Advertisement
E-Paper

ইচ্ছে থাকলে পড়া যাবে পছন্দের বিষয় নিয়ে, পাড়ি দেওয়া যাবে বিদেশেও! ঋণ দেবে রাজ্য সরকার

এই কার্ডের সাহায্যে পড়ুয়ারা ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ পেতে পারেন পড়াশোনার জন্য। এক সঙ্গে না নিতে চাইলে ধাপে ধাপেও ঋণ পাওয়া যাবে ১০ লক্ষ টাকার।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ জুন ২০২৫ ২১:৩৩
উচ্চ শিক্ষার জন্য ঋণ পাওয়া যেতে পারে ‘স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড’-এর সাহায্যে।

উচ্চ শিক্ষার জন্য ঋণ পাওয়া যেতে পারে ‘স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড’-এর সাহায্যে। ছবি: সংগৃহীত।

৭ মে প্রকাশিত হয়েছে উচ্চ মাধ্যমিকের ফল। রাজ্যের সরকারি স্কুলগুলিতে শুরু হয়েছে স্নাতকস্তরে ভর্তির প্রক্রিয়া। অনেক পড়ুয়ার ক্ষেত্রেই যায়, পছন্দের বিষয় নিয়ে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায় পরিবারের আর্থিক পরিস্থিতি। অনেক প়ড়ুয়াই পিছিয়ে আসেন খরচসাপেক্ষ বিষয়গুলি নিয়ে পড়ার সিদ্ধান্ত থেকে। শুধু স্নাতক নয়। পিএইচডি, স্নাতকোত্তর স্তরেও এই সমস্যার সম্মুখীন হন অনেকে।

এই সমস্যা সমাধানে, রাজ্যের মেধাবীদের সাহায্যার্থে রাজ্য সরকারের তরফে ২০২১ সাল থেকে ‘স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড’ প্রকল্প চালু করা হয়েছে। এর মাধ্যমে উচ্চ শিক্ষায় প্রয়োজনীয় অর্থ সাহায্য করে রাজ্য সরকার। তবে, এই ব্যবস্থা চালু হলেও তার আবেদনের সঠিক পদ্ধতি, কত টাকা ঋণ পাওয়া যেতে পারে, ঋণ পাওয়ার পর কত দিনে সেই টাকা মেটাতে হবে— সে সব নিয়ে নানা বিভ্রান্তির মধ্যে থাকেন পড়ুয়ারা। এই প্রতিবেদনে সেই সব কিছুর বিস্তারিত দেওয়া হল।

‘স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড’ কী

২০২১-এ পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের তরফ থেকে চালু করা হয়েছে ‘স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড’ প্রকল্প। এই কার্ডের সাহায্যে পড়ুয়ারা ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ পেতে পারেন উচ্চ শিক্ষার জন্য। সে ক্ষেত্রে ব্যাঙ্ক থেকে সেমেস্টার ভিত্তিতে অথবা শিক্ষাবর্ষর ভিত্তিতে টাকা পাওয়া যায়।

কোন কোন ক্ষেত্রে মিলবে ঋণ

দশম শ্রেণি উত্তীর্ণ হওয়ার পরই ঋণ-এর জন্য আবেদন করা যাবে। পলিটেকনিক নিয়ে পড়াশোনা করতে চাইলেও দশম শ্রেণির পর ঋণের জন্য আবেদন করতে পারবেন আগ্রহীরা। এ ছাড়াও উচ্চ মাধ্যমিকের পর স্নাতক অথবা স্নাতকোত্তর পড়ার জন্যও পাওয়া যাবে ঋণ। ইঞ্জিনিয়ারিং, চিকিৎসাবিদ্যা, আইন-সহ ব্যয়বহুল বিষয় নিয়ে পড়ার জন্যও আবেদন করা যাবে। স্নাতকোত্তর উত্তীর্ণদের জন্য পিএইচডি করার ইচ্ছে থাকলেও ঋণ নেওয়া যাবে। তবে শুধু যে উচ্চ স্তরে পড়ার জন্য এই ঋণ, এমনটা নয়। সর্ব ভারতীয় স্তরে বিভিন্ন প্রতিযোগিতা মূলক পরীক্ষার প্রস্তুতিও ঋণ নিয়ে পড়তে পারবেন আগ্রহীরা।

