পরিযায়ী শ্রমিক! কথাটার সঙ্গে পরিচিতি বেড়েছে অতিমারির সময়ে। নিজের ভিটে ছেড়ে ভিনরাজ্যে বা অন্য দেশে সংসার, দিন আনা-দিন খাওয়ার জীবন পরিযায়ী শ্রমিকদের। এ বার তাঁদের নিয়েই বিশেষ ভাবে উদ্যোগী হল রাজ্য উচ্চশিক্ষা দফতর। ডিরেক্টরেট অফ স্টেট আর্কাইভস-এর তত্ত্বাবধানে পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে আয়োজিত হচ্ছে এক বিশেষ প্রর্দশনী। যার নাম ‘ইনডেচার্ড মাইগ্রেন্টস’ বা দেশান্তরিত শ্রমিক।
চলতি মাসের ১৮ থেকে ২৪ তারিখ পর্যন্ত সাত দিন প্রর্দশনী চলবে। ১৮৩৪ থেকে ১৯২২ সাল সময়কালে দেশ ও দেশের বাইরে বিভিন্ন সময়ে যে পরিযায়ী শ্রমিকদের যাতায়াত হয়েছে, তা তুলে ধরা হচ্ছে প্রর্দশনীর মধ্যে দিয়ে।
আর্কাইভের ডিরেক্টর শ্রীমন্তি সেন বলেন, ‘‘জাতীয়তাবাদী সংগ্রামের পাঠ্যপুস্তকগুলিতে চুক্তিবদ্ধ অভিবাসনের থিম নিয়ে খুব কমই আলোচনা করা হয়েছে। সুমিত সরকারের ‘মডার্ন ইন্ডিয়া’ বইটিতে ১৮৮০-এর দশকে অসমের চা বাগানে চুক্তিবদ্ধ শ্রমিকদের দাবি আদায়ের জন্য ভারতীয় সমিতি এবং দক্ষিণ আফ্রিকায় চুক্তিবদ্ধ শ্রমিকদের নিয়ে মহাত্মা গান্ধীর আন্দোলনের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। তবে, কলকাতা বন্দর শ্রমিকদের অভিবাসনের অন্যতম প্রধান বন্দর হওয়ায় পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সংরক্ষণাগার সম্পর্কিত সম্পদে উল্লেখযোগ্য ভাবে সমৃদ্ধ। আশা করি এই প্রদর্শনী আমাদের বর্ণনায় এই শূন্যস্থান পূরণে কিছুটা সাহায্য করবে।’’
আরও পড়ুন:
আর্কিভিস্ট সুমিত ঘোষ প্রর্দশনীর শুরুর দিনে পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে কিছু কথা তুলে ধরেন। ১৮৬২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের এক নথি থেকে এক শিশু শ্রমিকের অপহরণ সম্পর্কে জানা যায় তাঁর কথায়। অপহরণের বিষয়টি নিয়ে মরিশাসের ইমিগ্রেশন এজেন্ট ‘মিস্টার ক্যারিড’ সুপ্রিম কোর্টে বিচার চলাকালীন সবিস্তার ব্যাখ্যা দেন। ঘটনাটি ঘটে বাহাদুর নামক এক বালককে নিয়ে। যার কলকাতার নীলমণি গলিতে তার মায়ের সঙ্গে বসবাস ছিল। এ রকম আরও অনেক শ্রমিকের কথা তুলে ধরা হয়েছে প্রর্দশনীতে।
ডায়মন্ড হারবার মহিলা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক অনিন্দিতা ঘোষাল প্রদর্শনীর সূচনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন। পরিযায়ী শ্রমিকদের মরিশাসে চালান, গায়ানা এবং ফিজিতে বসতি স্থাপন, বিভিন্ন দেশে অবতরণের পরে এবং চুক্তিবদ্ধ শ্রম ব্যবস্থার সমাপ্তি সম্পর্কিত বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা করেন তিনি।