পথপ্রদর্শক: নন্দীগ্রামে মঙ্গলবার শুভেন্দু অধিকারী এবং অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র —নিজস্ব চিত্র।
তমলুক লোকসভায় তিনিই যে প্রার্থী হচ্ছেন, তা একপ্রকার নিশ্চিতই ছিল। তাই নাম ঘোষণার ঢের আগেই হাই কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় জেলায় ঘুরে গিয়েছিলেন। এ বার তিনি এলেন নাম ঘোষণার পরে, পদ্ম-প্রার্থী হিসেবে। এবং আগের বারের মতোই মঙ্গলবারও তাঁর গন্তব্য ছিল নন্দীগ্রাম। আর সঙ্গী সেই নন্দীগ্রামের বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী।
তবে এ দিনও সে ভাবে ভোট প্রচার করেননি অভিজিৎ। নন্দীগ্রামের বয়ালে বিজেপি নেতা পবিত্র করের পরিবারিক ধর্মীয় অনুষ্ঠানে যোগ দেন তিনি। তমলুক ও মেচেদাতেও মন্দিরে পুজো দেন। তবে তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে নন্দীগ্রামে দাঁড়িয়ে সেখানকার ইতিহাস মনে করিয়ে দিয়েছেন অভিজিৎ, মনে করিয়েছেন তাম্রলিপ্তের ঐতিহ্যের কথাও। শুভেন্দুর পাশে দাঁড়িয়েই অভিজিৎ বলেছেন, ‘‘নন্দীগ্রাম তো একটা ইতিহাস তৈরি করে দিয়েছে । একটু অপেক্ষা করুন, দেখুন না নন্দীগ্রাম কী করে।’’ রাজনৈতিক মহলের মতে, নন্দীগ্রামে জমি আন্দোলন তো বিখ্যাতই। তা ছাড়া, ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে এই নন্দীগ্রামেই খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হারিয়েছেন শুভেন্দু। অভিজিতের ইঙ্গিত নিঃসন্দেহে
সে দিকেই।
নন্দীগ্রামের পাশাপাশি তমলুকের লড়াইয়ের ইতিহাসও মনে করিয়েছেন প্রাক্তন বিচারপতি। অভিজিৎ বলেন, ‘‘তমলুকের একটা দীর্ঘ ইতিহাস আছে। যে কোনও লড়াইয়ে, ভারতবর্ষের প্রথম স্বাধীনতাকামী জায়গা হিসেবে তমলুক উঠে এসেছিল। তাম্রলিপ্ত জাতীয় সরকার গঠন করেছিল। আমি বিশ্বাস করি, তমলুক কখনওই দুর্নীতির পাশে দাঁড়াবে না। চাকরি চোরেদের পাশে দাঁড়াবে না। মহিলাদের উপরে যারা অত্যাচার করেছে, তাঁদের পাশে দাঁড়াবে না।’’
এ দিন শুভেন্দুর মুখেও ছিল নন্দীগ্রাম। তিনি মনে করিয়েছেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গে একটা সময় যখন আগের শাসকরা (সিপিএম) বলতেন, আমরা ২৩৫ । ওরা ৩০। এই দম্ভটা ভেঙেছিল এই নন্দীগ্রাম। ২০০৯ সালের ৫ জানুয়ারি, ফিরোজা বিবি, তিনি একজন গৃহবধূ ছিলেন, তাঁকে তৃণমূল প্রার্থী করেছিল আমাদের সকলের সুপারিশে। জনগণ মেনে নিয়েছিল, দল-মত-বর্ণ নির্বিশেষে।’’ অভিজিৎকে কেন প্রার্থী করা হল সেই ব্যাখ্যা দিয়ে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা বলেন, ‘‘গত তিনবছরে পশ্চিমবঙ্গে দু’টি জলন্ত ইস্যু, একটা হচ্ছে চাকরি দুর্নীতি। বেকারদের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা, রাজ্য মন্ত্রিসভা, মানে মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে লুট হয়েছে। পুরো শিক্ষা দফতর জেলে। এই যে ২ কোটি বেকারের যন্ত্রণা,এত বড় নিয়োগ কেলেঙ্কারি, তার যিনি পর্দা ফাঁস করেছেন, অকুতোভয়ভাবে লড়াই করেছেন, তিনি হচ্ছেন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।’’
শুভেন্দুর মতে, ‘‘অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে পাওয়া আমাদের কাছে একটা বড় প্রাপ্তি। তিনি এখানে হৃদয়ে আছেন। তিনি চেষ্টা করবেন আগামী দেড় মাসে সব জায়গায় পৌঁছনোর। না পারলে আমরা তো আছি।’’ অভিজিৎও বলেন, ‘‘প্রতিটি গ্রামে আমি পৌঁছানোর চেষ্টা করব। যত দূর সম্ভব পৌঁছনো যায়। সেই ব্যবস্থা পার্টির তরফ থেকে করা হচ্ছে।’’ নন্দীগ্রামের তৃণমূল নেতা শেখ সুফিয়ান পাল্টা বলছেন, ‘‘নন্দীগ্রামের ধর্ষণকারী খুনিরা এখন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সৈনিক হয়েছেন। আর নন্দীগ্রামে যিনি নিয়োগ দুর্নীতি করেছেন তিনি হলেন শুভেন্দু অধিকারী।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy