Advertisement
Back to
Presents
Associate Partners
Lok Sabha Election 2024

তপস্বী সাজে ভোটের তাপস, নির্বাচনী প্রচারে একই মঞ্চে কংগ্রেসের সন্তোষের সঙ্গে কলকাতা উত্তরের পদ্ম-প্রার্থী

দীর্ঘ সময় সন্তোষ-তাপস পরস্পরের সতীর্থ ছিলেন। ২০০০ সালে তাপস কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগদান করলে, সন্তোষ রয়ে যান কংগ্রেসেই। সেই থেকেই তাদের রাজনৈতিক পথচলা পৃথক হয়ে গিয়েছে।

BJP candidate Tapas Roy and Congress councilor Santosh Pathak participated in the same event to campaign for the Lok Sabha polls

৪৫ নম্বর ওয়ার্ডের নাম-সংকীর্তণ অনুষ্ঠানে উত্তর কলকাতার বিজেপি প্রার্থী তাপস রায়, সঙ্গে ওয়ার্ডের কংগ্রেস কাউন্সিলর সন্তোষ পাঠক। ছবি: সংগৃহীত।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ এপ্রিল ২০২৪ ১৭:৫০
Share: Save:

লোকসভা ভোটের মঞ্চে তাঁরা প্রতিপক্ষ! কিন্তু ভোটের আবহেও বিজেপি ও কংগ্রেস নেতাদের মধ্যে দেখা গেল সৌহার্দ্যের চিত্র। ঘটনাস্থল উত্তর কলকাতার ৪৫ নম্বর ওয়ার্ডের ক্যানিং স্ট্রিট। পয়লা বৈশাখের আগের দিন ২৪ ঘণ্টার নাম সংকীর্তনের আয়োজন করা হয়েছিল এক ধর্মীয় সংগঠনের তরফে। সেখানে আমন্ত্রিত ছিলেন চৌরঙ্গী বিধানসভা এলাকার সব রাজনৈতিক কুশীলবেরা। সেখানেই এসে মুখোমুখি হলেন উত্তর কলকাতার বিজেপি প্রার্থী তাপস রায় এবং কংগ্রেস কাউন্সিলর সন্তোষ পাঠক।

পয়লা বৈশাখের আগের দিন চড়ক উৎসব পালিত হয় বাংলায়। সেই চড়কের দিনেই চৈত্র সংক্রান্তিতে হয় গাজন উৎসব। সেই উৎসবে গাজন সন্ন্যাসী সাজার চলও রয়েছে। উত্তর কলকাতাতেও সেই উৎসবের চল ছিল। আর গাজন উৎসবের দিনেই গেরুয়া পোশাকে ও মাথায় পাগড়ি— কার্যত সন্ন্যাসীর সাজে উত্তর কলকাতায় ভোটের প্রচার করছিলেন বিজেপি প্রার্থী। প্রচারের মধ্যে বিকেলের দিকে ক্যানিং স্ট্রিটের এসে পৌঁছন তিনি। ভক্তিভরে পুজো অর্চনা করার পাশাপাশি, ধর্মীয় অনুষ্ঠানে উপস্থিত মানুষজনের সঙ্গে জনস‌ংযোগও সারেন তিনি।

২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের 'দিল্লিবাড়ির লড়াই' -এর পাতায়।

চোখ রাখুন

সেখানেই তাঁর সঙ্গে দেখা হয় ৪৫ নম্বর ওয়ার্ডের কংগ্রেস কাউন্সিলর সন্তোষ। বর্তমানে উত্তর কলকাতায় এই একজনই কাউন্সিলর রয়েছেন হাত প্রতীকের। ওই দিন বিকেলের দিকে নাম সংকীর্তন অনুষ্ঠানে যান তিনি। কিছু সময় পর সেখানে আসেন বিজেপি প্রার্থী। তাপস এসেই দেখেন সন্তোষকে। বলেন, ‘‘কী রে সন্তোষ? কেমন আছিস?’’ জবাবে সন্তোষ বলেন, ‘‘ভাল আছি দাদা। আপনি কেমন আছেন?’’ পাল্টা তাপস জানান ভালই আছেন। এই সময় উদ্যোক্তারা দুই নেতাকেই একাসনে বসতে দেন। সেখানে বসেই বেশ কিছু ক্ষণ কথাও বলতে দেখা যায় তাপস-সন্তোষকে। পরে সন্তোষ নাম সংকীর্তন অনুষ্ঠান ছেড়ে বেরিয়ে গেলে, তাপস সেখানে পুজো অর্চনার জন্য সেখানে থেকে যান।

