তাঁর কাজ মূলত ফ্রান্সে নাৎজি দখল আর তার প্রভাব নিয়ে। স্মৃতি, বিস্মৃতি, পরিচয় এবং অপরাধ বোধের হাত ধরে তিনি পাঠককে নিয়ে যান মানবজীবনের অধরা ভাগ্যের দিকে, উন্মোচিত করেন নাৎজি দখলকে। এ বার সাহিত্যের নোবেল পেলেন ফ্রান্সের সেই সাহিত্যিক প্যাট্রিক মডিয়ানো।
প্যারিসের শহরতলিতে ১৯৪৫-এ জন্ম মডিয়ানোর। সবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হয়েছে। বাবা ছিলেন ব্যবসায়ী, আর মা অভিনেত্রী। ছোটবেলায় বেশির ভাগ সময়ে বাবাকে কাছে পাননি। মা-ও ব্যস্ত থাকতেন অভিনয় নিয়ে। তাঁর একমাত্র সঙ্গী ছিল ভাই রুডি। কিন্তু ১০ বছর বয়সে সেই ভাইকেও হারান তিনি। তাঁর লেখাকে গভীর ভাবে প্রভাবিত করেছে এই শৈশব।
প্যাট্রিকের লেখায় বার বার উঠে এসেছে প্যারিস। তবে শুধু স্থান হিসেবে নয়, প্যারিস যেন তাঁর কাজের সঙ্গী। তাঁর অনেক লেখা আত্মজীবনীর মতো। সেখানে ধরা পড়েছে জার্মান আগ্রাসনের ছবি। কাজের জন্য সংবাদপত্রের খবর, নানা সাক্ষাৎকার বা নিজের দীর্ঘ দিন ধরে জমানো নোট ব্যবহার করেন তিনি। উপন্যাসগুলির মধ্যেও পারস্পরিক সম্পর্ক থাকে। কখনও এক উপন্যাসের চরিত্র অন্য উপন্যাসে ঢুকে পড়ে। তাঁর নিজের শহর ও ইতিহাস কখনও কখনও গল্পের মধ্যে সংযোগ গড়ে তোলে। যেমন, আত্মজীবনীর ঢঙে লেখা ডোরা ব্রুডের (১৯৯৯)। জার্মান দখলের সময়ে প্যারিসের ১৫ বছরের এক কিশোরীর সত্যি গল্প নিয়ে গড়ে ওঠে উপন্যাস। এই কিশোরী ইহুদি গণহত্যার শিকার হয়।
ইংরেজিতেও তাঁর কাজের অনুবাদ হয়েছে। তিনি ছোটদের জন্য বই আর চলচ্চিত্রের স্ক্রিপ্টও লিখেছেন। তবে সাধারণত গণমাধ্যমকে এড়িয়ে চলতে ভালবাসেন। সাক্ষাৎকার দিতেও বিশেষ পচ্ছন্দ করেন না। এই নিয়ে ফ্রান্সের ১১ জন সাহিত্যিক নোবেল পুরস্কার পেলেন।