রাজ্যের সরকারি এবং সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বিশেষ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। স্কুলশিক্ষা বিভাগ সেই প্রশিক্ষণ সংক্রান্ত বিষয়ে বিশদ তথ্য প্রকাশ করেছে। কৃষ্টিমূলক বিভিন্ন বিষয় কী ভাবে স্কুলশিক্ষার অঙ্গ হয়ে উঠতে পারে, শিক্ষাদানের ক্ষেত্রে কী কী বিষয়ে নজর রাখতে হবে— সবটাই এই প্রশিক্ষণ কর্মসূচির মাধ্যমে শেখাবে কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রক অধীনস্থ সেন্টার ফর কালচারাল রিসোর্সেস অ্যান্ড ট্রেনিং।
জাতীয় শিক্ষানীতি ২০২০-তে পাঠ্যবইয়ের বাইরে থেকে শিক্ষাগ্রহণের উপর বিশেষ ভাবে গুরুত্ব আরোপ করার কথা বলা হয়েছে। সেই নীতি অনুসরণ করেই স্কুলস্তরে প্রাকৃতিক এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণ, পুতুল নাচ, বৈচিত্র্যময় সাংস্কৃতিক পরিবেশ, জাদুঘরের ভূমিকা, কৃষ্টিমূলক বিষয় চর্চা নিয়ে কী ভাবে পাঠদান করতে হবে, তার প্রশিক্ষণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। বিভিন্ন রাজ্যের সরকারি এবং সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের এই প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
আরও পড়ুন:
যাদবপুর বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক পার্থপ্রতিম বৈদ্য জানিয়েছেন, পাঠ্যবইয়ের একঘেয়ে পাঠদানের বাইরেও বিভিন্ন বিষয় পড়ুয়াদের শেখানো যেতে পারে। সেই ভাবনা থেকেই রাজ্যের তরফে আগ্রহী শিক্ষক-শিক্ষিকাদের কৃষ্টিমূলক বিষয়ে পাঠদানে পারদর্শী করার প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। এতে আশা করাই যায়, পরবর্তীতে ক্লাসরুমের বাইরেও পড়ুয়াদের কাছে পঠনপাঠন আরও আকর্ষণীয় করে তোলা সম্ভব।
অন্য দিকে, রাজ্যের তরফে ২০৩৫ সালের মধ্যে শিক্ষাব্যবস্থায় আমূল বদল ঘটানোর লক্ষ্য নিয়ে তৈরি করা হয়েছে আলাদা শিক্ষানীতি। সেই শিক্ষানীতিতে জাতীয় শিক্ষানীতির কিছু প্রস্তাবও গ্রহণ করেছে রাজ্য। তাতে সেমেস্টার পদ্ধতি, স্নাতক স্তরে মাল্টিপল এন্ট্রি এবং এক্সিট, অ্যাকাডেমিক ব্যাঙ্ক অফ ক্রেডিট চালু করা থেকে শুরু করে চার বছরের স্নাতক পাঠক্রম— সবই রয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশ মেনেই রাজ্য সরকার কর্মরত প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষকদের ওরিয়েন্টেশন কোর্স করাতে চাইছে, যা আসলে জাতীয় শিক্ষানীতি কার্যকরী ভাবে বাস্তবায়িত করার প্রশিক্ষণ।
আরও পড়ুন:
এই বিষয়ে সারা ভারত সেভ এডুকেশন কমিটির সাধারণ সম্পাদক তরুণকান্তি নস্করের অভিযোগ, রাজ্য সরকার জাতীয় শিক্ষানীতি ২০২০ কার্যকর করছে না, দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা এই দাবি যে কত বিভ্রান্তিকর তা স্কুলশিক্ষা দফতরের উক্ত নির্দেশিকা থেকে পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, “আমরা রাজ্য সরকারের এই বিভ্রান্তিকর দৃষ্টিভঙ্গির তীব্র বিরোধিতা করছি।”