আর শুধু অনশন নয়। এ বার আন্দোলনের ঝাঁঝ বাড়াতে দিল্লির পথে পা বাড়াতে চান চাকরিহারারা। পাশাপাশি ডাক দেওয়া হয়েছে নবান্ন অভিযানেরও। বৃহস্পতিবার এমন ঘোষণাই করা হল ‘যোগ্য শিক্ষক-শিক্ষিকা অধিকার মঞ্চ’-এর তরফে।
১৩ জুন মধ্যরাত থেকে আমরণ অনশনে বসেছিলেন যোগ্য শিক্ষক-শিক্ষিকা অধিকার মঞ্চের প্রতিনিধিরা। মাঝে একের পর এক অনশনকারী অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁদের জায়গায় যোগ দেন অন্য শিক্ষক-শিক্ষিকারা। বৃহস্পতিবার সকালে আরও ১৮ জন নতুন করে অনশন অবস্থানে বসেন। সেখানে আগে থেকে উপস্থিত ছিলেন আরও দু’জন। পাশাপাশি, অনশন আন্দোলনের সমর্থনে নাগরিক সমাজ, বুদ্ধিজীবী-সহ সমাজের বিভিন্ন স্তরের বিশিষ্ট জনেদের প্রতীকী অনশনের জন্য আহ্বান জানান তাঁরা। উপস্থিত থাকার কথা ছিল কৌশিক সেন, বোলান গঙ্গোপাধ্যায়, পবিত্র সরকার, চন্দন সেন-সহ অন্যান্য নামী ব্যক্তিত্ব। কিন্তু শেষমেশ দেখা যায়, মীরাতুন নাহার, চিকিৎসক সংগঠন, প্রাক্তন বিচারপতিরা ছাড়া অধিকাংশ মানুষই তাঁদের ডাকে সাড়া দিয়ে সেখানে উপস্থিত হননি। আর তাই আন্দোলনকে আরও বৃহত্তর ক্ষেত্রে নিয়ে যাওয়ার জন্য অন্য পন্থার ভাবনা যোগ্য শিক্ষক-শিক্ষিকা অধিকার মঞ্চের।
আরও পড়ুন:
অবশেষে, বৃহস্পতিবার সন্ধেবেলা সাংবাদিক বৈঠকে আমরণ অনশন প্রত্যাহারের ঘোষণা করা হয় মঞ্চের তরফে। তবে জানানো হয়েছে, আন্দোলন এখানেই শেষ নয়। বরং আরও তীব্রতর হবে। এর জন্য ১৪ জুলাই নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়েছেন ‘যোগ্য’ শিক্ষকরা। তার পরের সপ্তাহে দিল্লিতে পর পর তিনদিন মহাআন্দোলনের ডাক দিয়েছেন তাঁরা। এর মাধ্যমে সমাজের বৃহত্তর অংশের কাছে তাঁদের ন্যায্য দাবির কথা তুলে ধরতে চান। বর্তমানে যে প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতির শিকার হয়েছেন তাঁরা, তা দেশের মানুষকে জানাতে চান।
চাকরিহারা শিক্ষিকা সঙ্গীতা সাহা বলেন, “আমাদের পাশে থাকার জন্য বিশিষ্টজনদের আহ্বান করা হয়েছিল। তাঁরা অনেকে আসবে বলেও এলেন না। এদিকে তাঁরা নিজেদের বুদ্ধিজীবী ও সমাজকর্মী বলে গর্ব করেন। এত বড় দুর্নীতির পরেও আমাদের পাশে দাঁড়ালেন না। আমার মনে হয়, তাঁরা রাজনীতি ও রাজনৈতিক রঙ চরিতার্থ করার জন্য আজকে আমাদের পাশে দাঁড়াননি। তাই আমরা সর্বাত্মক আন্দোলন চালাব।”
উল্লেখ্য, টানা ২১ দিন ধরে অনশনে ‘যোগ্য’ শিক্ষক শিক্ষিকারা। প্রথমে বিকাশ ভবনের সামনে তারপর আদালতের নির্দেশে সল্টলেকে সেন্ট্রাল পার্কের গায়ে অনশন করছিলেন তাঁরা। পাশাপাশি চলছিল অবস্থান-বিক্ষোভও। আমরণ অনশন প্রত্যাহার করলেও অবস্থান চলবে বলেই জানিয়েছেন ‘যোগ্য শিক্ষক-শিক্ষিকা অধিকার মঞ্চ’-এর প্রতিনিধিরা।