বাঙালির রোজের খাবারে বিপদ! যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় স্কুল অফ এনভায়রনমেন্টাল স্টাডিজ়-এর গবেষণায় উঠে এল বিপদের সঙ্কেত। ধান, গম-সহ বিভিন্ন ফসলে মিশছে ‘ক্যাডমিয়াম’ জাতীয় ধাতু। যা শরীরে প্রবেশ করলে কিডনি বিকল, হারের দুর্বলতার মতো বহু দুরারোগ্য ব্যাধি হতে পারে।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ গবেষক ২০২৩ সালে বাংলার নানা চাষের জমির গবেষণা শুরু করেন এবং সেখানেই তাঁরা দেখতে পান ক্যালশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, পটাশিয়ামের মতো ধাতুও রয়েছে। পাশাপাশি রয়েছে ‘ক্যাডমিয়াম’ জাতীয় ধাতু।
‘ক্যাডমিয়াম’ মূলত একটি ভারী ধাতু। যা অনেক সময়ই ভুল প্রক্রিয়ায় ফসল চাষ হলে মাটির মধ্যে জমা হতে পারে। এবং এই বিষাক্ত উপাদান গাছের মাধ্যমে সম্পূর্ণ ফসলে ছড়িয়ে পড়ে এবং পরবর্তীতে ফসলের কোনও অংশ মানুষের শরীরে গেলে তা অত্যন্ত বিপজ্জনক হয়।
আরও পড়ুন:
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অফ এনভায়রনমেন্টাল স্টাডিজ়-এর বিভাগীয় প্রধান তড়িৎ রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘কৃষিজমিতে ক্যাডমিয়ামের উপস্থিতি একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবেশগত সমস্যা। কারণ এটি মাটি দূষিত করে এবং চাল ও গমের মতো শস্যের মধ্যে জমা হয়। যা খাদ্য নিরাপত্তা এবং জনস্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকির।’’
কিন্তু এই পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণের উপায়ও বাতলেছেন ওই গবেষকেরা। তাঁদের কথায়, এই ক্যাডমিয়াম-এর বিষক্রিয়া কমানো যাবে টেকসই পুষ্টি চর্চা, মাটি সংশোধন, উপযুক্ত জল এবং জীবজগতের সহায়তাযুক্ত বায়োঅ্যাজমেন্টেশন ব্যবহার করে। সম্প্রতি গাছের হরমোনের পরীক্ষা করতে গিয়ে ক্যাডমিয়াম-এর প্রভাব বিস্তার গবেষকদের নজর কেড়েছে। বাইরে থেকে বিভিন্ন জৈব পদার্থ প্রয়োগের মাধ্যমে এর বৃদ্ধিকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। না হলে ধান, গম-সহ বিভিন্ন চাষযোগ্য জমির জিনের পরিবর্তন দেখা যাবে। পাশাপাশি, বিষও ছড়িয়ে পড়বে মানবদেহে। গবেষক অর্চিতা দে বলেন, ‘‘শুধু ধান বা গমই নয়, বিভিন্ন গাছের মধ্যেই এই রোগ ছড়িয়ে পড়তে পারে। ইতিমধ্যেই উত্তর ২৪ পরগনায় ধানের জমিতে এই ধরনের ধাতব বস্তুর সন্ধান পাওয়া গিয়েছে বিভিন্ন গবেষণায়’’।