ঘটনাচক্রে, সেখান থেকে বেরিয়েই সন্তোষ যান, নিজের ওয়ার্ডে কংগ্রেস কর্মীদের সঙ্গে দেখা করতে। উত্তর কলকাতার কংগ্রেস প্রার্থী প্রদীপ ভট্টাচার্যের জন্য ভোট প্রচার নিয়ে আলোচনা করেন সেখানে। আর তাপস নাম সংকীর্তন অনুষ্ঠান সেরে বেরিয়ে যান নিজের পরবর্তী প্রচারে। দীর্ঘ সময় সন্তোষ-তাপস পরস্পরের সতীর্থ ছিলেন। ২০০০ সালে তাপস কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগদান করলে, সন্তোষ রয়ে যান কংগ্রেসেই। সেই থেকেই তাদের রাজনৈতিক পথচলা পৃথক হয়ে গিয়েছে। আর বর্তমানে কংগ্রেসের ‘জাতশত্রু’ বিজেপির প্রতীকে উত্তর কলকাতায় প্রার্থী হয়েছেন তাপস। তাতেও এই দুই নেতার মধ্যে সৌহার্দ্যের সম্পর্ক নষ্ট হয়নি।

তাপসের সঙ্গে ধর্মীয় অনুষ্ঠানে শামিল হওয়া প্রসঙ্গে সন্তোষ বলেন, ‘‘আমি আর তাপসদা দীর্ঘ দিন এক সঙ্গে রাজনীতি করেছি। পরে উনি আলাদা দলে গেলেও আমাদের দাদভাইয়ের সম্পর্ক নষ্ট হয়নি। ২০০১ সালে কংগ্রেস-তৃণমূল জোটে তাপসদা বড়বাজার কেন্দ্রে প্রার্থী হলে, আমি সেই ভোটে বড় ভুমিকা নিয়েছিলাম।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘বিরোধী রাজনীতি করে মানে এই নয় যে সামাজিক সম্পর্ক নষ্ট হয়ে গিয়েছে। ভোটে তাপসদা নিজের দলের কথা বলে ভোট চাইবেন। আর আমাদের প্রার্থী প্রদীপ ভট্টাচার্য তাঁর দলের কথা বলে ভোট চাইবেন। এটাই স্বাভাবিক এবং বাস্তব পরিস্থিতি। এতে ব্যক্তিগত সম্পর্কে কোনও প্রভাব পড়বে না।’’ ঘটনাচক্রে, দিন পনেরো আগে আমহার্স্ট স্ট্রিট এলাকায় কংগ্রেস প্রার্থীর পার্টি অফিসে ঢুকে প্রার্থী প্রদীপের সঙ্গে বেশ কিছু ক্ষণ আড্ডাও দিয়েছিলেন বিজেপি প্রার্থী তাপস।

প্রসঙ্গত, উৎসব যে রাজনীতির উর্ধ্বে, তা বার বার প্রমাণিত হয়েছে। সদ্য সমাপ্ত ইদ উৎসবে আবার একই অনুষ্ঠানে শামিল হয়েছিলেন দমদমের বিদায়ী সাংসদ তথা তৃণমূল প্রার্থী সৌগত রায় ও সিপিএম প্রার্থী সুজন চক্রবর্তী। বরাহনগরে একই ফ্রেমে ধরা দিয়েছিলেন তৃণমূল প্রার্থী সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় ও সিপিএম প্রার্থী তন্ময় ভট্টাচার্য।

২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের 'দিল্লিবাড়ির লড়াই' -এর পাতায়।

চোখ রাখুন
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE