Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

তীব্র হচ্ছে লড়াই, গাজায় মৃত বেড়ে ২০৭

গাজায় রাষ্ট্রসঙ্ঘের শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নিচ্ছেন প্যালেস্তিনীয়রা। ছবি: এএফপি।

গাজায় রাষ্ট্রসঙ্ঘের শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নিচ্ছেন প্যালেস্তিনীয়রা। ছবি: এএফপি।

সংবাদ সংস্থা
শেষ আপডেট: ১৬ জুলাই ২০১৪ ২০:৫৮
Share: Save:

মিশরের দেওয়া শান্তি প্রস্তাব ব্যর্থ হওয়ার পরে আক্রমণের তীব্রতা বাড়াচ্ছে ইজরায়েল। গাজায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০৭। মৃতদের অধিকাংশই সাধারণ নাগরিক।এ দিনের আক্রমণে পাঁচ মাসের একটি শিশুর মৃত্যু হয়েছে বলে প্যালেস্তিনীয় সূত্রে খবর। থেমে নেই হামাসও। তবে এ বার স্থলপথেও গাজায় অভিযান চালাতে পারে ইজরায়েল। পূর্ব ও উত্তর গাজায় লিফলেট ও ফোনে সাধারণ নাগরিকদের ঘর ছাড়তে বলায় এই আশঙ্কা আরও দৃঢ় হয়েছে। মঙ্গলবার অস্ত্রবিরতি শেষ হওয়ার পরে নতুন করে বিমান হানা শুরু করে ইজরায়েল। এ দিনও গাজা থেকে হামাস ২৬টি রকেট ছোড়ে বলে অভিযোগ করেছে ইজরায়েল। ‘আয়রন ডোম’ অধিকাংশ রকেট ধ্বংস করতে সক্ষম হলেও কয়েকটি রকেট আশদোদে আঘাত করেছে। এতে অবশ্য প্রাণহানির খবর মেলেনি।

এরই পাশাপাশি, ক্রমাগত ইজরায়েলি আক্রমণে গাজায় নাগরিক পরিষেবা সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছে বলে প্যালেস্তিনীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। গাজার কয়েকটি জায়গায় তীব্র জলকষ্ট শুরু হয়েছে বলে অভিযোগ। এমনিতেই দীর্ঘ দিনের ইজরায়েলি অবরোধে গাজার আর্থিক ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। রাষ্ট্রসঙ্ঘ সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রাণ বাঁচাতে বাসিন্দারা স্থানীয় স্কুলগুলিতে আশ্রয় নিয়েছেন। রাষ্ট্রসঙ্ঘের শিবিরগুলিতে শরণার্থী সংখ্যা বাড়ছে।

মঙ্গলবার মিশরের দেওয়া শান্তি প্রস্তাব মেনে অস্ত্রবিরতির ঘোষণা করেছিল ইজরায়েল। কিন্তু হামাস প্রথম থেকেই এই প্রস্তাবের বিরোধিতা শুরু করে। হামাসের সামরিক বিভাগ কোয়াসিম ব্রিগেড প্রস্তাবটি বাতিল করে রকেট হামলা চালাতে থাকে। ফলে ছ’ঘণ্টা পরে ফের বিমান হামলা চালায় ইজরায়েল। মঙ্গলবারই গাজার সেজাইয়া ও জেইটোউন প্রদেশের বাসিন্দারা ফোনে ইজরায়েলি সেনার সতর্কবার্তা পান। মঙ্গলবার রাতেই অনেক সন্ত্রস্ত বাসিন্দা ঘর ছেড়েছেন। অনেকেরই আশঙ্কা, এই বার্তার পরে শুধু বিমান হানা নয়, স্থলপথেও হামলা হতে পারে। গাজার সীমান্তে ইতিমধ্যে ইজরায়েল বিপুল সেনা সমাবেশ ঘটিয়েছে।

এ দিকে, মিশরের দেওয়া শান্তি প্রস্তাব মেনে নেওয়ায় দেশের ভিতরে প্রবল সমালোচনার মুখে পড়েন ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানেয়াহু। বিরোধী নেতাদের পাশাপাশি তাঁর সহকর্মীরাও শান্তি প্রস্তাব মেনে নেওয়ায় সমালোচনায় মুখর হন। বিদেশমন্ত্রী অ্যাভিগডোর লিবারম্যান যুদ্ধবিরতির বদলে অবিলম্বে গাজায় সেনা অভিযানের দাবি করেন। গাজা সীমান্তে সেনাদের সঙ্গে দেখা করার সময়ে ইজরায়েলের উপ-প্রতিরক্ষামন্ত্রী ড্যানি দানান যুদ্ধবিরতির সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করেন। এই মন্তব্যের জন্য বুধবার ড্যানি দানানকে মন্ত্রিসভা থেকে সরিয়ে দেন নেতানেয়াহু।

এ দিন হামাসের কয়েক জন নেতাকে লক্ষ করে হামলা চালান হয় বলে ইজরায়েলি সূত্রে খবর। হামলার পরে হামাসের নেতারা কী অবস্থায় আছেন তা অবশ্য জানা যায়নি। বিশেষজ্ঞদের মতে, ক্রমাগত বিমান হামলা চালিয়েও নেতানেয়াহু রকেট হামলা থামাতে পারেননি। ইজরায়েলের সামরিক বাহিনী সূত্রে খবর, হামাসের কর্মীরা গাজায় অনেক সুড়ঙ্গ তৈরি করেছেন। বিমান হামলার সময়ে এই সব সুড়ঙ্গে আত্মগোপন করে তাঁরা প্রাণ বাঁচাচ্ছেন। এই সুড়ঙ্গগুলি দিয়ে ইজরায়েলে ঢুকেও তাঁরা আক্রমণ চালাতে পারেন বলেও আশঙ্কা। এই সুড়ঙ্গগুলিকে ধ্বংস করতে অবিলম্বে স্থলপথে আক্রমণ প্রয়োজন বলে ইজরায়েলি সেনার দাবি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

israel gaza
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE