Advertisement
E-Paper

হাইড্রোজ়েনেই চলবে গাড়ি, পৌঁছে যাবে বিদ্যুৎ, জেনারেটর তৈরি করে নয়া দিশা যাদবপুরের গবেষকদলের

২০২১ সাল থেকে বিভাগের অধ্যাপক এবং গবেষকদল মিলে তৈরি করছেন একটি হাইড্রোজেন চালিত জেনারেটর।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫ ১৮:৩৫
Jadavpur University

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। ছবি: সংগৃহীত।

বিশ্বজুড়ে কার্বন দূষণের মাত্রা ক্রমশ বাড়ছে। পরিসংখ্যান বলছে, গত বছর কার্বন নিঃসরণের মাত্রা ছিল এযাবৎকালের মধ্যে সর্বোচ্চ। কার্বন নিঃসরণে চিন ও আমেরিকার পরেই রয়েছে ভারত।

দেশের অধিকাংশ বসতি এলাকায় এখনও তাপবিদ্যুৎ অথবা জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার করা হয়। অন্য দিকে, বেশিরভাগ পরিবহণের ক্ষেত্রেই ব্যবহার করা হয় পেট্রল বা ডিজেলের। তাই উন্নত দেশগুলিতে হাইড্রোজেনকেই বিকল্প শক্তি হিসাবে ব্যবহারের ঝোঁক বাড়ছে।

রাজ্যে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ও এ বার এই বিকল্প শক্তি নিয়ে গবেষণা শুরু করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে চলছে কাজ। ২০২১ সাল থেকে বিভাগের অধ্যাপক এবং গবেষকদল মিলে তৈরি করছেন একটি হাইড্রোজেন চালিত জেনারেটর। যা প্রত্যন্ত অঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহ থেকে চার চাকার গাড়ি চালানোর ক্ষেত্রে সহায়ক হবে বলে মনে করা হচ্ছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রাজকুমার দাস বলেন, “কার্বন নিঃসরণের ফলে বায়ুদূষণ বাড়ছে, তাতে মানবশরীর ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আমরা তাই হাইড্রোজেন জেনারেটর তৈরির গবেষণাকে বেশ গুরুত্বপূর্ণ মনে করছি।” তাঁর মতে, হাইড্রোজেন থেকে উৎপন্ন শক্তিকেই ‘ক্লিন’ এবং পরিবেশবান্ধব বা ‘গ্রিন’ শক্তি বলা হয়। তাই এই গবেষণার কাজ আদতে বৃহত্তর সমাজ এবং সুস্থায়ী পরিবেশ গড়ে তুলতে বেশ তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

গবেষণা প্রকল্পটির জন্য অর্থ সাহায্য করেছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় প্রাক্তনী সংসদ এবং আইআইটি মাদ্রাজ। গত চার বছর ধরে ল্যাব নির্ভর গবেষণার কাজ চলছে। বর্তমানে গবেষণার কাজ একেবারে শেষ ধাপে। আগামী বছরের মার্চ মাসের মধ্যেই হাইড্রোজেন চালিত জেনারেটরটি প্রোটোটাইপ বানানোর কাজ শেষ হবে। প্রথম ধাপের এই কাজ শেষ হলে শুরু হবে ‘পাইলট টেস্টিং’। ল্যাবের বাইরে বাস্তবে কতটা ব্যবহারযোগ্য এই জেনারেটর, তা পরীক্ষা করে দেখা হবে। এর পর শুরু হবে বাণিজ্যিকিকরণের কাজ। ২০২৭ সালের গোড়ার দিকেই সেই কাজের সূচনা বলে জানা গিয়েছে।

যাদবপুরের এই গবেষণার কাজে অন্যতম সদস্য সায়ন্তন মণ্ডল বলেন, “ প্রত্যন্ত অঞ্চল যেখানে বিদ্যুৎশক্তি পৌঁছয়নি, সাধারণত ডিজেল জেনারেটরই ব্যবহার করা হয়। এতে বায়ুদূষণ ছাড়াও শব্দদূষণ হয় ব্যাপক পরিমাণে।” তাঁর মতে, নতুন এই হাইড্রোজেন জেনারেটরটি হবে ছোটখাটো বহনযোগ্য সুটকেসের আকারের। এই জেনারেটর থেকে যেমন কোনও রকম কার্বন দূষণের সম্ভাবনা থাকবে না। তেমনি কোনও শব্দদূষণও হবে না বলে তাঁর দাবি।

জেনারেটরের মাধ্যমে শক্তি উৎপাদনও বেশ সহজ বলে জানিয়েছেন সায়ন্তন। তিনি বলেন, “জেনারেটরের সঙ্গে একটি ক্যাপসুলও থাকবে। জেনারেটরের মধ্যে থাকা শক্তি ব্যবহার করা হয়ে গেলে কোথাও রিচার্জ করতে হবে না। শুধু ওই ক্যাপসুলটি জেনারেটরে ইঞ্জেক্ট করে দিলেই আবার বিক্রিয়ার মাধ্যমে শক্তি উৎপাদন করা সম্ভব হবে।”

শুধু জেনারেটর তৈরি নয়, গবেষকদল মিলে একটি ‘অ্যালড্রোজেন এনার্জি’ স্টার্ট আপ সংস্থাও তৈরি করেছেন। যার মাধ্যমেই প্রথমে এর বাণিজ্যিকীকরণের কাজ শুরু হবে বলে জানা গিয়েছে। তবে পরবর্তীকালে নানা নামী যানবাহন প্রস্তুতকারী সংস্থার সঙ্গেও যোগাযোগ করা হবে। যাতে বিভিন্ন গাড়িতেও ডিজেলের বদলে হাইড্রোজেন জেনারেটর চালিত শক্তি ব্যবহার করা যায়। এ ছাড়াও, গবেষণায় কিছু উপজাত দ্রব্যও তৈরি হচ্ছে। যা নানা রোগ নিরাময়ে ওষুধ তৈরির ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে কাজে আসবে।

Jadavpur University Hydrogen Powered Generator JU Alumni IIT Madras
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy