শেষমেশ একপ্রকার ‘বাধ্য’ হয়েই হাসপাতাল ছাড়তে হল পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্রকে। তবে হাসপাতালটা শুধু পরিববর্তন হল। ছিলেন এসএসকেএমে। রবিবার গেলেন আলিপুর জেল হাসপাতালে। পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্রের ঠিকানা এখন জেল হাসপাতালের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ৫ নম্বর বেডে। এ দিন সকাল ৭টায় এসএসকেএম ছাড়েন মদনবাবু। প্রিজন ভ্যানে নয়, পুলিশের আলাদা একটি গাড়িতে করে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় আলিপুর সেন্ট্রাল জেলে। এ দিন জেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এখনই মদনবাবুকে জেলের সেলে রাখা হচ্ছে না। তাঁদের দাবি, মদনবাবুর রাতে শ্বাসকষ্ট হওয়ায় অক্সিজেন দিতে হয়েছে। এ রকম অবস্থায় জেলের সেলে থাকা নিরাপদ নয়। তাই তিনি এখন থাকবেন জেল হাসপাতালেই।
সমস্ত রকম পরীক্ষার পর শনিবারেই এসএসকেএম হাসপাতাল সূত্রে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল মন্ত্রীর কোনও গুরুতর সমস্যা পাওয়া যায়নি। সেই মতো মদনবাবুর ডিসচার্জের চিঠিও তৈরি করা হয়। প্রথম দিকে জল্পনা শুরু হয় রাতেই মন্ত্রীকে জেলে নিয়ে যাওয়া হবে। কিন্তু একপ্রকার ঝামেলা এড়াতেই গভীর রাতে তাঁকে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
গত ১৯ ডিসেম্বর আলিপুর আদালতে তাঁকে তোলা হলে বিচারক জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন। আলিপুর জেলে পৌঁছেই সে দিন সন্ধেয় মদনবাবুর বুকে ব্যাথা ওঠে। তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় এসএসকেএমে। সেখানে ডাক্তারদের কাছে চোখে অন্ধকার দেখা, কেউ গলা টিপতে আসার মতো অবস্থার কথা জানান। তাঁকে ভর্তি করেও নেওয়া হয়। উডবার্ন ওয়ার্ডের কেবিনে তাঁর থাকার ব্যবস্থা করা হয়। সব রকম শারীরিক পরীক্ষার ব্যবস্থা করে দ্রুত একটি মেডিক্যাল বোর্ডও গঠন করে ফেলা হয় মদনবাবুর জন্য।
সিবিআইয়ের তলব করার পরই শারীরিক অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে বার বার তাদের ‘এড়িয়ে’ যাচ্ছিলেন তিনি। চিকিত্সার জন্য ভর্তি হন এসএসকেএমে। সুস্থ হয়ে ফিরে এসে সিবিআইয়ের কাছে হাজিরা দেওয়ার আশ্বাসও দিয়েছিলেন। অবশেষে যে দিন মদনবাবু সিবিআই দফতরে যান, সে দিনই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। ফের একই কারণ দেখিয়ে ভর্তি হন এসএসকেএমে। গত বারের মতো এ বারেও তড়িঘড়ি করে মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করে চিকিত্সা শুরু হয় মন্ত্রীর। জেলের পরিবেশ এড়াতেই তাঁর এই ‘নাটক’ বলে কটাক্ষ করতে শুরু করে বিরোধীরা। মেডিক্যাল রিপোর্টেও মন্ত্রীর তেমন কোনও গুরুতর সমস্যা ধরা না পড়ায় আরও চাপ বাড়াতে শুরু করেন বিরোধীরা। তারা প্রশ্ন তোলেন মদনবাবুর চিকিত্সায় নিযুক্ত চিকিত্সকদের ভূমিকা নিয়েও। প্রয়োজনে চিকিত্সকদেরও সিবিআই জেরা করতে পারে, এমন জল্পনাও শুরু হয়। সে ঝুঁকি এড়াতেই কি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মদনবাবুকে ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন সে বিষয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে রাজনৈতিক মহলে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy