বৃষ্টিস্নাত। কলকাতায় রণজিত্ নন্দীর তোলা ছবি।
নিম্নচাপের জেরে রাজ্যজুড়ে ঝড়-বৃষ্টি-বজ্রপাত, আর তাতেই বেশ কয়েক জনের প্রাণ গেল। শনিবার বাজ পড়ে মুর্শিদাবাদেই পাঁচ জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতেরা হলেন হরিহরপাড়ার সরিফুল শেফ (৩৮) ও সফিকুল শেখ (২৯), রাইপুরের আলিম শেখ (৩০), রঘুনাথগঞ্জের কাঞ্চন দাস (৩৮), জঙ্গিপুরের পিয়ারুল শেখ (২৫)। অন্য দিকে, বৃষ্টির কারণে সাগরদিঘির মথুরাপুরে দেওয়াল চাপা পড়ে মৃত্যু হয়েছে এক জনের। রাণিগঞ্জে বাজ পড়ে মৃত্যু হয়েছে এক মহিলার। জখম হয়েছেন আরও এক জন।
আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস ছিলই। সেই মতো শনিবার সকালে আকাশ কালো করে বজ্রবিদ্যুত্-সহ বৃষ্টি নামে কলকাতা-সহ গোটা রাজ্যে। সঙ্গে প্রবল ঝোড়ো হাওয়া। এ দিন দুপুরের দিকে ৫০ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড় শুরু হতে পারে বলে সতর্কতা জারি করে আলিপুর আবহাওয়া দফতর। সতর্কতা জারি করা হয়েছে উত্তরবঙ্গের মালদহ-সহ দুই দিনাজপুর ও দক্ষিণবঙ্গের কয়েকটি জেলাতেও। তবে এটি কালবৈশাখী নয় বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদেরা।
হাওয়া অফিস সূত্রে খবর, বেশ কয়েক দিন ধরেই দক্ষিণবঙ্গের উপর তৈরি হওয়া নিম্নচাপ অক্ষরেখাটি উত্তরবঙ্গের দিকে সরতে থাকে। বাইরে থেকে প্রচুর জলীয় বাষ্প ঢুকে উত্তরবঙ্গ ও বিহারের উপর আরও জোরালো নিম্নচাপ তৈরি হয়। এই জলীয় বাষ্পের কারণেই গত কয়েক দিন ধরেই আবহাওয়া ছিল অস্বস্তিকর। বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণও ছিল স্বাভাবিকের থেকে বেশি। এই জলীয় বাষ্প ঘনীভূত হয়ে নিম্নচাপ অক্ষরেখাটি ফের দক্ষিণবঙ্গের দিকে এগিয়ে আসার ফলেই এ দিনের প্রবল বৃষ্টি এবং ঝোড়ো হাওয়া। স্বাভাবিক কারণেই সকাল থেকেই তাপমাত্রা নামতে শুরু করে। সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ কলকাতা ও সন্নিহিত এলাকায় তাপমাত্রা ছিল ৩১ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তাপমাত্রা আরও নামতে থাকে। সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ তাপমাত্রা নেমে আসে ২৩.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে।
জলমগ্ন হাওড়া। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার।
উপগ্রহ চিত্রে ধরা পড়েছে গোটা দক্ষিণবঙ্গের উপর ঘন মেঘের আস্তরণ তৈরি হয়েছে। তাই আজ সারাদিনই বৃষ্টি হবে বলে জানিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর। রবিবারও রাজ্যজুড়ে বিক্ষিপ্ত ভাবে বৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছেন তাঁরা।
তবে স্বস্তির বৃষ্টি হলেও কলকাতা ও হাওড়ার বিভিন্ন জায়গায় জল জমার ফলে রীতিমতো নাজেহাল নগরজীবন। প্রায় আধ ঘণ্টার প্রবল বৃষ্টিতে হাওড়ার নিচু এলাকাগুলিতে জল জমে যায়। জল জমে উত্তর ও দক্ষিণ কলকাতার বিস্তীর্ণ এলাকাতেও। উল্টোডাঙা, পাতিপুকুর এবং কাঁকুড়গাছির আন্ডারপাস, মহাত্মা গাঁধী রোড, সায়েন্স সিটি-সহ নিউ আলিপুর, এজেসি বোস রোডের বিভিন্ন জায়গা দুপুর পর্যন্ত জলমগ্ন ছিল। অন্য দিকে হাঁটু সমান জল জমেছে, দমদমের স্টেশনের কাছে রাজাবাগান লেন, ফোয়ারামোড়, বেদিয়াপাড়া ও রায়পাড়াতেও। বৃষ্টি ও জল জমার কারণে রাস্তায় বেরোনো গাড়ির গতিও কম ছিল। ফলে বিভিন্ন জায়গায় অল্পবিস্তর যানজট তৈরি হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy