Advertisement
E-Paper

কেউ চাইছেন রোজগারের পথ, কেউ ফিরতে চান ঘরে! শুরু হল প্রাথমিক নিয়োগের ইন্টারভিউ প্রক্রিয়া

মঙ্গল ও বুধবার প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের জন্য ইন্টারভিউ প্রক্রিয়া শুরু হল বিধাননগরে। কিন্তু শূন্যপদের সংখ্যা নিয়ে অসন্তোষ রয়েই গেল প্রার্থীদের মধ্যে।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫ ১৩:৫৩
আশায় বুক বেঁধে ফের উপস্থিত হয়েছেন প্রাথমিক নিয়োগের ইন্টারভিউ প্রক্রিয়ায়।

আশায় বুক বেঁধে ফের উপস্থিত হয়েছেন প্রাথমিক নিয়োগের ইন্টারভিউ প্রক্রিয়ায়। নিজস্ব চিত্র।

অপেক্ষায় ছিলেন দীর্ঘ দিন। কিন্তু কাজের কাজ হয়নি। রোজগারের টানে শেষ পর্যন্ত রাজ্য ছাড়়তে হয়েছিল উত্তর ২৪ পরগনার অচিন্ত্য মল্লিককে। আশায় বুক বেঁধে ফের তিনি উপস্থিত হয়েছেন প্রাথমিক নিয়োগের ইন্টারভিউ প্রক্রিয়ায়। কারণ, ফিরে আসতে চান নিজের ঘরে।

অচিন্ত্য একা নন। এমন অনেক প্রার্থীই হাজির হয়েছেন বুধবার প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের তথ্য যাচাই ও ইন্টারভিউ প্রক্রিয়ায় যোগ দিতে। প্রথম পর্যায়ে শুধুমাত্র ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের প্রার্থীদেরই ডাকা হয়েছে। মোট শূন্যপদ রয়েছে ১৩৪২১। কিন্তু এই শূন্যপদের সংখ্যা নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে প্রার্থীদের মধ্যে।

এবারের ইন্টারভিউয়ে অনেক প্রার্থীই এসেছেন ২০১৭ ডিপ্লোমা ইন এলিমেন্টারি এডুকেশন (ডিএলএড) পাশ করে। তাঁরা টেট পাশ করেছেন আগেই। কিন্তু ইন্টারভিউ না হওয়ায় কাজের সুযোগ পাননি এত বছর। অনেকেই শুরু করেছিলেন অন্য কোনও পেশায়। অথবা, চলে গিয়েছিলেন ভিন্‌ রাজ্যে। তাঁরা ফিরে আসতে চাইছেন নিজের শিক্ষকতায়, নিজের রাজ্যে।

উত্তর ২৪ পরগনা ঠাকুরনগরের বাসিন্দা অচিন্ত্য মল্লিক ২০২২-এ টেট পাশ করেছিলেন। এক সময় রোজগারের আশায় তিনি রাজ্য ছেড়ে চলে যান হিমাচলপ্রদেশে। সেখানে একটি বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে শিক্ষকতায় যোগ দিয়েছিলেন। কায়মনোবাক্যে চাইছেন, এ রাজ্যের কোনও প্রাথমিক স্কুলে যোগ দিতে।

তথ্য যাচাইয়ের জন্য খতিয়ে দেখা হচ্ছে নথি।

তথ্য যাচাইয়ের জন্য খতিয়ে দেখা হচ্ছে নথি। নিজস্ব চিত্র।

অচিন্ত্যের কথা উঠে আসে ক্ষোভ, “সরকারের উদাসীনতায় আমরা এত দিন ধরে বঞ্চিত হচ্ছি। বাধ্য হয়ে রাজ্যের বাইরে গিয়ে চাকরি করতে হয়েছে। কিন্তু ওখানকার সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলে মানিয়ে নেওয়া কষ্টকর। ফিরে আসতে চাই নিজের ঘরে।” অচিন্ত্যরা আশায় বুক বাঁধছেন। কিন্তু শূন্যপদের সংখ্যা আশঙ্কা বা়ড়াচ্ছে।

অচিন্ত্যের মতোই একটা চাকরির অপেক্ষায় রয়েছেন পুরুলিয়ার রঘুনাথপুরের সাগরিকা মাঝি। সঙ্গে এসেছেন তাঁর স্বামী তিনি বিজন মাঝি। স্ত্রী যখন তথ্য যাচাইয়ের জন্য তৈরি হচ্ছেন তিনি তখন সংবাদমাধ্যমকে জানান তাঁদের আশঙ্কার কথা। বিজন বলেন, “দীর্ঘ দিন নিয়োগ বন্ধ ছিল, ফলে প্রতিযোগিতা অনেক বেশি। আসনসংখ্যা যথেষ্ট নয়। ইংরেজি মাধ্যমে মাত্র ১৮০টি আসন রয়েছে।”

আগেই পর্ষদ জানিয়েছে, ইন্টারভিউ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা বজায় রাখতে নজরদারি ক্যামেরার মাধ্যমে রেকর্ড করা হবে গোটা প্রক্রিয়াটি। একই দিনে তথ্য যাচাই ও ইন্টারভিউ হবে প্রার্থীদের। ৩০ ও ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫-এ ইংরেজি বিভাগের নিয়োগের জন্য প্রার্থীদের ইন্টারভিউ নেওয়া হচ্ছে। মোট ১৩৫ জন প্রার্থীকে ডাকা হয়েছে প্রথম দিনে। ২০২২-এ শেষ বার প্রাথমিক নিয়োগ হয়েছিল। সেখানে যোগ দিয়েছিলেন ২০১৪ ও ২০১৭-এর টেট উত্তীর্ণ প্রার্থীরা। ২০২২ ও ২০২৩-এর টেট উত্তীর্ণ এবং ডিএলএড প্রশিক্ষিত প্রার্থীরা এত দিন কোনও সুযোগই পাননি।

শুধু প্রাথমিকের নয় মঙ্গলবার হাই কোর্টের নির্দেশে ১৫৪ জন চাকরিপ্রার্থীর ইন্টারভিউর জন্য তথ্য যাচাই করা হচ্ছে স্কুল সার্ভিস কমিশনের তরফ থেকে। একাদশ-দ্বাদশের যে সব চাকরিপ্রার্থী আবেদনের সময় তাঁদের জাতিগত বিভাগ উল্লেখ করেননি, তাঁদের একটি অংশ আদালতের দ্বারস্থ হয়ে ক্যাটাগরি আপডেট করার সুযোগ দেওয়ার আর্জি জানান। তাঁদের দাবি ছিল, এই জাতিগত বিভাগ লিখলে বিষয়ভিত্তিক কাট অফ নম্বরে তাঁদের নাম চলে আসবে এবং তাঁরা ইন্টারভিউয়ের জন্য তথ্য যাচাইয়ে সুযোগ পাবেন। কলকাতা হাই কোর্ট তাঁদের এই আবেদন মঞ্জুর করেছিল।

Primary Teacher Recruitment West Bengal Board of Primary Education
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy