Advertisement
E-Paper

আমেরলি দখলমুক্ত করতে ইরাকে মার্কিন বিমান হামলা

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ৩১ অগস্ট ২০১৪ ১৭:২৩
আমেরলি-র বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে যাচ্ছে ইরাকি সেনার হেলিকপ্টার। ছবি: রয়টার্স।

আমেরলি-র বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে যাচ্ছে ইরাকি সেনার হেলিকপ্টার। ছবি: রয়টার্স।

দু’মাস পরে মুক্তির আশা দেখছেন উত্তর ইরাকের আমেরলি-র বাসিন্দারা। অবশেষে রবিবার সকালে আমেরলি-তে আইএস জঙ্গিদের উপরে বিমান আক্রমণ চালাল আমেরিকা। দু’মাস ধরে ইসলামিক স্টেটের (আইএস) জঙ্গিরা এই শহরকে অবরুদ্ধ করে রেখেছে। এই শহরের ১৫ হাজার বাসিন্দার মধ্যে অধিকাংশই শিয়া তুর্কমেন সম্প্রদায়ের।

উত্তর ইরাকে আইএস অভিযানে সবচেয়ে বেশি বিপদে পড়েছেন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষরা। খ্রিস্টান, ইয়াজিদিদের মতো সংখ্যালঘুদের শুধু ঘরই যায়নি, গণহত্যা, জোর করে ধর্মান্তকরণের মতো ঘটনাও তাঁদের সঙ্গে ঘটেছে। একই ভাবে এ বার বিপন্ন শিয়া সম্প্রদায়ের তুর্কমেনরাও। উত্তর ইরাকের আমেরলি অঞ্চলে তাঁদের বাস। আই এস জঙ্গিরা এই শহরটিকে গত দু’মাস ধরে অবরুদ্ধ করেছিল। বিদ্যুৎ ছিল না। জল সরবরাহ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। দ্রুত ফুরিয়ে আসছিল খাদ্যও। অবস্থা এতই খারাপ হয়ে ছিল যে রাষ্ট্রপুঞ্জের তরফ থেকেও শিয়া তুর্কমেনদের অবস্থা নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছিল। রাষ্ট্রপুঞ্জ অবরুদ্ধ শহরের বাসিন্দাদের উদ্ধারের জন্য ইরাক সরকার এবং আন্তর্জাতিক মহলের কাছে আবেদনও করেছিল। আমেরলির বাসিন্দাদের উদ্ধার করা না হলে গণহত্যাও ঘটতে পারে বলে রাষ্ট্রপুঞ্জ জানিয়েছিল। কারণ, শিয়া তুর্কমেনদেরও ঈশ্বরবিরোধী বলে মনে করে আইএস জঙ্গিরা।

তবে আমেরলির বাসিন্দারা আইএস জঙ্গিদের এখন পর্যন্ত ঠেকিয়ে রাখতে সক্ষম হয়েছে। এ বার তাদের সাহায্যের জন্য এগিয়ে এসেছে আমেরিকা। পেন্টাগন জানিয়েছে, এ দিন সকালে মার্কিন যুদ্ধবিমান আমেরলির অবরোধ ভাঙতে এর আশেপাশে আইএস জঙ্গিদের অবস্থানের উপরে হামলা চালায় বলে পেন্টাগন জানিয়েছে। এই আক্রমণে আইএস জঙ্গিদের বেশ কয়েকটি সাঁজোয়া গাড়ি, ট্যাঙ্ক ও হামভি ধ্বংস হয়েছে। এর পাশাপাশি বাসিন্দাদের জন্য ত্রাণ সামগ্রীও ফেলা হয়েছে। আমেরিকা ছাড়া ফ্রান্স, অস্ট্রেলিয়া, ব্রিটেনের বিমানও ত্রাণসামগ্রী সরবরাহ করে। আমেরলির পাশাপাশি মসুল বাঁধের কাছেও ফের হামলা চালায় মার্কিন বায়ুসেনা। সেখানে আইএস-এর কয়েকটি অবস্থান, সাঁজোয়া গাড়ির উপরে হামলা হয়।

তবে শুধু বিমান আক্রমণই নয়, আমেরলির বাসিন্দাদের উদ্ধারের জন্য স্থলপথেও অভিযান চলছে। এ ক্ষেত্রে দু’দিক থেকে অভিযান হচ্ছে। দক্ষিণ থেকে ইরাকি সেনা, শিয়া মিলিশিয়ারা যৌথ ভাবে মারিন পাহাড় দখলের চেষ্টা করছে। এই পাহাড়ের উত্তরের সমতলে ১৫ কিলোমিটার দূরে আমেরলি শহর। উত্তর থেকে কুর্দ পেশমেরগা যোদ্ধা ও শিয়া মিলিশিয়ার একের পরে এক গ্রাম পুনরুদ্ধার করতে করতে নীচে নেমে আমেরলিকে দখল মুক্ত করতে চেষ্টা করছে। তবে আইএস জঙ্গিরা পথে মাইন বিছিয়ে রেখেছে। রাখা আছে বুবি-ট্র্যাপও। খুব ধীরে ধীরে এগোতে হচ্ছে এবং লড়াইও হচ্ছে জোরদার। যেমন, শিয়া মিলিশিয়ারা এ দিন সালাম গ্রামটি দখল করলেও পরে আইএস জঙ্গিরা আবার গ্রামটি ছিনিয়ে নেয়। বিশেষজ্ঞদের মতে স্থলপথে আমেরলির কাছে যেতে আরও সময় লাগবে। তবে এর মধ্যে মার্কিন বায়ুসেনার আক্রমণ আইএস কে দুর্বল করে আমেরলির বাসিন্দাদের প্রতিরোধে সহায়তা করবে বলেও আশা। এ দিকে ইয়াজিদিদের গ্রাম থেকে অপহৃত নারীদের বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ উঠল আইএস জঙ্গিদের বিরুদ্ধে। এঁদের ধর্মান্তকরণের পরে জঙ্গিদের সঙ্গে অর্থের বিনিময়ে বিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে এই অঞ্চলে কর্মরত মানবাধিকার সংগঠনগুলি জানিয়েছে।

iraq isis us attack
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy