Advertisement
E-Paper

অনুদান অপ্রতুল! ঐতিহ্যবাহী স্কুল বাড়ি মেরামত করতে হাত পাততে হচ্ছে প্রাক্তনীদের কাছে?

১২৭ বছরের পুরনো ভবন, বহু জায়গায় মেরামতি প্রয়োজন। কোথাও কোথাও ছাদ থেকে জল পড়ে। কম্পোজিট গ্র্যান্ট বা সরকারি অনুদান না আসায় মেরামতির জন্য সাহায্যের হাত বাড়ানো হয়েছে প্রাক্তনীদের কাছে।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ অগস্ট ২০২৫ ১৮:৩১
স্কুলগুলির বেহাল দশা। বাঁদিকে নারায়ণচন্দ্র দাস বাঙ্গুর স্কুল ও ডানদিকে মিত্র ইনস্টিটিউশন।

স্কুলগুলির বেহাল দশা। বাঁদিকে নারায়ণচন্দ্র দাস বাঙ্গুর স্কুল ও ডানদিকে মিত্র ইনস্টিটিউশন। নিজস্ব চিত্র।

শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় থেকে সিদ্ধার্থশঙ্কর রায়, সোমনাথ চট্টোপাধ্যায় কিংবা হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, সুভাষ মুখোপাধ্যায়— তাবড় বাঙালি এ স্কুলের প্রাক্তনী। ১৮৯৮ সালে ভবানীপুরে নির্মিত হয় মিত্র ইনস্টিটিউশন, বাবু বীরেশ্বর মিত্রের অর্থানুকুল্যে। আজ সেই স্কুলের অনেক শ্রেণিকক্ষেই জল পড়ে ছাদ থেকে। মেরামত করতেও দু’বার ভাবতে হয় কর্তৃপক্ষকে। হাত পাততে হয় প্রাক্তনী সংসদের কাছে!

তবে শুধু মিত্র ইনস্টিটিউশন নয়। অভিযোগ, সরকার পোষিত স্কুলগুলিতে সরকারি অনুদান অপ্রতুল। গত দু’মাসের প্রবল বর্ষণে কোথাও ছাদ চুঁইয়ে জল পড়ছে শ্রেণিকক্ষে, কোথাও স্কুলের দরজা ভাঙা, বেশির ভাগ শ্রেণিকক্ষেই বেঞ্চ ভেঙে রয়েছে। মেরামত হয়নি দীর্ঘদিন। এ দিকে সামনেই উচ্চ মাধ্যমিকের তৃতীয় সেমেস্টার। শিক্ষা সংসদের তরফ থেকে বলা হয়েছে, স্কুল কর্তৃপক্ষের দায়িত্বে অবিলম্বে স্কুলভবন মেরামতি করাতে হবে। যাতে পরীক্ষার্থীদের কোনও সমস্যায় না পড়তে হয়।

মিত্র ইনস্টিটিউশন।

মিত্র ইনস্টিটিউশন। নিজস্ব চিত্র।

কিন্তু প্রশ্ন উঠছে এই মেরামতিতে প্রয়োজনীয় অর্থ আসবে কোথা থেকে? মিত্র ইনস্টিটিউশনের প্রধান শিক্ষক রাজা দে বলেন, “সরকারি অনুদান এখন‌ও আসেনি। কিন্তু পরীক্ষার জন্য মেরামতি আশু প্রয়োজন। এ জন্য আমরা প্রাক্তনীদের সাহায্য চেয়েছি। শুধু ভবন মেরামতি নয়, পরীক্ষা সুষ্ঠু ভাবে পরিচালনার জন্য প্রয়োজন পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা। বেশিরভাগ সাহায্যই করছেন প্রাক্তনীরা।”

স্কুলের চক-ডাস্টার কেনা থেকে স্কুলবাড়ি মেরামতি— নানা খাতে অর্থ বরাদ্দ করে থাকে সমগ্র শিক্ষা মিশন। হিসাব বলছে, এই খাতে শেষ বার টাকা দেওয়া হয়েছে ২৪ সালের জানুয়ারি মাসে। তা-ও মোট বরাদ্দের মাত্র ২৫ শতাংশ। চলতি বছরে পেরিয়ে গিয়েছে আটটি মাস। অনুদানের কোনও টাকা আসেনি বলে অভিযোগ।

একই পরিস্থিতি নারায়ণ দাস বাঙুর স্কুলেও। প্রধান শিক্ষক সঞ্জয় বড়ুয়া বলেন, “একটি ঘরের পরিস্থিতি এমন, বৃষ্টি হলেই জল পড়ে। আপৎকালীন মেরামতির জন্য আমাকে খরচা করতে হবে প্রায় লক্ষাধিক টাকা। অথচ, সরকারি অনুদান ঠিক মতো পাই না। ভোটের সময় পিডব্লিউডি যে ভাবে স্কুলবাড়ি মেরামত করে, বড় পরীক্ষার সময়ও তেমন করা উচিত সরকারি উদ্যোগে।”

তবে শুধু স্কুলবাড়ি মেরামতি নয়। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে স্কুলগুলি অনেক সময় আংশিক সময়ের শিক্ষক নিয়োগ করে স্থায়ী শিক্ষকের অভাবে। সেই শিক্ষকদের বেতনও এই কম্পোজিট গ্র্যান্টের মাধ্যমে দেওয়া হয়। ফলে এই মুহূর্তে অনুদান না পেয়ে স্কুলগুলির নাভিশ্বাস উঠছে।

প্রধানশিক্ষক সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক চন্দন মাইতি বলেন, “মেরামতির টাকা কোথায়? এক লক্ষ টাকা প্রাপ্য হলে সরকারের তরফের দেওয়া হচ্ছে মাত্র ২৫ হাজার টাকা। তা-ও প্রতি বছর সেটুকু টাকাও পাওয়া যায় না। অবিলম্বে স্কুলগুলিকে টাকা দিতে হবে। না হলে, যে সব স্কুলের অবস্থা খুব খারাপ, সে সব স্কুলে পরীক্ষার সময় কোন দুর্ঘটনা ঘটলে তার দায়।”

যদিও শিক্ষা দফতরের এক কর্তার মতে, কম্পোজিট গ্রান্টের টাকা কেন্দ্র ও রাজ্য যৌথ ভাবে দেয়। রাজ্য তাদের ভাগে টাকা স্কুলে স্কুলে পৌঁছে দিলেও কেন্দ্র তাদের অংশের টাকা দিচ্ছে না। তবে স্কুলগুলির দাবি, রাজ্যও সম্পূর্ণ টাকা দিচ্ছে না।

wb school Alumni Roof Rain water
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy