মার্কেটিং মানেই কেনাবেচা। চাকরির বাজারে ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে মার্কেটিং দক্ষতার কদর। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম-এর ‘ফিউচার অফ জবস রিপোর্ট ২০২৫’ অনুযায়ী, প্রযুক্তিগত উন্নতিকে হাতিয়ার করেই মার্কেটিং দুনিয়ায় পেশাদারদের চাহিদা বেড়েছে। সমীক্ষা রিপোর্ট বলছে, আফ্রিকা, ইউরোপ, আমেরিকার বিভিন্ন দেশে মার্কেটিং-এ দক্ষদের চাহিদা সব থেকে বেশি রয়েছে।
গত ১০ বছরে আন্তর্জাতিক স্তরে ভোগ্যপণ্যের উৎপাদন বেড়েছে বহু গুণ। প্রায় ৫ লক্ষেরও বেশি ব্র্যান্ড আন্তর্জাতিক বাজারে ব্যবসা করছে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, শুধুমাত্র এই দেশেই পণ্য, পরিষেবায় ডিজিটাল মার্কেটিং-এর জন্য প্রতি বছর ৩-৭০ লক্ষ টাকা খরচ করা হয়ে থাকে।
তাই মার্কেটিং নিয়ে কাজ করতে আগ্রহীরা যে কোনও ক্ষেত্র থেকেই কাজ শুরু করতে পারেন। তবে, এ জন্য তাঁদের মার্কেটিং, বিজ়নেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন, ডিজিটাল মার্কেটিং, ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ়, বিষয়ে স্নাতক বা স্নাতকোত্তর স্তরের ডিগ্রি থাকা প্রয়োজন। এই বিষয়গুলি নিয়ে স্নাতক বা স্নাতকোত্তর স্তরে ভর্তি হওয়ার জন্য যে কোনও বিভাগে দ্বাদশ উত্তীর্ণেরা আবেদনের সুযোগ পাবেন।
— প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
কী ভাবে শুরু করবেন পড়াশোনা?
স্নাতক বা স্নাতকোত্তর স্তরে ভর্তি হওয়ার জন্য কিছু কিছু কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রবেশিকা পরীক্ষা নিয়ে থাকে। কমন অ্যাডমিশন টেস্ট (ক্যাট), কমন ম্যানেজমেন্ট অ্যাডমিশন টেস্ট (সিম্যাট), ম্যানেজমেন্ট অ্যাপটিটিউড টেস্ট (ম্যাট), গ্র্যাজুয়েট ম্যানেজমেন্ট অ্যাপটিটিউড টেস্ট (জিম্যাট) — এই সমস্ত পরীক্ষায় পাশ করতে পারলে উল্লিখিত কোর্সে ভর্তি হতে পারবেন আগ্রহীরা।
সরকারি বা বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সুযোগ কেমন?
সরকারি এবং বেসরকারি বেশ কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মার্কেটিং কিংবা সমতুল বিষয়ে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের সুযোগ মেলে। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য— ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ ম্যানেজমেন্ট (আইআইএম), ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি (আইআইটি), ইন্ডিয়ান স্কুল অফ বিজ়নেস, ইনস্টিটিউট অফ ম্যানেজমেন্ট টেকনোলজি।
শুধু পড়াশোনাই কি যথেষ্ট নয় ?
তবে, শুধুমাত্র পড়াশোনাই যথেষ্ট নয়। এই বিষয়ে দক্ষ হয়ে ওঠার জন্য নিয়মিত চর্চা এবং পোর্টফোলিও তৈরি করা প্রয়োজন। যাঁরা ব্র্যান্ড ম্যানেজমেন্ট নিয়ে কাজ করতে চান, তাঁরা আইআইটি দিল্লি, ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ মাস কমিউনিকেশন-এর কোর্স করতে পারেন। ওই কোর্সের মাধ্যমে পড়ুয়াদের বাজারে বাস্তব পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।
দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য কী করতে হবে?
যাঁরা রিসার্চ, অ্যানালিটিক্যাল স্কিল বৃদ্ধির কথা ভাবছেন, তাঁরা বিজ়নেস অ্যানালিটিক্স কিংবা মার্কেটিং অ্যানালিটিক্স নিয়ে চর্চা করতে পারেন। এ ক্ষেত্রে সাহায্য করতে পারে গুগল অ্যানালিটিক্স, ডেটা স্টুডিয়ো-র মতো টুল।
— প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
কী কাজ করতে হবে?
মূলত ক্রেতা কী ভাবছেন, তাঁদের চাহিদা কেমন— তা নির্ধারণ করে বিশেষজ্ঞের মার্কেটিং সংক্রান্ত দক্ষতার উপর। তিনি কোনও সামগ্রী বা পরিষেবা নিয়ে কী ভাবে বাজারে প্রচার করবেন, কোন পদ্ধতিতে তা মানুষের কাছে পৌঁছে দেবেন, তা নিয়মিত অভ্যাস এবং দক্ষতা বৃদ্ধি করতে পারার উপর নির্ভর করে।
ডিজিটাল যুগে মার্কেটিং-এর কাজের ধরন বদলেছে। ব্র্যান্ডিং, কন্টেন্ট স্ট্যাটেজি, সমাজমাধ্যমও বিজ্ঞাপনের মাধ্যম হয়ে উঠেছে। তাই ওই মাধ্যমকে কী ভাবে ব্যবহার করা যেতে পারে, কী কী বিষয় ট্রেন্ডে রয়েছে, তা নিয়েও ওয়াকিবহাল থাকতে হবে।