নেট বা গেট-এর মতো পরীক্ষায় উত্তীর্ণেরা কেন্দ্রীয় সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা বা গবেষণার সুযোগ পেয়ে থাকেন। পরবর্তীতে চাকরির ক্ষেত্রেও থাকে তাঁদের অগ্রাধিকার। তবে, এমনই আরও কিছু কিছু সর্বভারতীয় পরীক্ষা রয়েছে, যাতে উত্তীর্ণ হতে পারলে টেকনোলজি, ইঞ্জিনিয়ারিং, কলা শাখার বিষয়ে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর স্তরে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পেতে পারেন। পড়াশোনার পাশাপাশি, ওই সমস্ত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে গবেষণা বা চাকরির সুবিধাও পেতে পারেন।
কমন ল অ্যাডমিশন টেস্ট (ক্ল্যাট)
কনসোর্টিয়াম অফ ন্যাশনাল ল ইউনিভার্সিটিস-এর তরফে আয়োজিত সর্বভারতীয় পরীক্ষাটি নেওয়া হয়। পরীক্ষায় উত্তীর্ণেরা স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর স্তরে আইনের বিভিন্ন বিষয়ে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পান।
কমন ম্যানেজমেন্ট অ্যাডমিশন টেস্ট (সিম্যাট)
ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সির তরফে উল্লিখিত পরীক্ষাটি আয়োজন করা হয়ে থাকে। ম্যানেজমেন্ট নিয়ে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করতে আগ্রহীদের সিম্যাট দিতে হয়। পড়াশোনার পাশাপাশি, বিভিন্ন সরকারি এবং বেসরকারি সংস্থাগুলিতে চাকরির ক্ষেত্রেও পরীক্ষায় উত্তীর্ণরা অগ্রাধিকার পাবেন।
সাধারণত অনলাইনে কিংবা কম্পিউটার বেসড টেস্ট (সিবিটি) পদ্ধতিতে পরীক্ষা হয়ে থাকে। প্রতীকী চিত্র।
আইআইএসইআর অ্যাপটিটিউড টেস্ট (আইএটি)
ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ (আইআইএসইআর)-এর তরফে প্রতি বছর বিজ্ঞান শাখার বিভিন্ন বিষয়ে স্নাতক স্তরে ভর্তি হওয়ার জন্য একটি প্রবেশিকার ব্যবস্থা করা হয়। সর্বভারতীয় স্তরে ওই পরীক্ষায় বসার সুযোগ পান দ্বাদশে বিজ্ঞান বিভাগে উত্তীর্ণেরা।
পরীক্ষায় উত্তীর্ণেরা কেমন সুযোগ পাবেন?
সংশ্লিষ্ট পরীক্ষায় উত্তীর্ণেরা স্নাতক স্তরে ভর্তি হওয়ার পাশাপাশি, পরবর্তীতে ইন্টিগ্রেটেড বিএস এমএস ডিগ্রি কোর্স বা আইআইটি মাদ্রাজ, আইআইএসসি বেঙ্গালুরুর মতো প্রতিষ্ঠানের বিশেষ কোর্সে ভর্তি হতে পারেন।
ন্যাশনাল এন্ট্রান্স স্ক্রিনিং টেস্ট (নেস্ট)
এই পরীক্ষাটি ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ, মুম্বই বিশ্ববিদ্যালয়, ডিপার্টমেন্ট অফ অ্যাটমিক এনার্জি সেন্টার ফর এক্সিলেন্স ইন বেসিক সায়েন্সেস-এর উদ্যোগে আয়োজিত হয়ে থাকে। পদার্থবিদ্যা, রসায়ন, জীববিদ্যা, গণিতের মতো বিষয়ে দ্বাদশ উত্তীর্ণরা এই পরীক্ষাটি দিতে পারবেন।
উত্তীর্ণদের জন্য কী কী সুযোগ থাকছে?
