প্রাথমিক ও উচ্চ প্রাথমিকে টেট বাধ্যতামূলক। সম্প্রতি এমনই নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। তার পরই নড়ে বসেছে রাজ্যগুলি। কিন্তু নীরব পশ্চিমবঙ্গ সরকার। ইতিমধ্যে বেশ কিছু রাজ্য নির্দেশ পুনর্বিবেচনার আর্জি জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। শিক্ষকদের চাকরি বাঁচাতে প্রধানমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছে নানা রাজ্যের শিক্ষক সংগঠনগুলি।
শীর্ষ আদালতের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে উত্তরপ্রদেশ, তামিলনাড়ু, কেরলের বিভিন্ন শিক্ষক সংগঠন আইনি পদক্ষেপ করেছে। ইতিমধ্যে উত্তরপ্রদেশ সরকার ১৭ সেপ্টেম্বর রিভিউ পিটিশন দাখিল করেছে সুপ্রিম কোর্টে। যদিও সেখানে বেশ কিছু ত্রুটি চিহ্নিত করেছে আদালত। ৩ নভেম্বরের মধ্যে সেগুলি সংশোধন করতে পারবে উত্তরপ্রদেশ সরকার।
অথচ গোটা বিষয়টিতে এখনও কোনও পদক্ষেপ করেনি এ রাজ্য। এ প্রসঙ্গে, শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক কিঙ্কর অধিকারী বলেন, “টেট সম্পর্কে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের ফলে শিক্ষকদের চাকরি নিয়ে যে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়েছে তার পরিপ্রেক্ষিতে উপযুক্ত পদক্ষেপ করতে হবে রাজ্যকে। সরকার যাতে এই রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ পিটিশন-সহ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করে, সেই দাবি আমরা রাখছি।” তাঁরা ইতিমধ্যেই প্রধানমন্ত্রী, কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী এবং রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, মুখ্য সচিব, শিক্ষামন্ত্রীর উদ্দেশ্যে চিঠি পাঠিয়েছেন বলেও দাবি করেছেন।
আরও পড়ুন:
শিক্ষকদের একাংশে বক্তব্য, রাইট টু এডুকেশন অ্যাক্ট লাগু হওয়ার পূর্বে বিএড/পিটিটি ট্রেনিং-সহ কঠিন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষকদের পুনরায় কেন চাকরি রক্ষার পরীক্ষা দিতে হবে? প্রয়োজনে তাঁদের জন্য আলাদা ভাবে কর্মশালা এবং প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হোক। না হলে সরকারি শিক্ষা ব্যবস্থা আরও সঙ্কটে পড়বে এবং শিক্ষার বেসরকারিকরণের রাস্তা আরও দ্রুত প্রসারিত হবে। এই সঙ্কট নিরশনে কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারকে যথাযথ পদক্ষেপ করতে হবে।
এ প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, “আমরা ভাবনা চিন্তা করছি। তার আগে নিয়ম-কানুন ও বিধি খতিয়ে দেখতে হবে।”
ওডিশা আবার হাঁটছে অন্য পথে। তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছে, আপাতত বছরে তিনটি করে টেট হবে। কর্মরত শিক্ষকেরাও এতে বসতে পারবেন। প্রাথমিক ও উচ্চ প্রাথমিক স্তরে এই পরীক্ষা নেয় ওডিশা বোর্ড অফ সেকেন্ডারি এডুকেশন (ওবিএসই)। কর্মরতদের জন্য টেটের নাম দেওয়া হয়েছে ‘স্পেশাল ওডিশা টিচার্স এলিজিবিলিটি টেস্ট’ (এসওটেট)। ঝাড়খণ্ডও একই পথে হাঁটতে চলেছে।
বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল বলেন, “এ রাজ্যের শিক্ষকেরা এমনিতেই দুশ্চিন্তায়। তার উপর এই সিদ্ধান্ত তাঁদের ভবিষ্যৎ আরও অনিশ্চিত করে তুলেছে। শিক্ষক সংগঠনগুলি আইনি পদক্ষেপের কথা এখনও ভেবেই উঠতে পারেনি। কিন্তু রাজ্যকে তো কিছু করতে হবে। আমরা শুক্রবার মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছি এই বিষয় নিয়ে দ্রুত অর্ডিন্যান্স জারি করে দেশের প্রায় চল্লিশ লক্ষ শিক্ষককে স্বস্তি দেওয়ার দাবি জানিয়ে।”