আসন্ন শিক্ষাবর্ষ থেকে পরিবর্তন হতে চলেছে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় অধীনস্থ কলেজগুলির মাইনর (পাস) কোর্সের পরীক্ষা ব্যবস্থা। এ বার থেকে আর মাইনর কোর্সে পরীক্ষা দিতে বাইরের কলেজে যেতে হবে না পরীক্ষার্থীদের। তা হবে নিজেদের কলেজেই (হোম সেন্টার)। তবে প্রশ্ন করবে বিশ্ববিদ্যালয়।
২০২৩ সাল থেকে রাজ্যের উচ্চ শিক্ষা ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন হয়েছে। রাজ্য শিক্ষারনীতির পাশাপাশি জাতীয় শিক্ষানীতিকেও মান্যতা দেওয়া হয়েছে। বর্তমান উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থায় চালু হয়েছে কারিকুলাম অ্যান্ড ক্রেডিট ফ্রেম ওয়ার্ক (সিসিএফ)। তার পাশাপাশি চলছে, চয়েস বেসড ক্রেডিট সিস্টেম (সিবিসিএস)। এ ছাড়াও আগে থেকে চলে আসা তিন বছর ডিগ্রি কোর্সের কিছু পড়ুয়া এখনও পরীক্ষা দিচ্ছেন।
আরও পড়ুন:
সিবিসিএস ও সিসিএফ পদ্ধতিতে ক্লাস করানোর সময় খুব কম পাওয়া যায়। এর মধ্যে মাইনর বিষয়ে নিয়ে পরীক্ষা ব্যবস্থা পরিচালনার ক্ষেত্রে কলেজগুলি বহু সমস্যায় পড়ে। বিশেষ করে যে সমস্ত কলেজে প্রাতঃ, দিবা ও সান্ধ্যকালীন ক্লাস হয়, সেখানে পরীক্ষা ব্যবস্থা পরিচালনা করতে গেলে ক্লাস ব্যাহত হয় বলে অভিযোগ। এ ছাড়াও পরীক্ষার খাতা দেখার ক্ষেত্রেও অনেক বেশি সময় লাগে। অনার্সের ফলপ্রকাশের পরও মাইনরের ফল না হওয়ার মতো অভিযোগ ওঠে। ছাত্র-ছাত্রীরা নানা অসুবিধায় পড়ে। এ সমস্যা সমাধানেই উদ্যোগী হয়েছেন কর্তৃপক্ষ।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থায়ী উপাচার্য পদে যোগ দেওয়ার পর পরীক্ষা ব্যবস্থায় দ্রুত ও সুস্থ ভাবে পরিচালনা করার কথা জানিয়েছিলেন আশুতোষ ঘোষ। সেই মতো বুধবার কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় অধীনস্থ ৪০টি কলেজের অধ্যক্ষদের ডেকে বৈঠক করেন তিনি। সেখানেই দ্রুত ফলপ্রকাশের জন্য মাইনর পরীক্ষাগুলিকে ওএমআর শিটে করারও প্রস্তাব উঠেছিল। কিন্তু উপাচার্য ও কয়েকজন অধ্যক্ষ এতে আপত্তি তোলায় তা গ্রহণ করা হয়নি।
আচার্য জগদীশচন্দ্র বোস কলেজের অধ্যক্ষ সমীরণ মণ্ডল বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগ ভাল। প্রশ্ন বিশ্ববিদ্যালয় করবে, পরীক্ষা কলেজেই হবে। এতে সময় বাঁচবে অনেকটা।”
উপাচার্য আশুতোষ ঘোষ বলেন, “পরীক্ষা ব্যবস্থার স্বচ্ছতা বজায় রাখতে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে প্রশ্ন করে কলেজগুলিকে পাঠিয়ে দেব। কলেজগুলি নিজেদের মতো পরীক্ষা নেবে। প্রশ্নপত্রের একাধিক সেট পাঠানো হবে। দ্রুত সিন্ডিকেটের এই প্রস্তাব আনা হবে।”
তবে, পড়ুয়াদের মান নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন কোনও কোনও অধ্যক্ষ। তাঁদের মতে কলেজের হাতে সব ক্ষমতা চলে গেলে পড়াশোনার মানের আপোস হতে পারে। আশুতোষ কলেজের অধ্যক্ষ মানস কবি বলেন, “আমরা চাই পরীক্ষা ব্যবস্থার নিয়ন্ত্রণ থাকুক বিশ্ববিদ্যালয়ের হাতে। তা না হলে পড়য়াদের মান নষ্ট হবে।”