বদলাচ্ছে জলবায়ু। তার সঙ্গে সাযু্জ্য রেখে পরিবেশের সুরক্ষা প্রয়োজন। তাই পড়ুয়াদের নিয়ে এ বার স্কুলে স্কুলে সবুজ আন্দোলন গড়ে তোলার কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে সারা দেশে। এ বার স্কুল শিক্ষা দফতরও এই ‘এক পেড় মা কে নাম’ কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছে। এই নামের বাংলা তরজমা করলে দাঁড়ায়, ‘মায়ের নামে একটি গাছ’।
পশ্চিমবঙ্গ সমগ্র শিক্ষা মিশনের তরফ থেকে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানানো হয়েছে, চলতি মাসের ৫ তারিখ থেকে সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে সমস্ত স্কুলগুলিকে ইকো ক্লাব গঠন করতে হবে। প্রত্যেক স্কুলের নিজস্ব প্রাঙ্গনে ৭০ টি গাছ রোপন করতে হবে। যে সমস্ত স্কুলে পর্যাপ্ত জায়গা নেই তাদেরকে কোনও উদ্যান বা রাস্তার ধারে, ফুটপাথে বৃক্ষরোপনের কাজ করতে হবে বলে জানান হয়েছে। কোন স্কুল কতগুলি গাছ লাগাচ্ছে এই চার মাসে তার উপর হিসাব রাখার জন্য সরকারের তরফ থেকে একটি বিশেষ পোর্টালও খোলা হয়েছে।
আরও পড়ুন:
নারায়ণচন্দ্র দাস বাঙ্গুর স্কুলের প্রধান শিক্ষক সঞ্জয় বড়ুয়া বলেন, “আমাদের স্কুলে আগেই ইকো ক্লাব ছিল। গত বছরই স্কুল প্রাঙ্গণে ২০০ টি গাছ লাগিয়েছিলাম। কিন্তু রাজ্যের অনেক স্কুলেই এই ব্যবস্থা নেই। এটি অত্যন্ত ভাল উদ্যোগ।”
এর বাইরে আগামী চার মাসে শক্তি বাঁচাও, জল বাঁচাও, প্লাস্টিক মুক্ত দুনিয়া, ই-জঞ্জাল কমান-এর মতো বিষয়ে কাজ করা হবে। এ ছাড়া স্বাস্থ্যকর জীবন গড়ে তোলা ও স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভাস নিয়ে সচেতনতা প্রচার করতেও বাচ্চাদের নিয়ে বিভিন্ন ক্লাস করা হবে স্কুলগুলিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, পরিবেশ রক্ষায় ও জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে যুঝতে রাজ্যের স্কুলগুলিতে গত বছর সাতদিনব্যাপী সামার ক্যাম্পের আয়োজন করা হয়েছিল। ‘মিশন লাইফ (লাইফস্টাইল ফর এনভায়রনমেন্ট)’ প্রকল্পের উপরেই ৫ থেকে ১২ জুন পর্যন্ত রবিবার বাদে প্রতি দিনই মিশন লাইফের সাতটি থিমের উপর নানা কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছিল। লক্ষ্য ছিল, পরিবেশবান্ধব প্রকল্পের প্রতি স্কুলের পড়ুয়াদের আগ্রহ বাড়ানো। পরিবেশের সমস্যাগুলি সম্পর্কে সংবেদনশীলতা গড়ে তোলা ও সেই সমস্যার সমাধানের জন্য সঠিক মনোভাব গড়ে তোলা।
যদিও বেশ কিছু শিক্ষক সংগঠনগুলির বক্তব্য, বাম আমলে এই প্রকল্প চালু ছিল। তারপর বর্তমান সরকারের আমলে এই প্রকল্পের গতি অনেকটাই কমে যায়। বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল বলেন, “বাম আমলে অনেক স্কুল নিজেরাই উদ্যোগী হয়ে স্কুলে ইকো ক্লাব বানিয়ে ছাত্র ছাত্রীদের উৎসাহিত করত ভাল কাজ করার জন্য। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর ছাত্র ছাত্রীদের শুধু উপভোক্তা বানিয়েছে। জঙ্গল, নদী জলাজমি প্রায় শেষ করে দিয়েছে। তবে এই উদ্যোগ ভাল। প্রতিটি স্কুল যাতে এটা করে তা নজরদারির মধ্যে রাখতে হবে।”