দেশের বাইরেও পড়ার সুযোগ

শুধু যে দেশের মধ্যেই ঋণ নিয়ে পড়া যাবে তা নয়। বিদেশের প্রতিষ্ঠানেও পড়তে চাইলে এই ঋণ আবেদন করতে পারবেন পড়ুয়ারা। সে ক্ষেত্রে আবেদনের পর যাচাইকরণের জন্য সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কাছে নথি চাওয়া হয়ে থাকে। সেই নথি-সহ প্রয়োজনীয় তথ্য পূরণ হলেই ব্যাঙ্ক ঋণের আবেদনের টাকা দিয়ে থাকে।

কারা আবেদন করতে পারবেন

অন্তত ১০ বছর পশ্চিমবঙ্গের স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে। আবেদনকারীর বয়স ৪০ বছরের মধ্যে হতে হবে। উচ্চ শিক্ষায় ভর্তি হওয়ার উপযুক্ত নথি জমা দিলেই আবেদন করতে পারবেন পড়ুয়া।

কী ভাবে আবেদন

www.wb.gov.in, https://banglaruchachashiksha.wb.gov.in, https://wbscc.wb.gov.in— এই ওয়েবসাইটে গিয়ে পোর্টালে পড়ুয়াদের দশম শ্রেণি রেজিস্ট্রেশন নম্বর এবং আধার কার্ড দিয়ে ‘রেজিস্ট্রশন’ করতে হবে। তাতে পাওয়া যাবে ‘ইউনিক আইডি’। এর পর ওই আইডি দিয়ে ‘লগ ইন’ করে প্রয়োজনীয় তথ্য পূরণ করে এবং নথি জমা দিতে আবেদন করতে হবে। কোর্স চলাকালীন এবং বছরে যে কোনও সময় আবেদন করা যায়।

ঋণ পাওয়ার প্রক্রিয়া

ওই আবেদন প্রথমে প্রতিষ্ঠানের যাচাইকরণের জন্য। প্রতিষ্ঠান থেকে তা ফেরৎ যায় উচ্চ শিক্ষা দফতরের। তার পর সেই নথি ব্যাঙ্কের কাছে পাঠানো হয়। ব্যাঙ্ক সব নথি খতিয়ে দেখে ঋণের অনুমোদন দিলে রিসার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার গাইডলাইন মেনে সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। পড়ুয়ার কাছে ‘স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড’ যায়। তবে, প্রতি পরীক্ষা শেষের পর পড়ুয়াকে ‘প্রোগ্রেস রিপোর্ট’ পোর্টালে জমা করতে হয়।

উল্লেখ্য, রাজ্য সমবায় ব্যাঙ্ক, তাদের অনুমোদিত কেন্দ্রীয় এবং জেলা সমবায় ব্যাঙ্ক, রাষ্ট্রায়ত্ত ও বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলি থেকে শিক্ষাঋণ পাওয়া যাবে এই প্রকল্পের মাধ্যমে। ঋণ বাবদ টাকা বাকি পড়লে গ্যারান্টার হিসেবে ব্যাঙ্কগুলিকে বকেয়া মেটাবে রাজ্য। সুদে ভর্তুকিও দেবে তারা। যার আওতায় ব্যাঙ্কগুলি যে হারই স্থির করুক না-কেন, ঋণগ্রহীতাকে দিতে হবে ৪ শতাংশ সুদ।

মহিলাদের ক্ষেত্রে সুদে অতিরিক্ত ৫০ বেসিস পয়েন্ট ছাড় পাওয়া যাবে। পাশাপাশি, এই প্রকল্পে ৪ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণের ক্ষেত্রে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে কোনও আগাম টাকা (মার্জিন মানি) দিতে হবে না গ্রহীতাকে। তবে তার বেশি ঋণের ক্ষেত্রে ৫ শতাংশ টাকা দিতে হবে। ঋণ শোধ শুরু করতে হবে পাঠ্যক্রম শেষ হওয়ার অথবা চাকরি পাওয়ার এক বছর পর থেকে। এ ক্ষেত্রে দু’টির মধ্যে যেটা আগে হবে, সেই সময়ই ধরা হবে।

Student Credit Card Education Loan Higher Study
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy