Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

ক্লার্কের হাত ধরে বিশ্বজয় অস্ট্রেলিয়ার

নিউজিল্যান্ডকে সাত উইকেটে হারিয়ে বিশ্বসেরার শিরোপা দখল করল অজিরা। সেই সঙ্গে মাইকেল ক্লার্ক দেখিয়ে দিয়ে গেলেন ‘মরিয়াও মরেন নাই তিনি’। ভারতের বিরুদ্ধে সেমিফাইনালে জেতার পর ওয়ানডে থেকে অবসরের কথা ঘোষণা করেছিলেন তিনি। চোট সমস্যা ও পারফরম্যান্স নিয়ে জর্জরিত ক্লার্ক দিনে দিনে নির্বাচকদের চক্ষুশূল হয়ে উঠেছিলেন।

বিশ্বজয়ী অস্ট্রেলিয়া। ছবি: এএফপি।

বিশ্বজয়ী অস্ট্রেলিয়া। ছবি: এএফপি।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৯ মার্চ ২০১৫ ১৬:১১
Share: Save:

নিউজিল্যান্ডকে সাত উইকেটে হারিয়ে বিশ্বসেরার শিরোপা দখল করল অজিরা। সেই সঙ্গে মাইকেল ক্লার্ক দেখিয়ে দিয়ে গেলেন ‘মরিয়াও মরেন নাই তিনি’। ভারতের বিরুদ্ধে সেমিফাইনালে জেতার পর ওয়ানডে থেকে অবসরের কথা ঘোষণা করেছিলেন তিনি। চোট সমস্যা ও পারফরম্যান্স নিয়ে জর্জরিত ক্লার্ক দিনে দিনে নির্বাচকদের চক্ষুশূল হয়ে উঠেছিলেন। তিনি নিশ্চিত ছিলেন এ বার তাঁকে ছেঁটে দেওয়ার পালা চলে এসেছে। কিন্তু যাওয়ার আগে নির্বাচক ও সমালোচকদের কাছে তিনি প্রমাণ করে দিয়ে গেলেন এখনও দলে তিনি অপরিহার্য। এ দিন মাঠে যখন তিনি বক্তব্য রাখছিলেন সেই সময় তাঁকে খানিকটা আবেগঘন দেখাচ্ছিল। ক্রিকেটীয় জীবনের শেষ ওয়ানডে তিনি যেন ধনুক ভাঙ পণ করেছিলেন, ট্রফি এনে দেবেন তাঁর দেশের কাছে। আর করলেনও সেটাই। কোনও যে সে টুর্নামেন্ট নয়, বিশ্বসেরার শিরোপা উঠে এল তাঁর হাত ধরেই। ওয়ানডেতে আর ক্লার্ককে মাঠে দৌড়তে দেখা যাবে না ঠিকই, তবে তিনি স্মরণীয় হয়ে থাকবেন তাঁর অদম্য অধিনায়কত্বের জন্য। অনেক ঝড় সামলে, সমালোচনা সহ্য করে হয়ত এই দিনটার জন্যই অপেক্ষা করেছিলেন! প্রতিশোধ নিলেন দেশের হাতে বিশ্বকাপ তুলে দিয়ে। পুরো টুর্নামেন্টে তাঁর ব্যাট থেকে তেমন রান আসেনি। কিন্তু ওয়ানডের শেষ ম্যাচে ব্যাটেও তিনি ঝলসে ওঠেন। ৭৪ রান করে আউট হন তিনি।

গত দু’দিন ধরেই মেলবোর্নের ফাইনালকে নিয়ে উত্তেজনার পারদ ছিল তুঙ্গে। কার হাতে এ বারের কাপ উঠবে— এই নিয়ে তাসমান সাগরের দু’পার তোলপাড় হয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার পাল্লা প্রথম থেকেই ভারী ছিল, কিন্তু টুর্নামেন্টের শুরু থেকে কিউয়িদের অদম্য পারফরম্যান্স দেখে ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা তাদের এই লড়াইয়ে অনেকটাই এগিয়ে রেখেছিলেন। কিন্তু রবিবার ফাইনালে কিউয়িদের পারফরম্যান্স গোটা টুর্নামেন্টের তুলনায় অনেকটাই ফিকে দেখিয়েছে। অজিরা প্রথম থেকেই হুঙ্কার দিয়ে আসছিলেন মেলবোর্নের মতো বিশাল মাঠে কিউয়িরা কিছুই করে উঠতে পারবে না। এ দিন তাদের সেই ভবিষ্যদ্বাণীই সত্যি করে ছাড়ল অজিরা।

সেমিফাইনালে প্রোটিয়াদের বিরুদ্ধে জিতে ফাইনালে উঠে কিউয়ি অধিনায়ক ব্রেন্ডন ম্যাককলাম বলেছিলেন, “ফাইনালে জিতে আটে আট করতে চাই।” কিন্তু সেই স্বপ্ন পূরণ হল না ম্যাকলামের। সেই সঙ্গে বিশ্বকাপ জেতার দোরগোড়ায় এসেও খালি হাতে ফিরে যেতে হল তাঁকে।

এ দিন কানায় কানায় ভর্তি ছিল মেলবোর্ন স্টেডিয়াম। হাজার হাজার সমর্থকদের চিত্কারে ফেটে পড়ছিল স্টেডিয়ামের প্রতিটি কোণা। কিউয়িরা সচেষ্ট ছিল অজিদের ঘরের মাঠে এসে রাজকীয় ভঙ্গিতে ম্যাচ জিতে দেশকে বিশ্বকাপ উপহার দেওয়ার। দেশের বাইরে এটাই ছিল এ বারের বিশ্বকাপে তাদের প্রথম ম্যাচ। দেশের মাটিতে অজিদের গুঁড়িয়ে দিলেও অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে অস্ট্রেলিয়াকে হারানো, এটা নিয়েও তাদের মধ্যে অল্পবিস্তর টেনশন কাজ করছিল। বিশাল অজি সমর্থকদের সামনে মেলে ধরার কঠিন পরীক্ষায় উতরানো একটা চ্যালেঞ্জ ছিল ম্যাককলামের কাছে। কিন্তু এ দিন সেই চাপের কাছেই হার মানতে হল কিউয়িদের। টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানরা একের পর এক ধরাশায়ী হন স্টার্ক-জনসন-হ্যাজেলউজের কাছে। ম্যাককলাম তো খাতাই খুলতে পারেননি। শূন্য রানে আউট হয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন। ব্যর্থ হন গাপ্টিল-রঞ্চিরা। যাঁদের উপর সবচেয়ে ভরসা ছিল কিউয়িদের সেই ব্যাটসম্যানরা ধরাশায়ী হওয়ায় ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারণ হয়ে যায়। ১৮৩ রানে অল আউট হয়ে যায় নিউজিল্যান্ড। চ্যালেঞ্জ ছোড়ার মতো রান তুলতে না পারায় অনেকটা একপেশে খেলা হয় এ দিন। ঠিক ভারতের বিরুদ্ধে যেমনটা করেছিল অজিরা। এ দিন সেই ভাবেই কিউয়িদের কোণঠাসা করে অজি পেস ব্যাটারি। তিনটে করে উইকেট নেন ফকনার ও জনসন। দু’টি উইকেট নেন স্টার্ক। ম্যান অব দ্য টুর্নামেন্ট হন স্টার্ক।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

নিউজিল্যান্ড-১৮৩ (৪৫ ওভার)

অস্ট্রেলিয়া-১৮৬/৩ (৩৩.১ ওভার)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

australia newzealand worldcup2015
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE