প্রায় আড়াই বছর পর স্থায়ী উপাচার্য পেল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। সুপ্রিম কোর্টের হস্তক্ষেপে অক্টোবরেই নির্ধারিত হয়েছিল রাজ্যের ছ'টি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যের নাম। গত সপ্তাহে কাজে যোগ দিয়েছেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন উপাচার্য আশুতোষ ঘোষ। সোমবার, সপ্তাহের প্রথম কাজের দিনে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্ব নিলেন চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য।
সোমবার সকাল সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছোন তিনি। উপাচার্যের ঘরে তাঁকে স্বাগত জানান অধ্যাপক ও অন্য পদাধিকারীরা। পরে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের পঠনপাঠনের মানোন্নয়নের জন্য শিক্ষক নিয়োগের বিষয়টি আগে দেখা দরকার। সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে ডিসেম্বরে সমাবর্তন করা যায় কি না, দেখছি। স্ট্যাটিউট নিয়েও সকলের সঙ্গে কথা বলব।”
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের দু’টি ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত ৭০টি নজরদারি ক্যামেরা বসানোর জন্য তহবিল মঞ্জুর হয়েছে গত মাসেই। নবনিযুক্ত উপচার্য সেই বিষয়টির পাশাপাশি নিরাপত্তারক্ষী ও ক্যাম্পাসের অন্য নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয় খতিয়ে দেখার আশ্বাসও দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের মে মাসে অবসর নিয়েছিলেন যাদবপুরের শেষ স্থায়ী উপাচার্য সুরঞ্জন দাস। তার পর থেকে খানিক টালমাটাল পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছিল দেশের অন্যতম সেরা এই বিশ্ববিদ্যালয়। সুরঞ্জন দাসের পর অস্থায়ী উপাচার্যদের হাতে ন্যস্ত হয়েছিল দায়িত্ব। কিন্তু চলতি বছর মার্চে অস্থায়ী উপাচার্য পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় ভাস্কর গুপ্তকে। তার পর থেকে যাদবপুর ছিল কার্যত অভিভাবকহীন। ফলে প্রশাসনিক কাজে নানা সমস্যা হচ্ছিল বলে অভিযোগ। শিক্ষক ও পড়ুয়াদের তরফে বহু বার দাবি উঠেছে স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগের। অবশেষে কাজে যোগ দিলেন উপাচার্য।
গত শনিবারই সেমেস্টার পদ্ধতিতে আয়োজিত উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রথম পর্বের ফলঘোষণা করেছেন চিরঞ্জীব। এত দিন তিনি ছিলেন উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি। জানা গিয়েছে, আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত সেই দায়িত্ব সামলাতে হবে তাঁকে। অর্থাৎ, আপাতত দু'টি পদেই থাকতে হচ্ছে। তার পর স্থির হবে সংসদের ভবিষ্যত।
চিরঞ্জীব এর আগে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ডিন পদে কাজ করেছেন। পরবর্তী কালে সামলেছেন রেজিস্ট্রার এবং সহ-উপাচার্যের দায়িত্বও। উপাচার্য কাজে যোগ দিলেও এখনও ফাঁকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক পদই। ডিন অফ স্টুডেন্টস, রেজিস্ট্রার, ফিন্যান্স অফিসার, গ্রন্থাগারিকের পদ খালি। সহ-উপাচার্য পদেও এখনও কাউকে নিয়োগ করা যায়নি। ফাঁকা রয়েছে প্রায় ৩৫ শতাংশ শিক্ষক এবং ৫০ শতাংশ অশিক্ষক কর্মীর পদ।