধেবেলা কলেজের জন্য একাধিক পরামর্শ দেওয়া হয়। তার মধ্যে রয়েছে—

১) এই ঘটনার জেরে সাউথ ক্যালকাটা ল কলেজের প্রথম বর্ষের ১০-১২ জন পড়ুয়া পরীক্ষার জন্য রেজিস্ট্রেশন করতে পারেননি। সে ক্ষেত্রে তাঁরা হাজরা ল কলেজ থেকে পরীক্ষার ফর্ম ফিল আপ করতে পারেন কি না, তা বিশ্ববিদ্যালয়কে জানাতে হবে।

২) যে হেতু সামনেই পরীক্ষা। কসবার আইন কলেজকে পরীক্ষাকেন্দ্র করা যায় কি না, সে বিষয়েও পুলিশের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে বিশ্ববিদ্যালয়কে জানাতে হবে।

৩) ২০১৯ সালের পর কলেজে ছাত্র নির্বাচন হয়নি। তা সত্ত্বেও ইউনিয়ন রুম ব্যবহার করা হয়েছে ঘটনার দিন। কেন ইউনিয়ন রুম ব্যবহারের ক্ষেত্রে কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই, জানতে চাওয়া হয়েছে।

৪) ২৫ জুনের আগে কলেজের নিরাপত্তা ব্যবস্থা অর্থাৎ কত ক্ষণ খোলা থাকত, কলেজের সময় শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও কেউ ভিতরে থাকত কি না, কত সিসিটিভি ক্যামেরা ছিল, তা খতিয়ে দেখে জানাতে হবে। পাশাপাশি, ভবিষ্যতের জন্য কী নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে, তাও উল্লেখ করতে হবে।

৫) জিবি বৈঠক কী সিদ্ধান্ত হয়েছে জানাতে হবে।

৬) বিশ্ববিদ্যালয় নিজস্ব প্রবেশিকা পরীক্ষা হয়। তারপরেও বাইরে থেকে অতিরিক্ত পড়ুয়া ভর্তি করানোর যে অভিযোগ এসেছে তা খতিয়ে দেখার জন্য কলেজের রেকর্ড বুক চেয়ে পাঠানো হয়েছে।

উল্লেখ্য, ২৫ জুন কসবার সাউথ ক্যালকাটা ল কলেজের ক্যাম্পাসের ভিতর রক্ষীর ঘরে ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে ওই কলেজেরই দুই ছাত্র এবং এক প্রাক্তনীকে। ওই প্রাক্তনী কলেজের অস্থায়ী কর্মী হিসাবেও নিযুক্ত। অভিযুক্তেরা প্রত্যেকেই তৃণমূলের ছাত্র পরিষদের সঙ্গে যুক্ত। অভিযোগ, ছাত্রীকে বিয়ের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। তা খারিজ করার পরেই তাঁকে ধর্ষণ করা হয়। বয়ানে অসঙ্গতি থাকায় কলেজের নিরাপত্তারক্ষীকেও গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

(ধর্ষণ বা শ্লীলতাহানির ঘটনায় যত ক্ষণ না অভিযুক্তকে আদালতে দোষী সাব্যস্ত করা হচ্ছে, তত ক্ষণ তাঁর নাম-পরিচয় প্রকাশে আইনি বাধা থাকে। সেই কারণে আনন্দবাজার ডট কম কসবার ধর্ষণকাণ্ডে তিন অভিযুক্তের নাম এবং ছবি প্রকাশে বিরত থাকছে)

Kasba Rape Case kasba South Calcutta Law College
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy