নতুন প্রকল্পের ঘোষণা করতে শুক্রবার থেকে দু’দিনের বারাণসী সফরে এলেন নরেন্দ্র মোদী। প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরে এই প্রথম নিজের কেন্দ্রে এলেন সাংসদ মোদী। গোবলয়ের সবচেয়ে বড় রাজ্য উত্তরপ্রদেশের এই বারাণসীকে দুর্গ করেই দিল্লি দখলের লড়াইয়ে নেমেছিলেন তিনি। এ দিন নিজের কেন্দ্রে ফিরে এসে উচ্ছ্বসিত মোদী জানালেন “আমি আজ আপনজনদের মাঝে এসেছি।”
“প্রধানমন্ত্রী নয়, আজ আমি আপনাদের প্রতিনিধি হয়ে, সেবক হয়ে এসেছি”— এ ভাবেই শুক্রবার বারাণসীবাসীর হৃদয় জিতলেন তিনি। মঞ্চে ওঠার মুহূর্ত থেকে ‘মোদী, মোদী’ ধ্বনি বুঝিয়ে দিল মন্দির শহরে এখনও মোদী-জোয়ারে বিন্দুমাত্র ভাটা পড়েনি। একাধিক সরকারি প্রকল্পের ঘোষণার পাশাপাশি বেনারসের বহু চর্চিত তাঁতশিল্প উন্নয়নের প্রসঙ্গও উঠে এল তাঁর বক্তৃতায়। বাদ গেল না শহরের প্রাচীন ঐতিহ্যের বিষয়টিও। বেনারসের প্রাচীন বস্ত্রশিল্পের সঙ্গে আধুনিকতার মেলবন্ধনের উপর গুরুত্ব আরোপ করে তিনি জানালেন দেশে এমন কোনও মহিলা নেই যিনি বেনারসী শাড়ির নাম শোনেননি। তাই এই শাড়ির উত্পাদন বাড়ানোর দিকে জোর দিতে তাঁতশিল্পীদের বার্তা দিলেন তিনি। সেই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর ‘সাংসদ আদর্শ গ্রাম যোজনা’-র আওতায় জয়াপুর গ্রাম দত্তক নেওয়ার কথা ঘোষণাও করলেন মোদী।
কেন্দ্রের ভিতর ঘুরে দেখছেন মোদী।
এ দিন সকাল ১০টা নাগাদ বারাণসী থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে বাবাতপুর বিমানবন্দরে নেমে সোজা চলে যান লালপুর গ্রামে। বিমানবন্দরে তাঁকে স্বাগত জানাতে উপস্থিত ছিলেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদব। লালপুরের তাঁতশিল্পীদের জন্য নতুন বাণিজ্যকেন্দ্রের উদ্বোধন করে মোদী জানান ১৫০ কোটি টাকার এই প্রকল্প শুধুমাত্র এই অঞ্চলের শিল্পের সার্বিক উন্নয়নই নয়, বিশ্বের শিল্প ক্ষেত্রেও বারাণসীকে অনেক এগিয়ে যাবে। মন্দির শহর কাশী থেকে কিছু দূরে এই নতুন শিল্পকেন্দ্র তৈরির কাজ শুরু হবে। পাশাপাশি, রাজ্যের ১৬টি সমবায় ব্যাঙ্কের উন্নয়নের কাজে ২৩৭৫ কোটি টাকার প্রকল্পের ঘোষণাও করেন মোদী।
সারাদিনের কর্মসূচিতে দুপুরে হেলিকপ্টারে জয়াপুর গ্রামে পৌঁছবেন প্রধানমন্ত্রী। জয়াপুর থেকে রবীন্দ্রপুরি হয়ে তিনি পৌঁছবেন ডিজেল লোকোমোটিভ ওয়ার্কশপে। সেখানে মধ্যাহ্নভোজ সেরে বিকেলের দিকে দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করবেন তিনি। এরপর বিজেপির স্থানীয় নেতাদের সঙ্গেও বৈঠক করবেন মোদী। এ ছাড়া বিজয়ানগরমে স্বামী বিবেকানন্দের মূর্তি উন্মোচনের পরিকল্পনাও রয়েছে তাঁর।
ছবি:পিটিআই।