বৈঠকের আগে নিজের দফতর ঘুরে দেখছেন মোদী। ছবি: পিটিআই।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার দ্বিতীয় বৈঠকের শুরুতেই মন্ত্রীদের নতুন পথনির্দেশিকা দিয়ে দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। পয়লা বৈঠকে কংগ্রেস জমানার আটকে থাকা বিভিন্ন প্রকল্পের ছাড়পত্রের উপর জোর দিলেও বৃহস্পতিবারের বৈঠকে ছিল অন্য চমক। শুরুতেই মন্ত্রীদের হাতে ধরিয়ে দিলেন দশ দফা লক্ষ্যের তালিকা। আমলাতন্ত্রের স্বচ্ছতা থেকে কর্মসংস্থান, ১০০ দিনের কাজ থেকে শিক্ষা, স্বাস্থ্যের উন্নয়ন কী নেই তাতে। এক কথায় ইউপিএ যুগের ‘নীতিপঙ্গুত্ব’-র পুনরাবৃত্তি যে তিনি চান না তা ফের একবার প্রমাণ করলেন নরেন্দ্রভাই দামোদরদাস মোদী। বৈঠকের শুরুতেই ১০০ দিনের কাজে গতি আনার কথা জানালেন তিনি। এর পর একে একে উঠে এল মূল্যবৃদ্ধি, কৃষি, উন্নয়ন ও দেশ জুড়ে নারী সুরক্ষার প্রসঙ্গ। রান্নার গ্যাসে ভর্তুকি কমানের বিষয়টিও বাদ পড়েনি এ দিনের বৈঠকে। তিনি বলেন, “মানুষ অনেক আশা রেখেছে। তাদের আস্থাই সম্বল। দফতরগুলির নিজেদের কাজে গুরুত্ব দেওয়া উচিত। ছোট ছোট সব কাজই গুরুত্বপূর্ণ।”
এ দিন সকালে বৈঠক শুরুর আগেই লালবাতিহীন গাড়িতে হাজির ছিলেন অরুণ জেটলি, মানেকা গাঁধী, স্মৃতি জুবিন ইরানি ও নীতিন গডকড়ীর মতো হেভিওয়েটরা। সংসদবিষয়ক মন্ত্রী বেঙ্কাইয়া নাইডু বলেন, “মন্ত্রীদের কাজে গতি আনতে দশটি লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। নির্দিষ্ট ‘টাইমটেবিল’ তৈরি করে মন্ত্রীদের প্রথমেই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলি সেরে নিতে হবে।” বৈঠকের শুরুতেই যে বিষয়টির উপর জোর দেন মোদী তা হল আমলাতন্ত্রে স্বচ্ছতা ফেরানো। সেই সঙ্গে মনে করিয়ে দেন মনমোহন সরকারের নীতিপঙ্গুত্ব ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের অক্ষমতার কারণেই একের পর এক দুর্নীতির অভিযোগ উঠলেও মুখ খুলতে ভয় পাচ্ছিলেন মন্ত্রী ও আমলারা। ক্যাবিনেট সচিবালয়ের হিসাব অনুযায়ী, এখনও ৪৩০টি প্রকল্প আটকে আছে যাদের বিনিয়োগ মূল্য প্রায় ২০ লক্ষ কোটি টাকা। ভয়ডরহীন আমলাদের নিয়ে স্বচ্ছ ও সুশাসন প্রতিষ্ঠাই তাঁর কাজের মূল মন্ত্র। সেই সঙ্গে বার্তা দেন প্রশাসনকে আরও জনমুখী করতে হবে ও নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই শেষ করতে হবে বাকি থাকা প্রকল্পের কাজ। সরকারি কাজে গতি আনতে ই-গভর্ন্যান্সের উপরও জোর দেন তিনি। অর্থনৈতিক সঙ্কট দূর, মূল্যবৃদ্ধি রোধ ও পরিকাঠামো সংস্কারের পাশাপাশি স্বাগত জানানো হয় উদ্ভাবনী প্রতিভাকেও। যুব সমাজকে উদ্বুদ্ধ করতে থাকবে কর্মসংস্থান বৃদ্ধির সুযোগ, একই সঙ্গে শিক্ষা-স্বাস্থ্য ও পানীয় জলকেও অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। জোর দেওয়া হবে রাস্তা সংস্কারেও।
মোদীর দশ-লক্ষ্য
১) গণতন্ত্রে আস্থা ফেরানো
২) উদ্ভাবনী প্রতিভাকে স্বাগত
৩) আমলাতন্ত্রে আস্থা ও আমলাদের কাজে পূর্ণ স্বাধীনতা
৪) সরকারি কাজে স্বচ্ছতা
৫) সরকারি কাজ ও সরকারি টেন্ডারে ই-গভর্ন্যান্সের উপর জোর
৬) অর্থনৈতিক সঙ্কট দূর করা
৭) শিক্ষা-স্বাস্থ্য ও পানীয় জলে অগ্রাধিকার, প্রয়োজনীয় রাস্তা সংস্কার
৮) নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শেষ করতে হবে প্রকল্পের কাজ
৯) প্রশাসন হবে জনমুখী
১০)পরিকাঠামো সংস্কার ও বিনিয়োগে জোর
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy