সংগৃহীত চিত্র।
কেন্দ্রীয় ভাবে ভর্তি প্রক্রিয়ায় দেরি হচ্ছে অনেকটাই। ফলে পড়ুয়াদের পাঠ্যক্রম শেষ করা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। দ্বিতীয় রাউন্ডে ভর্তি হওয়া ছাত্র-ছাত্রীদের পাঠ্যক্রম শেষ নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন কলেজের অধ্যক্ষ থেকে শিক্ষকরা সকলেই।
কেন্দ্রীয় ভাবে ভর্তি প্রক্রিয়ায় প্রথম এবং দ্বিতীয় রাউন্ড মিলিয়ে ভর্তি হয়েছেন মোট ৪ লক্ষ ৪৪ হাজার ৭৬ জন। যার মধ্যে প্রথম দফায় ভর্তি হয়েছিলেন ৩ লক্ষ ৮৭ হাজার ৪৬৪ জন। তাঁদের ক্লাস শুরু হয়ে গিয়েছে ৮ অগস্ট থেকে। ফলে তাঁরা পড়াশোনার দিক থেকে অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছেন। এমত অবস্থায় দ্বিতীয় রাউন্ডে ৫৬ হাজার ৬১২ জন পড়ুয়া স্নাতক স্তরে ভর্তি হয়েছেন, যাঁদের ক্লাস শুরু হবে চলতি মাসে তৃতীয় সপ্তাহ থেকে। ক্লাস শুরু হলেও তাঁরা প্রথম রাউন্ডের পড়ুয়াদের দিক থেকে বেশ কিছুটা পিছিয়ে থাকবেন বলেই মনে করছেন কলেজের অধ্যক্ষরা।
সুরেন্দ্রনাথ কলেজের অধ্যক্ষ ইন্দ্রনীল কর বলেন, “দ্বিতীয় রাউন্ডের পড়ুয়াদের থেকেও বেশি অসুবিধায় পড়বে, যারা তৃতীয় রাউন্ডে কলেজভিত্তিক অনলাইন পোর্টালের মাধ্যমে ভর্তি হবে। তাদের ক্লাস শুরু হতে অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহ হয়ে যাবে। তারা প্রথম রাউন্ডের পড়ুয়াদের থেকে প্রায় দু’মাস পিছিয়ে পড়বে। সময় কম পাবে পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য। পাশাপাশি পাঠ্যক্রমও শেষ হবে না।”
ইতিমধ্যে দু’দফায় ভর্তি প্রক্রিয়া কেন্দ্রীয় ভাবে হওয়ার পর কলেজগুলি পুরনো পদ্ধতিতে অনলাইন পোর্টালের মাধ্যমে আবেদন গ্রহণ শুরু করেছে, যা চলবে ১৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। উচ্চশিক্ষা দফতর জানিয়েছে, পুরো প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করতে হবে ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে।
আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু কলেজের অধ্যক্ষ পূর্ণচন্দ্র মাইতি বলেন, “দ্বিতীয় রাউন্ডের সময়ে যদি বিকেন্দ্রীকরণের মাধ্যমে ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন হত, তা হলে এই সময় নষ্ট হত না। উচ্চশিক্ষায় যে সময় ধার্য করা রয়েছে, সেই অনুযায়ী পড়াশোনা করতে পারত পড়ুয়ারা। কিন্তু এখানে একদল পড়ুয়া এগিয়ে যাবে পড়াশোনার দিক থেকে, আর এক দল পিছিয়ে থাকবে। যা শিক্ষা ব্যবস্থার ক্ষেত্রে মোটেই সুখকর নয়।”
অক্টোবর থেকে ক্লাস শুরু হলেও প্রথম সপ্তাহ শেষে লম্বা পুজোর ছুটি পড়ে যাচ্ছে কলেজগুলিতে। নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে ক্লাস হলেও ডিসেম্বরের আবার ছুটি রয়েছে। জানুয়ারিতে প্রথম সিমেস্টারের পরীক্ষা। তার প্রস্তুতির জন্য শেষে ভর্তি হওয়া পড়ুয়ারা সময় পাবে মাত্র এক মাস।
মহারাজা মণীন্দ্রচন্দ্র কলেজের বিভাগীয় প্রধান বিশ্বজিৎ দাস বলেন, “ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে সমতা বজায় রাখতে গেলে, কলেজ কর্তৃপক্ষকে দায়িত্ব নিয়ে টিউটোরিয়াল ক্লাস করাতে হবে। এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকেও এই ক্লাস নেওয়া বাধ্যতামূলক করার কথা জানাতে হবে। তা না হলে শেষ পর্যায়ে ভর্তি হওয়া ছাত্র-ছাত্রীরা উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে অনেকটাই পিছিয়ে পড়বে।”
আবার অধ্যক্ষ বা শিক্ষকদের একাংশের দাবি, পুজোর ছুটিতে অতিরিক্ত ক্লাস করানো হোক পরের দিকে ভর্তি হওয়া পড়ুয়াদের। পাশাপাশি প্রথম সিমেস্টারের পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়ার দাবি তুলছেন অনেকেই। আশুতোষ কলেজের অধ্যক্ষ মানস কবি বলেন, “এই মুহূর্তে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তাতে প্রথম সিমেস্টারের পরীক্ষা বিশ্ববিদ্যালয়গুলির খানিকটা পিছিয়ে দেওয়া উচিত। পাশাপাশি, কলেজগুলিতে লম্বা পুজোর ছুটি রয়েছে। সে সময়ে অনলাইনে শিক্ষকরা যদি এই সমস্ত পড়ুয়াদের ক্লাস নেন, তবে কিছুটা হলেও পাঠ্যক্রম শেষ করা সম্ভব হবে। তা না হলে স্বল্প মেধার পড়ুয়ারা অনেকটাই পিছিয়ে পড়বে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy