চলছে গুলির লড়াই।
কেনিয়ার গারিসায় ‘গারিসা ইউনিভার্সিটি কলেজে’ হামলা চালাল আল-শাবাব জঙ্গিরা। বৃহস্পতিবার মুখোশধারী জঙ্গিদের এই হামলায় এখনও পর্যন্ত ৭০টি দেহ উদ্ধার হয়েছে। আহত হয়েছেন অন্তত ৭৯ জন। জঙ্গিরা বেশ কয়েক জনকে পণবন্দি করেছিল। পণবন্দিদের উদ্ধার করতে কেনিয়ার সেনা অভিযান চালিয়েছে। এতে চার জঙ্গির মৃত্যু হয়েছে বলে খবর। হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
কেনিয়ার উত্তর-পূর্বে, রাজধানী নাইরোবি থেকে ৩৮০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত গারিসা অঞ্চলের এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১১ থেকে পঠন-পাঠন শুরু হয়। পডুয়ার সংখ্যা প্রায় এক হাজার। গারিসা থেকে সোমালিয়া সীমান্ত ১৫০ কিলোমিটার দূরে। এ দিন সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাঙ্গণে ঢুকে পড়ে বেশ কয়েক মুখোশধারী জঙ্গি। বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল প্রবেশদ্বার দিয়ে ঢোকার সময়ে তারা দু’জন নিরাপত্তারক্ষীকে হত্যা করে। বাকি নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে তাদের গুলির লড়াই শুরু হয়। এর পরে মুহূর্মূহু গুলির শব্দ শোনা যেতে থাকে। শোনা যায় বিস্ফোরণের শব্দও। পরে ‘কেনিয়ান ডিফেন্স ফোর্স’ (কেডিএফ) অঞ্চলটি ঘিরে ফেলে। জঙ্গিদের সঙ্গে শুরু হয় গুলির লড়াই। এখনও লড়াই চলছে।
বেরিয়ে আসছেন ছাত্রছাত্রীরা।
কেনিয়ার রেড ক্রস সূত্রে খবর, ৫০ জন পড়ুয়াকে নিরাপদে বের করে আনা সম্ভব হয়েছে। এ ছাড়া ৭৯ জনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে একের পর এক অ্যাম্বুল্যান্স যাতায়াত করছে। স্থানীয় সূত্রে খবর, বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের ভিতরে বেশ কিছু মৃতদেহ পড়ে আছে। বেশ কয়েক জনকে পণবন্দিও করেছে জঙ্গিরা। জঙ্গিদের বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যেই আটকে ফেলা সম্ভব হয়েছে বলে জানিয়েছে কেনিয়া পুলিশ। অসমর্থিত সূত্রে খবর, এক জঙ্গি পালানোর সময়ে ধরা পড়েছে।
আল-শাবাবের অন্যতম মুখপাত্র শেখ আলি মহম্মদ রাগে ঘটনার দায় স্বীকার করে নিয়েছে। পাশের দেশ সোমালিয়ায় আল-শাবাবের বিরুদ্ধে লড়াই করছে কেনিয়ার সেনা। তার বদলা নিতে এই আক্রমণ বলে জানিয়েছে শেখ আলি। বেশ কয়েকজন খ্রিষ্টান পড়ুয়াকে বন্দি করে পণ দাবি করেছে ওই জঙ্গি। তবে ঠিক কত জন পড়ুয়া পণবন্দি আছেন তা এখনও জানা যায়নি। এর আগেও কেনিয়ায় আঘাত হেনেছে আল-শাবাব। ২০১৩-এ আল-শাবাবই নাইরোবির শপিংমলে হামলা চালিয়েছিল।
প্রতক্ষ্যদর্শীরা পাঁচ জন মুখোশধারী জঙ্গিকে ঢুকতে দেখেছেন। ক্যাম্পাসের ভিতরে আরও মৃতদেহ পড়ে থাকার কথা জানিয়েছেন প্রতক্ষ্যদর্শীরা। কেনিয়া প্রশাসন সূত্রে খবর, এ দিন বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্যাম্পাসে ৮২৫ জন পড়ুয়া উপস্থিত ছিলেন। এর মধ্যে এখনও ২৮০ জনের খোঁজ মিলেছে। পালিয়ে আসা কয়েক জন পড়ুয়া জানিয়েছেন, জঙ্গিরা বিশ্ববিদ্যালয়ে ডর্মিটরিতে ঢুকে পড়েছে। জঙ্গিরা যে ভাবে এলোপাথাড়ি গুলি চালিয়েছে তাতে হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা। গারিসায় দোকান-বাজার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সরকারের তরফে সাধারণ মানুষকে বাড়িতে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
ছবি: এএফপি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy