বৃহস্পতিবারই শহরের রাজপথে বিক্ষোভে বসেন ‘যোগ্য’ শিক্ষকরা। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার জন্য কালীঘাট অভিযান কর্মসূচি থেকেই তাঁদের একাংশ হুঁশিয়ারি দেন এ বছরের মাধ্যমিকের ডিউটিতে যোগ না দেওয়ার। তবে শুক্রবার মধ্যশিক্ষা পর্ষদ জানিয়েছে, তাদের কাছে এমন কোনও খবর নেই।
প্রায় ১৫ হাজারেরও বেশি চাকরিজীবী ‘যোগ্য’ এসএলএসটি শিক্ষক এখন আন্দোলনরত। বুধবার ছিল তাঁদের কালীঘাট অভিযান কর্মসূচি। সেখানেই তাঁদের মধ্যে বিক্ষুব্ধ শিক্ষকদের একাংশ জানান, তাঁদের দাবি মানা না হলে তাঁরা এ বছর মাধ্যমিকের ডিউটিতেও যোগ দেবেন না। কিন্তু শুক্রবার মাধ্যমিকের প্রেস কনফারেন্সে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি রামানুজ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “পরীক্ষা সুষ্ঠু ভাবে পরিচালনার জন্য যাবতীয় বন্দোবস্ত করা হয়েছে। আন্দোলনকারী যোগ্য চাকরিজীবীরা মাধ্যমিকের কোনও কাজ করবেন না বলে আমাদের কাছে কোনও খবর নেই।”
আরও পড়ুন:
পর্ষদ সূত্রে খবর, মাধ্যমিকের পরীক্ষাব্যবস্থা তত্ত্বাবধানের জন্য শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মীদের ডিউটি আবশ্যিক। ডিউটিতে যোগ না দিলে শিক্ষকদের বিরুদ্ধে জরুরি পদক্ষেপ করবে পর্ষদ, করা হবে ‘ডিপার্টমেন্টাল অ্যাকশন’ বা শাস্তিমূলক পদক্ষেপ। উল্লেখ্য, পর্ষদের নিয়ম অনুযায়ী, কোনও শিক্ষক বা শিক্ষাকর্মীদের এই সময়ে ডিউটিতে যোগদান না করতে পারলে তাঁদের প্রথমে ভেন্যু সুপারভাইজ়ার বা প্রধানশিক্ষকদের কাছে আবেদনপত্র পাঠাতে হয়। এর পর তা পরবর্তী ধাপে জেলা পরিদর্শক বা ডিআই-এর মাধ্যমে পর্ষদের কাছে পৌঁছয়। যদি এই নিয়মবিধি না মানা হয়, তা হলে পর্ষদের তরফে শিক্ষক বা শিক্ষাকর্মীদের কাছে শোকজ় নোটিস পাঠানো হয়, অর্থাৎ তাঁদের কাছে কারণ জানতে চাওয়া হয়। সেই কারণে পর্ষদ সন্তুষ্ট না হলে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ করে পর্ষদ।
এ প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, " যোগ্য চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে আমার একটা বৈঠক হয়েছে। আমার কাছে এরকম কোনও দাবি করেনি ওরা। তাই এই দাবির কোনও মানে আছে বলে মনে করি না। সরকার যাতে ঠিকমত মামলাটি লড়াই করে তার দাবি পত্র দিয়ে গেছে।"
২০১৬ সালের এই বিক্ষুব্ধ শিক্ষকদের দাবি, ‘যোগ্য’ এবং ‘অযোগ্য’-দের আলাদা তালিকা তৈরি করা হোক। কেন না, ‘যোগ্য’ হয়েও তাঁদের চাকরি বর্তমানে সঙ্কটের মুখে। অভিযোগ, এর জন্য দায়ী রাজ্য সরকার, স্কুল সার্ভিস কমিশন এবং মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। আদালতে এই তিন প্রতিষ্ঠান আলাদা আলাদা বক্তব্য তুলে ধরছে। আর চাকরিক্ষেত্রে সমস্যার সম্মুখীন তাঁরা। তাই ন্যায্য দাবিতে বুধবার কালীঘাট অভিযানের ডাক দেন তাঁরা। সেই কর্মসূচিতে পুলিশ বাধা দিলে তার জের এসে পড়ে ডোরিনা ক্রসিংয়ে আন্দোলনরত শিক্ষকদের উপরেও। সেখান থেকে তাঁদের জোর করে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় বলে অভিযোগ। অন্য দিকে, কলকাতা পুলিশের দাবি ছিল, তাঁদের কাছে কর্মসূচির আগামী খবর না থাকাতেই এই পদক্ষেপ করতে হয়। আন্দোলনরত 'যোগ্য' চাকরিজীবী শিক্ষকরা জানান, ১০ ফেব্রুয়ারির মধ্যে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা না হলে তাঁদের প্রতিবাদ আরও জোরালো হবে।