জলবায়ু পরিবর্তনের হাত ধরেই বদলাচ্ছে ভূবিদ্যার চর্চা। সুস্থায়ী জীবনযাত্রা বিষয়ে স্কুল স্তর থেকেই চলছে সচেতনতামূলক পাঠগ্রহণ। আগ্রহ বৃদ্ধি পেয়েছে কৃষিবিদ্যা নিয়ে উচ্চশিক্ষায়। তাই যাঁরা কৃষিবিদ্যার মতো বিষয় নিয়ে কেরিয়ার গড়তে চাইছেন, তাঁদের কাছে একাধিক বিষয় নিয়ে পড়ার সুযোগ রয়েছে। এর মধ্যে একটি হল অ্যাগ্রোইকোলজি।
বিষয়টি কী?
ইকোলজি অর্থাৎ বাস্তুবিদ্যার সঙ্গে কৃষিবিদ্যার সংযোজনে তৈরি হয়েছে অ্যাগ্রোইকোলজি। ওই বিষয়টি শুধুমাত্র আধুনিক পদ্ধতিতে কৃষিকাজের জন্যই নয়, উচ্চশিক্ষা এবং গবেষণা ক্ষেত্রেও গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠেছে। কৃষিকাজের সঙ্গে জড়িত প্রাণী, শস্য, মাটি, আবহাওয়া, জনবসতি— সব কিছুর উপস্থিতি এবং চাহিদা অনুযায়ী সঠিক ব্যবস্থাপনার পথ দেখায় এই বিষয়টি। একই সঙ্গে পরিবেশের সঙ্গে ভারসাম্য বজায় রেখে কী ভাবে কৃষিকাজ করা সম্ভব, কোন বিকল্প পথে সুস্থায়ী পরিবেশ গড়ে তোলা যেতে পারে— অ্যাগ্রোইকোলজি-তে সে বিষয়ে চর্চার সুযোগ রয়েছে।
কী কী শেখার সুযোগ রয়েছে?
পরিবেশ অনুযায়ী চাষাবাদের পদ্ধতি, বাস্তুতন্ত্রের বৈচিত্র্য এবং কৃষিকাজে তার ভূমিকা, জল সংরক্ষণ এবং ব্যবস্থাপনা, কৃষিকাজে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব, সুস্থায়ী খাদ্যাভাস, প্রাচীন যুগের কৃষিকাজের পদ্ধতি নিয়ে আলোচনার মতো বিষয়গুলি শেখার সুযোগ রয়েছে। পাশাপাশি, আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতির বিচারে চাষাবাদের তারতম্যের বিষয়গুলিও শেখানো হয়ে থাকে।
কোথায় পড়ানো হয়?
দেশের কোনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই এই বিষয়টি ডিগ্রি কোর্স হিসাবে পড়ানো হয় না। তবে, স্নাতক কিংবা স্নাতকোত্তর স্তরে স্পেশ্যাল পেপার হিসাবে পড়তে পারবেন পড়ুয়ারা।
ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ফর এগ্রিকালচার রিসার্চ (আইসিএআর)-এর অধীনস্থ প্রতিষ্ঠানগুলিতে উল্লিখিত বিষয় নিয়ে উচ্চশিক্ষার সুযোগ রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখ্য ইন্ডিয়ান এগ্রিকালচারাল রিসার্চ ইনস্টিটিউট, যেখানে বিষয়টি নিয়ে গবেষণার সুযোগ রয়েছে।
এ ছাড়াও বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, কেরালা এগ্রিকালচার ইনস্টিটিউশন, বেঙ্গালুরুর ইউনিভার্সিটি অফ এগ্রিকালচারাল সায়েন্সেস, তামিলনাড়ু এগ্রিকালচারাল ইউনিভার্সিটি-তে উল্লিখিত বিষয়টি স্পেশ্যাল পেপার হিসাবে পড়ানো হয়ে থাকে।
পেশা প্রবেশের সুযোগ কেমন?
অ্যাগ্রোইকোলজিস্ট, এগ্রিকালচার এক্সটেনশন অফিসার, ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড সাস্টেনেবিলিটি কনসালট্যান্ট পদে বহুজাতিক সংস্থায় কাজের সুযোগ রয়েছে।
এ ছাড়াও এ দেশের সরকারি বিভাগে এগ্রিকালচার অফিসার, সয়েল কনজ়ারভেশন অফিসার, এনভায়রনমেন্টাল অফিসার পদেও চাকরি করতে পারবেন। কিছু ক্ষেত্রে ইউপিএসসি বা পাবলিক সার্ভিস কমিশন-এর অধীনে পরীক্ষা দিয়ে নিয়োগের সুযোগ মেলে।
এ ছাড়াও কৃষি নির্ভর স্টার্টআপও জনপ্রিয়তা পেয়েছে। ডিগ্রি অর্জনের পর সেই কাজও শুরু করতে পারবেন আগ্রহীরা।