উত্তীর্ণেরা আইআইএসসি, আইআইটি তো বটেই আন্তর্জাতিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও পড়াশোনার সুযোগ পাবেন। একই সঙ্গে তাঁরা ডিপার্টমেন্ট অফ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি-র তরফে স্কলারশিপ পাবেন। এ ছা়ড়াও বিভিন্ন গবেষণাগারে গবেষণার সুযোগও থাকে।
কমন অ্যাডমিশন টেস্ট (ক্যাট)
ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ ম্যানেজমেন্টের তরফে ক্যাট-এর ব্যবস্থা করা হয়। বিজ়নেস ম্যানেজমেন্ট, ম্যানেজমেন্ট বিষয়ে স্নাতকোত্তর স্তরে ভর্তি হওয়ার জন্য এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া প্রয়োজন।
উচ্চশিক্ষা ছাড়া আর কোথায় কেমন সুযোগ?
এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণরা পরবর্তীতে বিভিন্ন সরকারি এবং বেসরকারি সংস্থার ম্যানেজমেন্ট, কনসাল্টিং, ফিনান্স বিভাগে কাজের সুযোগ পেয়ে থাকেন।
দ্বাদশ উত্তীর্ণদের পাশাপাশি, স্নাতকরাও বেশ কিছু সর্বভারতীয় স্তরের প্রবেশিকায় বসার সুযোগ পেয়ে থাকেন। প্রতীকী চিত্র।
ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ এগ্রিকালচারাল রিসার্চ-অল ইন্ডিয়া এন্ট্রান্স এগজ়ামিনেশন ফর অ্যাডমিশন (আইসিএআর-এইআইইইএ)
ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ এগ্রিকালচারাল রিসার্চ (আইসিএআর)-এর তরফে একটি সর্বভারতীয় স্তরের প্রবেশিকা নেওয়া হয়ে থাকে। ওই পরীক্ষাটি বিজ্ঞান বিভাগে দ্বাদশ উত্তীর্ণরা দিতে পারেন।
কেমন সুযোগ?
পরীক্ষায় উত্তীর্ণরা আইসিএআর স্বীকৃত যে কোনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে উচ্চ শিক্ষার সুযোগ পেয়ে থাকেন। এ ছাড়াও ন্যাশনাল ট্যালেন্ট স্কলারশিপ পাওয়ার যোগ্যতাও অর্জন করেন সংশ্লিষ্ট প্রবেশিকায় উত্তীর্ণেরা।
কমন ইউনিভার্সিটি এন্ট্রান্স টেস্ট (কুয়েট)
কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে ভর্তি হতে আগ্রহীরা কুয়েট দেওয়ার সুযোগ পাবেন। এর জন্য তাঁদের যে কোনও বিষয়ে দ্বাদশ উত্তীর্ণ হওয়া প্রয়োজন।
কোথায় কেমন সুযোগ?
কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর স্তরে ভর্তি হওয়ার পাশাপাশি, পরীক্ষায় উত্তীর্ণরা বিভিন্ন ক্ষেত্রে গবেষণার সুযোগ পেয়ে থাকেন।
ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মে়ডিক্যাল রিসার্চ জুনিয়র রিসার্চ ফেলো (আইসিএমআর - জেআরএফ)
জেআরএফ যোগ্যতা অর্জনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) ছাড়াও আইসিএমআর-এর তরফে একটি বিশেষ পরীক্ষা নেওয়া হয়ে থাকে। ওই পরীক্ষাটি বিজ্ঞান শাখার কোনও বিষয় কিংবা প্রফেশনাল কোর্সে স্নাতকোত্তর যোগ্যতাসম্পন্নেরা দিতে পারেন।
উত্তীর্ণরা কী পাবেন?
উত্তীর্ণদের প্রতি মাসে ফেলোশিপের জন্য ৩১ হাজার থেকে ৩৫ হাজার টাকা দেওয়া হয়ে থাকে। এ ছাড়াও আইসিএমআর-সহ বিভিন্ন সরকারি সংস্থার অধীনে গবেষণা বা পিএইচডি করার সুযোগ পাবেন।