যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে অবিলম্বে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবিতে সহ উপাচার্য এবং রেজিস্ট্রারকে ঘিরে বিক্ষোভ প্রদর্শন করল এসএফআই। একদিকে যখন বিক্ষোভ চলছে তখন অন্যদিকে হাইকোর্টের নির্দেশের পরেও খোলা ইঞ্জিনিয়ারিং ও বিজ্ঞান শাখার ইউনিয়ন রুম। হাইকোর্ট এবং সরকারের নির্দেশের পরেও কেন ইউনিয়ন রুম খোলা তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।
বৃহস্পতিবার বিকালে এসএফআই ছাত্র সংগঠনের তরফ থেকে দাবি জানানো হয়, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে উদ্যোগী হয়ে ত্রিপাক্ষিক বৈঠকের ব্যবস্থা করতে হবে সরকারের সঙ্গে। এ ছাড়াও বেশ কিছু দাবি নিয়ে রেজিস্ট্রার ও সহ উপাচার্যকে রাত পর্যন্ত ঘেরাও করে রাখেন ছাত্র-ছাত্রীরা।
আরও পড়ুন:
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের এসএফআই নেতা অভিনব বসু বলেন, "সম্প্রতি হাই কোর্ট জানতে চেয়েছে যে সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নেই সেখানে ভোট হবে কি না? আমরা কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি তুলেছি অবিলম্বে ত্রিপাক্ষিক বৈঠকের ব্যবস্থা করা হোক সরকারের সঙ্গে। যাদবপুর নিজের ক্ষমতা বলে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভোট করানো হোক।"
আরও পড়ুন:
ছাত্র ভোটের প্রসঙ্গে, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানান, বিষয়টি এখন আদালতে বিচারাধীন। ত্রিপাক্ষিক বৈঠকের বিষয়ে আমরা বহুবার সরকারকে জানিয়েছি। সরকার এই বৈঠক নিয়ে আমাদের কোনও সদুত্তর দেয়নি। যতক্ষণ না সরকার ভোট ঘোষণা করছে, এ বিষয়ে আমরা কিছু করতে পারব না।
দীর্ঘ দিন ধরে রাজ্যের কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচন হয়নি। এই নিয়ে জনস্বার্থ মামলা হয়। সেই মামলার শুনানিতে ১৭ জুলাই নির্বাচন না-হওয়া নিয়ে রাজ্যকে প্রশ্ন করেছে বিচারপতি সৌমেন সেন এবং বিচারপতি স্মিতা দাস দে-র ডিভিশন বেঞ্চ। রাজ্যের আইনজীবী জানিয়েছেন, অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থায়ী উপাচার্য নেই। তা ছাড়া রাজ্যের কাজ শুধু এই ছাত্র সংসদ নির্বাচনের বিজ্ঞপ্তি জারি করা। তার পরেই ডিভিশন বেঞ্চের মন্তব্য, আগে বিজ্ঞপ্তি জারি করুক রাজ্য, বাকিটা দেখে নেবে আদালত। ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, এই বিজ্ঞপ্তি জারি নিয়ে রাজ্য কী ভাবছে, তা-ও জানাতে হবে। দু’সপ্তাহ পরে এই মামলার পরবর্তী শুনানি।
প্রথমে হাই কোর্ট ও পরবর্তীকালে উচ্চশিক্ষা দফতরের বিজ্ঞপ্তির পরেও ইঞ্জিনিয়ারিং এবং বিজ্ঞান শাখার ইউনিয়ন রুম কেন বন্ধ হয়নি, তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন যাদবপুরে।
যদিও এই দুই বিভাগের পড়ুয়াদের দাবি, হাই কোর্টের নির্দেশকে মান্যতা দিয়ে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিয়ন রুম বন্ধ করা হলে কমনরুম এবং রিক্রিয়েশন রুম বলে কিছু থাকবে না। তার কারণ বিশ্ববিদ্যালয় আলাদা করে ইউনিয়ন রুম নেই।
ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের স্নাতকোত্তরের এক ছাত্র নেতা জানান, "আদালতের রায়কে মান্যতা দিতে হলে আমাদের কমন রুম এবং রিক্রিয়েশন রুম এও তালা দিতে হবে। মাঠে বৈঠক হয়, সেখানেই ইউনিয়নের কাজ কর্ম নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।"
৩ জুলাই হাইকোর্ট একটি জনস্বার্থ মামলার প্রেক্ষিতে ইউনিয়ন রুম বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন। এই মর্মে উচ্চ শিক্ষা দফতরকে বিজ্ঞপ্তিও জারি করতে বলা হয়েছে। ১৭ জুলাই কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশ মেনে ইউনিয়ন রুম বন্ধের বিজ্ঞপ্তি জারি করে উচ্চশিক্ষা দফতর।
রাজ্যের দেওয়া বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, বর্তমানে বেশকিছু কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ইউনিয়ন রুমে অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটেছে। এ ছাড়াও বহুদিন যাবৎ কলেজগুলিতে কোনও স্টুডেন্ট কাউন্সিল নেই। হয়নি কোনও ছাত্র সংসদ নির্বাচন। এই পরিস্থিতিতে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ইউনিয়ন রুম বন্ধ থাকবে। তবে এই নির্দেশের পরেও যাদবপুরের দু'টি বিভাগে বন্ধ হল না ইউনিয়ন রুম।