Advertisement
Back to
Amit Shah

‘জেলে যেতেই হবে’! নাম না করে মহুয়াদের নিশানা শাহের, সাবধান করলেন মমতাকেও, ‘তৈরি থাকুন’

বনগাঁর বিজেপি প্রার্থী শান্তনু ঠাকুরের সমর্থনে সভা করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সিএএ থেকে দুর্নীতি মামলার ইস্যুতে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করেন তিনি।

(বাঁ দিক থেকে) মহুয়া মৈত্র, অমিত শাহ এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

(বাঁ দিক থেকে) মহুয়া মৈত্র, অমিত শাহ এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ মে ২০২৪ ১৮:৩৫
Share: Save:

লোকসভা ভোটের প্রচারে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ যত বার বাংলায় এসেছেন, ঘুষের বিনিময়ে প্রশ্নকাণ্ড নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি। কৃষ্ণনগরের বহিষ্কৃত সাংসদ তথা এ বারের তৃণমূল প্রার্থী মহুয়া মৈত্রকে সরাসরি আক্রমণ করেননি। কিন্তু মঙ্গলবার, কৃষ্ণনগর কেন্দ্রে ভোট সমাপ্ত হতেই টাকা নিয়ে প্রশ্নকাণ্ডে মহুয়াকে আক্রমণ করলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ। তবে এ বারও মহুয়ার নাম করেননি তিনি। বনগাঁর বিজেপি প্রার্থী শান্তনু ঠাকুরের সমর্থনে নির্বাচনী সভা থেকে তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করে শাহ বলেন, ‘‘মমতাদিদি, এই তো শুরু। দুর্নীতিতে যুক্ত সবাইকেই জেলে যেতে হবে।’’

শাহ সভার শুরুতেই সিএএ নিয়ে মমতাকে আক্রমণ করেন। তাঁর অভিযোগ নাগরিকত্ব নিয়ে বাংলার মানুষকে ভুল বোঝাচ্ছেন তৃণমূলনেত্রী। বাংলায় সিএএ হবেই, মুখ্যমন্ত্রী মমতার উদ্দেশে এই চ্যালেঞ্জ ছোড়ার পরেই শাহ চলে যান নানা ‘দুর্নীতি’ মামলায় তৃণমূলের প্রাক্তন এবং বর্তমান একাধিক নেতার গ্রেফতারি প্রসঙ্গে। সেখানে নাম না করে মহুয়াকেও নিশানা করেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কুন্তল ঘোষ, তাপস মণ্ডল, গোপাল দলপতিদের নাম ভুল করে বলেন, ‘‘এই অনুব্রত মণ্ডল, কুণাল ঘোষ, তাপস পাল, কুলপতি— কেউ চাকরির বিনিময়ে টাকা নিয়েছেন, কেউ গরু পাচার মামলায়, কেউ কয়লা পাচার মামলায় জেলে গিয়েছেন।’’ তার পর জনতার উদ্দেশে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রশ্ন, ‘‘আপনারা কেউ জীবনে একসঙ্গে ৫০ কোটি টাকা দেখেছেন? এদের এক মন্ত্রীর (প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে নিশানা) কাছ থেকে ৫০ কোটি টাকা বেরোয়। আমি মমতাদিদিকে বলছি, এই ৫০ কোটি টাকা কার? ওই মন্ত্রীকে জেলে ঢোকানো উচিত নয় কি? মমতাদিদি, এই তো শুরু।’’ শাহ আরও বলেন, ‘‘এই তো শুরু, চিট ফান্ড কেলেঙ্কারি, শিক্ষক দুর্নীতি, রেশন দুর্নীতি, পুরসভা নিয়োগে দুর্নীতি, গরু পাচার, কয়লা পাচারকাণ্ড, পয়সার বদলে প্রশ্ন করা ব্যক্তিদের কাউকে ছাড়া হবে না।’’

ঘুষের বিনিময়ে প্রশ্নকাণ্ডে সংসদ থেকে বহিষ্কার করা হয় মহুয়াকে। কৃষ্ণনগর আসন থেকে মমতা আবার মহুয়াকে প্রার্থী করার পরে তাঁর একাধিক ঠিকানায় তল্লাশি চালায় সিবিআই। আলিপুরের রত্নাবলী অ্যাপার্টমেন্ট, কৃষ্ণনগরে তৃণমূল প্রার্থীর অফিস এবং করিমপুরের আনন্দপল্লিতে মহুয়ার ভাড়াবাড়িতে তল্লাশি চালান কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। সিবিআইয়ের পদক্ষেপে হেনস্থা এবং প্রচারে বাধার অভিযোগ তুলে এবং নির্বাচনী বিধি চালু হওয়ার পর কেন্দ্রীয় এজেন্সির তদন্ত নিয়ে গাইডলাইন বেঁধে দেওয়ার দাবি করেছিলেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার ও মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিককে চিঠি পাঠিয়েছিলেন কৃষ্ণনগরের তৃণমূল প্রার্থী মহুয়া। তার পরেই বিদেশি মুদ্রা লেনদেন সংক্রান্ত মামলায় মহুয়াকে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য তলব করে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। যা নিয়ে তৃণমূল প্রার্থী নির্বাচনী সভা থেকে বলেন, ভোটের আগে তাঁকে গ্রেফতার করা হলে সেটা হবে তাঁর ‘ব্যাজ অফ অনার’।

সোমবার কৃষ্ণনগর কেন্দ্রে ভোটের দিন মহুয়া বলেছিলেন, ‘‘গত বার আমার পাঁচটাতে লিড ছিল, দুটোতে ডাউন ছিল। গত বার ৬৫ হাজার ভোটে জিতেছিলাম। আমি নিশ্চিত, এ বার অনেকটা পার করব।’’

অন্য দিকে, শাহের মন্তব্যের প্রেক্ষিতে তৃণমূল মুখপাত্র অরূপ চক্রবর্তীর কটাক্ষ, ‘‘কাগজ মুড়িয়ে যিনি টাকা নিয়েছিলেন, সেই শুভেন্দু অধিকারী অমিত শাহের দলের নেতা। অজিত পওয়ার, নারায়ণ রানেদের মতো ওয়াশিং মেশিনে ঢোকা নেতাদের আগে অমিত শাহ জেলে ভরুন, তার পর বড় বড় কথা বলবেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE