কথায় আছে, একজন প্রকৃত শিক্ষকই পড়ুয়াদের সুপ্ত প্রতিভার বিকাশ ঘটাতে পারেন। একই ভূমিকা পালন করেন একজন প্রশিক্ষকও। আর এই কোচিং বা প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে পথপ্রদর্শকের ভূমিকা পালন করছে ইন্টারন্যাশনাল কোচিং ফেডারেশন বা আইসিএফ। আন্তর্জাতিক স্তরের এই সংস্থা এ বার আত্মপ্রকাশ করল কলকাতাতেও।
১৯৯৫ থেকে যাত্রা শুরু। আমেরিকার সদর দফতর থেকে এর পর এই সংস্থার বিস্তার ঘটে বিশ্বের ৯০টি দেশে। দেশের মধ্যে প্রথম কলকাতাতেই এই কোচিং সংস্থা গড়ে তোলা হচ্ছে। ১০ মে, শনিবার, টলি ক্লাবের বামার লরি লাউঞ্জে ‘আইসিএফ কলকাতা চ্যাপ্টার’-এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। পূর্ব ভারতের মধ্যে কলকাতাকেই বেছে নেওয়া হয় পেশাদারি এই কোচিং সংস্থার অন্যতম কেন্দ্র হিসাবে।
কলকাতায় এই সংস্থার শাখা প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেছেন প্রেসিডেন্ট শর্মি রায় এবং ৩১ জন প্রতিষ্ঠাতা সদস্য বা কোচ। এই উদ্যোগ তাঁদের গত ১০ বছরের পরিশ্রমের ফসল। বিভিন্ন পেশার সঙ্গে যুক্ত এই কোচেরা পূর্ব ভারত তথা কলকাতার কোচিং বা প্রশিক্ষণের প্রয়োজনীয়তার কথা মাথায় রেখেই নতুন এই পদক্ষেপ করেছেন।
আইসিএফ কলকাতা চ্যাপ্টার। নিজস্ব চিত্র।
কোচিং বা প্রশিক্ষণ একজন ব্যক্তির বিকাশ ঘটিয়ে কী ভাবে প্রকারান্তরে একটি প্রতিষ্ঠানের উন্নতি এবং সমাজের সার্বিক পরিবর্তনে সাহায্য করে, শনিবারের অনুষ্ঠানে সে কথা আলোচনার মাধ্যমে বার বার উঠে আসে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আইসিএফ-এর সিইও ম্যাগডালেনা এন মুক। তিনি জানান, প্রশিক্ষণ একজন ব্যক্তির দক্ষতার বিকাশসাধনের মাধ্যমে যে কোনও পেশাদারি সংস্থার উন্নতি এবং সামাজিক উৎকর্ষ বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। এ ক্ষেত্রে আইসিএফ কী ভাবে পেশাদারি এবং নৈতিক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে, তারও উল্লেখ করেন। তাঁর কথায়, “সমাজে স্বঘোষিত এবং অপেশাদার একাধিক প্রশিক্ষকের সংখ্যা নেহাত কম নয়। কিন্তু আইসিএফ যথাযথ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ‘অ্যাক্রিডিটেড’ বা প্রশিক্ষিত কোচ তৈরির ক্ষেত্রে বদ্ধপরিকর।”
অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথি ছিলেন পদ্মশ্রী এবং রামন ম্যাগসেসে পুরষ্কার প্রাপক রবি কান্নান। কী ভাবে যথাযথ লিডারশিপ বা নেতৃত্ব এবং প্রশিক্ষণ সমাজের পটপরিবর্তনে সাহায্য করে, তাঁর কথায় সেই বিষয়টিই বারংবার উঠে আসে। ওই দিন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আইসিএফ-এর কলকাতা শাখার সেক্রেটারি পার্থ চট্টোপাধ্যায়, বামার লরি অ্যান্ড কোম্পানি লিমিটেডের সি অ্যান্ড এমডি অধীপ নাথ পাল চৌধুরী, সিইএসসি লিমিটেডের ভাইস প্রেসিডেন্ট (এইচআর) অর্ণব চক্রবর্তী, বামার লরি অ্যান্ড কোম্পানি লিমিটিডের ডিরেক্টর (ফিন্যান্স) সৌরভ দত্ত, বামার লরি অ্যান্ড কোম্পানি লিমিটিডের ডিরেক্টর (এইচআর অ্যান্ড সিএ) অভিজিৎ ঘোষ এবং হেরিটেজ গ্রুপ অফ ইনস্টিটিউশন্সের ডিন অফ মিডিয়া মধুপা বক্সী।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রত্না সিংহ, শান্তনু চক্রবর্তী, অমিতাভ পাল-সহ শিক্ষা এবং শিল্পজগতের অন্য প্রশিক্ষকেরাও। প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কী ভাবে একজন ব্যক্তির সার্বিক পরিবর্তন, সংস্থার বিভিন্ন টিমের কর্মদক্ষতা বৃদ্ধি এবং সংস্থার উন্নতি ঘটে, সেই বিষয়ে তাঁরাও আলোকপাত করেন। পাশাপাশি, এ-ও বলেন, এক সময় প্রশিক্ষণকে শুধুমাত্র মানবসম্পদ বা হিউম্যান রিসোর্সের একটি অংশ হিসাবে দেখা হলেও তা আদতে সংস্থার আর্থিক উন্নতিতেই বিশেষ ভাবে সাহায্য করে।