Advertisement
E-Paper

‘মেরুদণ্ড সোজা না বাঁকা, জানি না’! সব পক্ষকে নিয়ে চলার আশ্বাস দিয়ে বললেন কলকাতার নতুন উপাচার্য

প্রায় তিন বছর পর একজন স্থায়ী উপাচার্য পেল ১৬৮ বছরের কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়। আচার্য-রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের অনুমোদনে বুধবারই রাজ্যের ছ’টি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের নাম স্থির হয়েছে। কিন্তু প্রথম দায়িত্ব নিলেন আশুতোষই।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ অক্টোবর ২০২৫ ১৭:০৬
স্থায়ী উপাচার্য আশুতোষ ঘোষকে ফুলের তোড়া দিয়ে সংবর্ধনা জানালেন রেজিস্ট্রার দেবাশিস দাস।

স্থায়ী উপাচার্য আশুতোষ ঘোষকে ফুলের তোড়া দিয়ে সংবর্ধনা জানালেন রেজিস্ট্রার দেবাশিস দাস। নিজস্ব চিত্র।

সংঘাত নয়, সব পক্ষকে সঙ্গে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উৎকর্ষ বৃদ্ধিতেই মন দিতে চান কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবনিযুক্ত স্থায়ী উপাচার্য আশুতোষ ঘোষ। বৃহস্পতিবার সকালে কলেজ স্ট্রিট ক্যাম্পাসে কাজে যোগ দেন তিনি। জানিয়ে দেন, পঠনপাঠনের মানোন্নয়ন, শিক্ষক নিয়োগ প্রভৃতি বিষয়ে নজর দেবেন। চলতে চান সকলকে পাশে নিয়ে।

প্রায় তিন বছর পর একজন স্থায়ী উপাচার্য পেল ১৬৮ বছরের কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়। আচার্য-রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের অনুমোদনে বুধবারই রাজ্যের ছ’টি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের নাম স্থির হয়েছে। কিন্তু প্রথম দায়িত্ব নিলেন আশুতোষই। ২০১৬-২০১৭ নাগাদ তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব সামলেছেন।

উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজ্য সরকারের সঙ্গে আচার্য-রাজ্যপালের সঙ্গে দ্বন্দ্ব চরমে উঠেছিল একসময়। রাজ্যপাল মনোনীত ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য শান্তা দত্ত দে-র একাধিক পদক্ষেপে বিতর্ক তৈরি হয়েছে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে। বিশেষত, শাসকদলের ছাত্র ও কর্মী সংগঠনের সঙ্গে ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যের সংঘাত প্রায় নজিরবিহীন আকার নিয়েছিল। গত কয়েক বছরে স্থায়ী উপাচার্য না-থাকায় শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী নিয়োগ-সহ নানা বিষয়ে সমস্যা হয়েছে বলে অভিযোগ। সে দিকেই নজর দিতে চান আশুতোষ।

এ দিন কারও নাম না করেই আশুতোষ বলেন, “আমার মেরুদণ্ড সোজা না বাঁকা, তা নিয়ে আমি চিন্তা করি না। আমি কোন‌ও এক পক্ষের হয়ে অন্য পক্ষের সঙ্গে সংঘাতে যাব না। উভয় পক্ষকে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের মানোন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করব।”

উল্লেখ্য, গত কয়েক বছরে আন্তর্জাতিক ও জাতীয় র‌্যাঙ্কিং-এ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় ক্রমশ পিছিয়ে পড়েছে। ২০১৬-১৭ সালে গবেষণা ক্ষেত্রে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের এনআইআরএফ র‍্যাঙ্ক ছিল ১২-১৩ । বর্তমানে তা ঠেকেছে ৩৯-এ। বিশ্ববিদ্যালয়ে নাক পরিদর্শনও শেষ বার হয়েছে ২০১৬-১৭ সালেই। আশুতোষ এ বার ফের নাক পরিদর্শনের পরিকল্পনা করছেন। পাশাপাশি হস্টেল সংস্কারের বিষয়টিতেও নজর দিতে চান।

সূত্রের খবর, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় শেষ অধ্যাপক নিয়োগ হয়েছে ২০১৭-২০১৮ সালে। এই মুহূর্তে প্রায় ৫৯ শতাংশ পদ শূন্য। অন্য দিকে প্রশাসনিক আধিকারিক পদে শেষ নিয়োগ করা হয়েছে ২০২০ সালে। সেখানেও ঘাটতি রয়েছে ৩০-৪০ শতাংশ। অভিযোগ, স্থায়ী শিক্ষাকর্মী পদে শেষ নিয়োগ হয়েছে ১৮ বছর আগে, ২০০৭-০৮ সালে। প্রায় ৭০ শতাংশ স্থায়ী শিক্ষাকর্মীর পদই খালি।

উৎকর্ষমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের অবনতির কারণ হিসাবে শিক্ষকের অভাবকেই দায়ী করেছেন নবনিযুক্ত উপাচার্য। তিনি বলেন, “৫০ শতাংশেরও বেশি পদে শিক্ষক নেই। এই মুহূর্তে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবনমনের প্রধান কারণ এটিই।” শূন্যপদ পূরণের আশ্বাস দিয়ে তিনি জানান, স্নাতক ও স্নাতকোত্তর স্তরে নতুন নতুন কোর্স চালু করার কথাও ভাবা হচ্ছে। পড়ুয়াদের বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজমুখী করাই এর লক্ষ্য। পড়ুয়াদের অভিভাবক হিসাবে কাজ করতে চান বলে জানিয়েছেন আশুতোষ।

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের শেষ স্থায়ী উপাচার্য সোনালি চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায় দায়িত্ব সামলেছেন ২০২২-এর সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। তার পর অস্থায়ী উপাচার্য হিসাবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল আশিস চট্টোপাধ্যায়কে। ২০২৩-এর জুনে রাজ্যপাল মনোনীত শান্তা দত্ত দে দায়িত্ব নেন ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য হিসাবে এবং শুরু হয় সরকারের সঙ্গে মতবিরোধ।

Calcutta University VC
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy